রবীন্দ্র উৎসবের সমাপনীতে গান, নাচ কবিতার সম্মিলন

রবীন্দ্র উৎসবের সমাপনী সন্ধ্যায় গানের সুরে তাল রেখে পরিবেশিত হয় নাচ । ছবি: প্রথম আলো
রবীন্দ্র উৎসবের সমাপনী সন্ধ্যায় গানের সুরে তাল রেখে পরিবেশিত হয় নাচ । ছবি: প্রথম আলো

১৯৬১ সালে রবীন্দ্রজন্মশতবার্ষিকী উদযাপনের সূত্র ধরে জন্ম হয় ছায়ানটের। জন্মের পর থেকে মূলত রবীন্দ্রনাথ আর নজরুলের দেশ-ভাবনা আর সৃষ্টিকে অবলম্বন করেই প্রসারিত হয়েছে সংগঠনের কার্যক্রম। বর্তমানে রবীন্দ্র জন্মবার্ষিকীতে ছায়ানট আয়োজন করে দুই দিনের রবীন্দ্র উৎসব। গত শুক্রবার ছায়ানটে শুরু হয়েছিল দুই দিনব্যাপী রবীন্দ্র উৎসব। সেই উৎসবের সমাপনী দিন ছিল গতকাল শনিবার। গান, নাচ আর কবিতার সম্মিলিত পরিবেশনায় নবীন শ্রাবণের সন্ধ্যাটি হয়ে ওঠে রবীন্দ্রময়।

সমবেত কণ্ঠে কবিগুরুর গান পরিবেশন করেন শিল্পীরা ছবি: প্রথম আলো
সমবেত কণ্ঠে কবিগুরুর গান পরিবেশন করেন শিল্পীরা ছবি: প্রথম আলো

প্রথম দিনের মতো দ্বিতীয় দিনেও গানপ্রেমীদের সরব উপস্থিতিতে পরিপূর্ণ ছিল মিলনায়তন। সম্মেলক কণ্ঠে ‘আকাশ জুড়ে শুনিনু ওই বাজে তোমারি নাম সকল তারার মাঝে’ শীর্ষক গানের মাধ্যমে শুরু অনুষ্ঠান। এরপর গানের সুরে তাল রেখে পরিবেশিত হয় নাচ। ‘আমার প্রাণের মানুষ আছে প্রাণে’ গানের সঙ্গে নৃত্য পরিবেশন করেন ছায়ানটের শিল্পীরা। পরপর পাঁচটি একক গান নিয়ে আসেন ছায়ানটের পাঁচ শিল্পী। শ্রাবণী মজুমদার গেয়ে শোনান ‘জগতে আনন্দযজ্ঞে আমার নিমন্ত্রণ’। সুদীপ সরকার পরিবেশন করেন ‘লক্ষ্মী যখন আসবে তখন কোথায় তারে দিবি রে ঠাঁই’ পূজা পর্বের গানটি। পরের গানটিও ছিল একই পর্ব থেকে নেওয়া। দীপ্তি তালুকদার গেয়ে শোনান ‘তোমার সুরের ধারা ঝরে যেথায় তারি পারে’। পরের গানটি ছিল প্রকৃতি পর্বের, আবদুল ওয়াদুদ শোনান ‘মনে হল যেন পেরিয়ে এলেম অন্তবিহীন পথ আসিতে তোমার দ্বারে’।

উৎসবে ছিল একক গানের পরিবেশনা ছবি: প্রথম আলো
উৎসবে ছিল একক গানের পরিবেশনা ছবি: প্রথম আলো

পূজা পর্ব থেকে নাঈমা ইসলাম শোনান ‘আজি বিজন ঘরে নিশীথরাতে আসবে যদি শূন্য হাতে’। এ পাঁচটি গানের পরিবেশনার পর জহিরুল হক খান রবীন্দ্র রচনা থেকে কিছু অংশ পাঠ করেন। তার পরই উত্তরায়ণের শিল্পীরা পরপর দুটি সমবেত গান পরিবেশন করেন। ‘অরূপ, তোমার বাণী’ এবং ‘এই তো তোমার প্রেম,ওগো হৃদয় হরণ’। তাদের সমবেত পরিবেশনার পরেই লিলি ইসলাম পরিবেশন করেন ‘কে দিল আবার আঘাত আমার দুয়ারে’। শ্রেয়া ঘোষ পূজা গেয়ে শোনান ‘পূর্ণ প্রাণে চাবার যাহা রিক্ত হাতে চাস নে তারে’। সুবাহ আকবর গেয়ে শোনান ‘তোমারি সেবক করো হে আজি হতে আমারে’। একে একে নুসরাত জাহান ‘কাছে থেকে দূর রচিল কেন গো আঁধারে’, সামিয়া আহসান ‘তোমারে জানি নে হে, তবু মন তোমাতে ধায়’, আঁখি হালদার ‘তুমি কোন কাননের ফুল’, চঞ্চল বড়াল ‘আমার প্রাণে গভীর গোপন’, সুতপা সাহা ‘এখনো তারে চোখে দেখি নি’, নাসরিন সুলতানা বাঁধন ‘বিরহ মধুর হল আজি’, মানসী সাধু ‘যেথায় তোমার লুট হতেছে’ গেয়ে শোনান। এ ছাড়া একক পরিবেশনার পর সম্মেলক কণ্ঠে শিল্পীরা গেয়ে শোনান ‘বজ্রে তোমার বাজে বাঁশি, সে কি সহজ গান’, ‘পাগলা হাওয়ার বাদল দিনে’ গান দুটি।

ছায়ানটের অনুষ্ঠান ঐতিহ্যানুযায়ী সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে শেষ হয় উৎসব।