আব্বাস আসছে...

নিরব। ছবি: প্রথম আলো
নিরব। ছবি: প্রথম আলো

লুঙ্গি পরতে খুব একটা স্বচ্ছন্দ নন অভিনেতা নিরব। কিন্তু অভিনয়ের জন্য তাঁকে লুঙ্গি পরে শট দিতে হয়েছে বার কয়েক। পুরান ঢাকার ফরাশগঞ্জ এলাকার গল্প নিয়ে ছবির কাহিনি। লুঙ্গি থাকবে না, তা কি হয়? নিরবের নতুন সিনেমা নিয়ে আলোচনায় এই বিষয়ই উঠে এল প্রথম দিকে।

কাঁটায় কাঁটায় সাড়ে পাঁচটায় এসে উপস্থিত প্রথম আলো কার্যালয়ে। কথার আগে ঝটপট ছবি তোলার আয়োজন। আলোকচিত্রীকে নিরব বললেন, ‘চলুন কড়াইল বস্তিতে।’ তখন সন্ধ্যা ঘনিয়ে। কিন্তু বস্তিতে কেন? নিরব জানান, এই সিনেমার পরিবেশটাই নাকি এমন। পুরান ঢাকার ফরাশগঞ্জ এলাকা নিয়ে গল্প। এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের সঙ্গে সঙ্গে একটু–আধটু রাজনীতি নিয়ে গড়ে ওঠে ছবির কাহিনি। ছবির নাম আব্বাস। আব্বাসকে ঘিরেই গল্প। এই আব্বাস চরিত্রেই দেখা যাবে নিরবকে। পুরান ঢাকার গল্প বলেই লুঙ্গি পরতে হয়েছে তাঁকে। কেমন হয়েছে সিনেমাটি? নিরব বলেন, সাধারণ একটি গল্প। কিন্তু এর উপস্থাপনে আছে ভিন্ন আঙ্গিক। এ কারণেই ভালো লাগবে দর্শকদের।

পরিচালক সাইফ চন্দনের ছবি এটি। নিরব ও সাইফের সঙ্গে বোঝাপড়া বেশ। এই জুটির ছবি দর্শক অন্য রকমভাবে নেবে বলে বিশ্বাস নিরবের। খুব সুন্দর ঝলমলে নয়, পুরান ঢাকার গলিঘুপচি ঘিরে এই গল্পকে পর্দায় ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। ছবির প্রথম লুক প্রকাশের পরই বেশ প্রশংসিত হয়েছেন নিরব। তিনি বলেন, ‘অনেকেই প্রথমে আমাকে দেখে চিনতে পারেননি। দেখা গেছে, ছবির ফার্স্ট লুক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করেছে অনেকে, কিন্তু আমাকে চিনতে পারছে না। জিজ্ঞেস করেছে, নায়কটা কে?’

সিনেমার শুটিংয়ে ছিল নানা অভিজ্ঞতা। প্রম্পট (সংলাপ ক্যামেরার পেছন থেকে একজন বলে ধরিয়ে দেওয়া) না করে অভিনয়ে অভ্যস্ত নন নিরব। বলেন, ‘সাইফ আমাকে বলল, এখানে প্রম্পট চলবে না। আমি তো অবাক। প্রম্পট ছাড়া আমি অভিনয়ে ঠিক সাবলীল না। সংলাপ মুখস্থ থাকলেও প্রম্পটা করতে হবে।’

শুটিংয়ের আরেকটি মজার ব্যাপার ছিল পুরান ঢাকার আঞ্চলিক ভাষায় সংলাপ বলার ঢং। এটা শিখতে গিয়ে বেশ কসরত করতে হয়েছে নিরবের। তবে ছবির অন্য অনেক সহশিল্পী পুরান ঢাকার আঞ্চলিক ভাষায় দক্ষ ছিলেন। তাঁদের সহযোগিতায় শিখে ভাষাটা শেষ নাগাদ আয়ত্তে আনেন এই অভিনেতা। কথায় কথায় জানা গেল, দৈর্ঘ্যে চার মিনিটের বেশি সময়ের একটি গানের শুটিং করা হয়েছে মাত্র একটি টেকে (একবারে কোনো শট না কেটে)। গানটির দৃশ্য ধারণ হয়েছে সোনারগাঁর পানাম নগরে। নিরবের ভাষ্য, এই গান হতে পারে ছবিটির অন্যতম আকর্ষণ।

আব্বাস ছবিতে নিরবের বিপরীতে দেখা যাবে অভিনেত্রী সোহানা সাবাকে। দুজনের রসায়ন বেশ ভালো হয়েছে বলে জানালেন নিরব। সময় গড়িয়ে যায়। ছবির কথা শেষে আড্ডায় উঠে আসে বাংলা সিনেমা ইন্ডাস্ট্রি নিয়েও। নিরব বললেন, এখন একটা ছবি দেখতে প্রেক্ষাগৃহে আসতে হলে চার–পাঁচ ঘণ্টা সময় ব্যয় হয়। দর্শকের সেই পরিশ্রমটা যেন বৃথা না যায়, সেটা ভেবে ছবি বানাতে হবে। আর প্রেক্ষাগৃহগুলোর মানও ভালো করতে হবে।

আগামীকাল ৫ জুলাই প্রেক্ষাগৃহে আসছে আব্বাস।