'ক্রাচের কর্নেল' মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে

‘ক্রাচের কর্নেল’ নাটকটি আজ সন্ধ্যায় মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের মূল মিলনায়তনে মঞ্চস্থ হবে
‘ক্রাচের কর্নেল’ নাটকটি আজ সন্ধ্যায় মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের মূল মিলনায়তনে মঞ্চস্থ হবে

বটতলার আলোচিত নাটক ‘ক্রাচের কর্নেল’ মঞ্চায়িত হবে শেরেবাংলা নগরের মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের মূল মিলনায়তনে। আজ শুক্রবার সন্ধ্যা সাতটায় নাটকটির ৪৬তম প্রদর্শনী হবে। এটি বটতলার নবম প্রযোজনা। শাহাদুজ্জামানের উপন্যাস থেকে নাটকটির নাট্যরূপ দিয়েছেন সৌম্য সরকার ও সামিনা লুৎফা নিত্রা। নির্দেশনা দিয়েছেন মোহাম্মদ আলী হায়দার।

প্রথমবারের মতো ‘ক্রাচেল কর্নেল’ নাটকটি মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের মূল মিলনায়তনের মঞ্চে উপস্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বটতলার সদস্যরা। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি বা মহিলা সমিতির মঞ্চে প্রদর্শনী না করে নাটকের মঞ্চ হিসেবে অপ্রচলিত মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের মূল মিলনায়তনে করার কারণ কী? বটতলার অন্যতম সদস্য কাজী রোকসানা রুমা প্রথম আলোকে বলেন, ‘যানজটের এই শহরে সেগুনবাগিচা বা বেইলি রোডে স্বাচ্ছন্দ্যের সঙ্গে আসা অনেক দর্শকের জন্য কঠিন হয়ে যায়। আমরা মনে করি নাটক মঞ্চায়নের জন্য নতুন নতুন জায়গা বের করা উচিত। আমরা তা করে যাচ্ছি। ধানমন্ডি, মোহাম্মদপুর, মিরপুর, শ্যামলীর বাসিন্দাদের সুবিধার জন্য শেরেবাংলা নগরের মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে নাটকটি প্রদর্শনীর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আশা করছি, তাতে নতুন দর্শক তৈরি হবে।’

ঢাকা ও ঢাকার বাইরে ‘ক্রাচের কর্নেল’ নাটকের ৪৫টি প্রদর্শনী হয়ে গেছে। বাংলাদেশের অনেক অজানা রাজনৈতিক ইতিহাস নানা যুক্তিতর্কের মাধ্যমে দর্শকের সামনে তুলে ধরা হয়েছে ‘ক্রাচের কর্নেল’ নাটকে। ২০১৬ সালের ডিসেম্বর মাসে নাটকটি মঞ্চে আনে বটতলা। অল্প সময়ের মধ্যে নাটকটি আলোচনায় চলে আসে।

‘ক্রাচের কর্নেল’ নাটকের দৃশ্য
‘ক্রাচের কর্নেল’ নাটকের দৃশ্য

‘ক্রাচের কর্নেল’ স্বাধীনতাযুদ্ধে পা হারানো এক কর্নেলের জীবনের গল্প। কর্নেল আবু তাহের। এই কর্নেলের নাম ও সাতই নভেম্বর, ১৯৭৫ সালের সিপাহি বিপ্লবে তাঁর ভূমিকার এক অস্পষ্ট ও রহস্যময় গল্প সবার জানা। তবে সিপাহি বিপ্লবের প্রকৃত রূপটা কী? কেন সিপাহি বিপ্লব সংগঠিত হয়েছিল? না জানা অনেক বিষয়ের বিশ্লেষণাত্মক উপস্থাপনা এবং ইতিহাসের অলিগলিতে বিচরণ করার মাধ্যমে বটতলা উন্মোচন করতে চেয়েছে বাংলাদেশের ইতিহাসের এক অস্থির সময়কে।

‘ক্রাচের কর্নেল’ নাটকের নির্দেশকের ভাষায়, নাটকটি এক বা একাধিক স্বপ্নবাজ মানুষের গল্প। একটি সময় ও দুঃসময়ের গল্প। একটি স্থানের ও কালের গল্প হয়েও যা কেবল একটি স্থান ও কালের গল্প নয়। আর লেখক শাহাদুজ্জামান লিখেছেন, ‘ক্রাচের কর্নেল যখন লিখেছি, তখন এর মঞ্চ সম্ভাবনার কথা ভাবিনি। এই প্রামাণ্য উপন্যাসে যে ব্যাপক ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট ও অগণিত চরিত্র জটিল, সর্পিল রাজনৈতিক ঘটনাবলির বয়ান আছে, তাকে মঞ্চের ভাষায় তুলে আনা এক দুরূহ কাজ বলে মনে হয়েছে।’

‘ক্রাচের কর্নেল’ বটতলার নবম প্রযোজনা
‘ক্রাচের কর্নেল’ বটতলার নবম প্রযোজনা

নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন সামিনা লুৎফা নিত্রা, কাজী রোকসানা রুমা, ইমরান খান মুন্না, তৌফিক হাসান, ইভান রিয়াজ, ম সাইদ, এম আই রনি, পঙ্কজ মজুমদার, নাফিউল আহমেদ ও মাহবুব মাসুম।