কঙ্গনা না রাজকুমার, খুনি কে?

কঙ্গনা রনৌত সিনেমা করবেন, আর তা নিয়ে কয়েক দফা বিতর্ক হবে না, তা হবে না। আর সমস্ত নেতিবাচক খবরকে ব্যবহার করে কীভাবে প্রচারণার ছক্কা হাঁকাতে হয়, তা ভালোই জানেন এই ‘কুইন’। আর এই বুদ্ধি যে দারুণ কার্যকর, তা তো একাধিকবার পরীক্ষিত। ছবি মুক্তির পর বলিউডের কোনো তারকা তাঁর ছবি নিয়ে কথা বলুক বা না বলুক, বক্স অফিস চিৎকার করে জানিয়ে দেয়, কঙ্গনা সফল।

সূত্র মেনে একই পথে হাঁটছে ‘জাজমেন্টাল হ্যায় কেয়া’। নিয়ম অনুসারে শুরু থেকে এই ছবি বিভিন্ন কারণে আলোচনায় ছিল। সুযোগ বুঝে একবার তো সাবেক প্রেমিক হৃতিক রোশানের সঙ্গে বাধিয়েই দিলেন। একই দিনে ছবি মুক্তির তারিখ ঘোষণার পর শুরু হলে একে ওপরের দিকে কাদা–ছোড়াছুড়ি। ইনস্টাগ্রামে কঙ্গনা বিতর্কের আগুনে ঘি ঢাললেন। বললেন, হৃতিকের ‘সুপার থার্টি’র গল্প নাকি খুবই প্যানপেনে। আর পুরো বলিউড আটঘাট বেঁধে লেখা শুরু করে দিল, দেখা যাক, প্রেমিক-প্রেমিকা থেকে ইন্ডাস্ট্রির সবচেয়ে বড় দুই ‘বিগ ফিশ’ শত্রুর ভেতর কে জেতে?

হৃতিক ভদ্রলোকের মতো ছবি মুক্তির তারিখ পিছিয়ে দিলেন। তাতে কিন্তু বিতর্ক থামেনি। নতুন বিতর্ক এসে পুরোনো বিতর্কের জায়গা দখল করেছে। এই ছবির নাম ছিলো ‘মেন্টাল হ্যায় কেয়া’। ইন্ডিয়ান সাইকিয়াট্রিক সোসাইটির (আইপিএস) লিখিত অভিযোগে ‘মেন্টাল’ বদলে ‘জাজমেন্টাল’ হয়। সেই সঙ্গে পাগল, পাগলা এই শব্দগুলোর সঙ্গে মেন্টাল শব্দটিও যুক্ত হয় সেন্ট্রাল বোর্ড অব ফিল্ম সার্টিফিকেশনের (সিবিএফসি) নিষিদ্ধের তালিকায়। এই শব্দগুলো কোনো ছবিতে ব্যবহার করা যাবে না। সেটা মানুষগুলোর জন্য হেয়কর—সেই বিবেচনায় এই নিষেধাজ্ঞা।

যা হোক, গতকাল ছবিটির ট্রেইলার প্রকাশিত হয়েছে। ২৪ ঘণ্টাও পার হয়নি। এর মধ্যে ২ মিনিট ৩৭ সেকেন্ডের এই ট্রেইলার দেখা হয়েছে প্রায় অর্ধকোটিবার। আর আপনি যতক্ষণে এই লেখা পড়ছেন, ততক্ষণে ভিউসংখ্যায় যোগ হয়েছে আরও কিছু অঙ্ক। এই ট্রেইলারের ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, ‘একটা খুনের রহস্য। সন্দেহভাজন দুজন। আর এই জুলাইয়ে কাউকে বিশ্বাস করবেন না’। উল্লেখ্য, ২৬ জুলাই মুক্তি পাবে ‘জাজমেন্টাল হ্যায় কেয়া’। যদিও প্রথমে ২১ জুন ছবিটি মুক্তি দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কঙ্গনার ছবি বলে কথা! যা হয় আর কী।

আর এই ট্রেইলারের ভেতরেই একজন দর্শককে যতভাবে বিনোদিত করা যায়, তার সমস্ত আয়োজন ছিল। রহস্য, রোমান্স, কমেডি—সবই ছিল এখানে। ছিল দারুণ কিছু সংলাপ। এর মধ্যে খুনের প্রধান দুই সন্দেহভাজন হলো কঙ্গনা রনৌত ও রাজকুমার রাও। ট্রেইলারে দেখা যায়, প্রাথমিকভাবে কঙ্গনা রাজকুমার রাওয়ের জন্য পাগল থাকে। কিন্তু খুনের ঘটনার পর তাঁরা নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে একজন আরেকজনকে দোষারোপ করতে থাকে।

কঙ্গনা গভীর মনোযোগ দিয়ে রাজকুমার রাওয়ের জীবন পর্যবেক্ষণ করেন আর বলেন, তাঁর একটা স্বাভাবিক জীবন আছে। স্বাভাবিক চাকরি আছে। সবকিছু এত বেশি স্বাভাবিক যে পুরো ব্যাপারটা খুবই অস্বাভাবিক। কঙ্গনা রাজকুমারের বিষয়ে বিভিন্নভাবে পুলিশকে প্ররোচিত করতে থাকে। রাজকুমারও বসে থাকার পাত্র নন। তিনিও প্রতিবার কঙ্গনার বিছানো জাল ছিঁড়ে বের হয়ে আসে। দর্শকদের জন্য আপাতত এটুকুই। সব ট্রেইলারে বলে দিলে হলে বসে দেখবেন কি?

এই ট্রেইলারের নিচে ভক্তরা অসংখ্য মন্তব্য করে জানিয়েছেন, এটি তাঁদের দারুণ লেগেছে। মন্তব্য এসেছে, ‘যখন একই ছবিতে ইন্ডাস্ট্রির সেরা দুই অভিনয়শিল্পীর দেখা মেলে, তখন এর থেকে ভালো আর কিছুই হতে পারে না’, ‘কঙ্গনা এখানে “কুইন” ছবিতে রাজকুমারের কৃতকর্মের বদলা নেবে’, ‘আপনি কঙ্গনা কে ভালোবাসতে পারেন, তাঁকে ঘৃণাও করতে পারেন, কিন্তু তাঁকে উপেক্ষা করার ক্ষমতা কারও নেই’, ‘বাহ, মনে হচ্ছে দারুণ কিছু হবে’ ইত্যাদি। একজন তো লিখেই দিয়েছেন, এই ছবি অন্তত ২০০ কোটি রুপির ব্যবসা করবে।

মন্তব্যের ঘরে সবাই দুহাত ভরে কঙ্গনার অভিনয়ের প্রশংসা করেছেন। লিখেছেন, বলিউডের কুইন ধামাকাদার কিছু নিয়ে আবারও ফিরে এসেছেন। যা হোক, বুদ্ধির খেলায় রাজকুমার কি কঙ্গনাকে হারাতে পারবেন? আসল খুনি কে? নাকি কোনো তৃতীয়জন? একতা কাপুর প্রযোজিত ও প্রকাশ কোভালামুড়ি পরিচালিত এই ছবির সব প্রশ্নের উত্তর জানা যাবে ২৬ জুলাই।