এক যুগের বেশি আমাদের ভালো গান নেই: হাসান

হাসান। ছবি: গান বাংলার সৌজন্য
হাসান। ছবি: গান বাংলার সৌজন্য
>

নতুন করে যাত্রা শুরু করেছে একসময়ের জনপ্রিয় ব্যান্ড আর্ক, দলনেতা হিসেবে আছেন হাসান। গান বাংলা চ্যানেলের বিশেষ আয়োজন উইন্ড অব চেঞ্জ–এ নিজের পুরোনো দুটি গান নতুন করে গেয়েছেন তিনি। ভক্তদের জন্য নতুন কিছু গান নিয়ে আসার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা। কিন্তু এত দিন কেন অনুপস্থিত ছিলেন তাঁরা? এসব নিয়ে কথা বললেন হাসান।

ঈদ কেমন কাটল?
সাদামাটা একটা ঈদ কেটেছে, সব সময় যেমন কাটে। মিডিয়ায় উপস্থিতিও তেমন ছিল না। ঢাকায় নিজের বাসাতেই ছিলাম।

উইন্ড অব চেঞ্জে নতুন করে কয়টি গান করলেন?
‘আমার আল্লা–নবীজির নাম’ ও ‘এত কষ্ট কেন ভালোবাসায়’।

সংগীতায়োজন, ব্যবস্থাপনা—সব মিলিয়ে কেমন ছিল?
চমৎকার। তাঁদের বাজেট ভালো ছিল, এন্টারটেইনমেন্টের জন্য যথেষ্ট বরাদ্দ ছিল, ইভেন্টটা সুন্দর, পেশাদারত্ব ছিল। অনেকে বলে, বাংলাদেশে বাজেটের জন্য ভালো কিছু হয় না। সেটা খানিকটা সত্য। তবে আন্তরিকতা থাকলে বাজেটও জোগাড় হয়ে যায়।

প্রায় এক দশক গানের জগৎ থেকে আপনি বিচ্ছিন্ন। কেন?
মনের মতো গান করা হয়ে ওঠেনি বলে। নিজেকে মিউজিক্যালি ফিট মনে হয়নি। কেবলই ভাবছিলাম, কী করব, কেমন হবে, আমার আসলে হচ্ছে কি না...এসব ভাবনা থেকেই একটু অনুপস্থিত ছিলাম। তবে গান করে গেছি। প্রচার করিনি, গণমাধ্যমে আসিনি।

সংগীত ভুবনে বড়সড় পরিবর্তন এসেছে। এটাও কি অন্যতম কারণ?
হ্যাঁ। সারা পৃথিবীতে সংগীতে একটা বদল এসেছে। গায়কি, কম্পোজিশন, গানের স্টাইল, প্রকাশ—সবকিছু পরিবর্তিত হয়েছে।

একসময় বাচ্চু, জেমস ও হাসান ত্রয়ীর গানের জন্য মানুষ অপেক্ষা করত। এত দিন তাঁরা ছিলেন, আপনি ছিলেন না। হঠাৎ পিছু হটলেন কেন?
ঠিক পিছু হটিনি। অনেকে ভেবেছিলেন আমি বুঝি সংগীত থেকে অবসরে চলে গেছি, দেশান্তরী হয়েছি বা পেশা বদল করেছি। আমি আসলে গানের ভেতরেই ছিলাম। টেলিভিশনে ছিলাম না। অ্যালবাম বা গান প্রকাশ করিনি। প্রকাশের মতো নতুন কিছু আমার কাছে ছিল না। সে জন্যই চুপচাপ নিজের কাজ করে গেছি।

ফিরে আসার অনুপ্রেরণা পেলেন কীভাবে?
পৃথিবীতে গানের সবকিছু আগের চেয়ে অনেক উন্নত হয়েছে। সাউন্ড থেকে শুরু করে প্রকাশমাধ্যম—সবকিছুতে বদল এসেছে। এ ব্যাপারটাই আমাকে আলোড়িত করেছে।

আপনাদের ব্যান্ড আর্কের অবস্থা কী?
আর্ক যেভাবে চলছিল, সেভাবেই চলছে। নতুন একটি লাইনআপ এসেছে। নতুন লাইনআপ নিয়ে বেশ ভালো বোধ করছি। এখন মূল ভোকাল হিসেবে আছি আমি। কি–বোর্ড ও ভোকালে টিংকু, লিড গিটারে সুমন, বেজ গিটারে নমন, রিদম গিটারে নিপু এবং ড্রামসে জিমি।

উইন্ড অব চেঞ্জে আপনারা বেশ কয়েকজন বিদেশি যন্ত্রশিল্পীর সঙ্গে কাজ করলেন। এ অভিজ্ঞতায় কী মনে হয়েছে, আমরা বিশ্বসংগীতের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পারছি নাকি একটু পিছিয়ে আছি?
একটু যে পিছিয়ে আছি, সেটা বলতেই হবে। আমাদের আসলে গান দরকার। এক যুগের বেশি আমাদের ভালো গান নেই। এ জন্যই আমাদের সংগীতের অবস্থা তেমন পরিবর্তিত হয়নি।

আপনারা দিতে পারলেন না কেন?
আমি নতুন কিছু করার স্বপ্ন দেখেছিলাম। বিভিন্ন কারণে সামর্থ্যে কুলায়নি। তবে আমরা চেষ্টা চালিয়ে গেছি। ভেবেছি, নতুন বলতে যা বোঝায়, সেটা দিতে যদি ১০ বছর লাগে লাগুক।

আপনাদের একটা পেশাদারি প্রতিযোগিতা ছিল। আপনি কি এখন আবার সেখানে ঢুকতে পারবেন?
কাজ যদি ভালো হয়, নতুনত্ব থাকে, তাহলে সম্ভব। সেটা যে করতে পারবে, সে–ই সামনে চলে আসবে। এটা প্রমাণিত সত্য।

নতুনদের গান শোনেন? কেমন লাগে?
টিভি বা ইউটিউবে কমবেশি শোনা হয়। এখন গানের যে ধারা, তারা সেটাই অনুসরণ করার চেষ্টা করছে। তবে নতুনত্ব কম।