থানায় গিয়ে শ্বেতার চিৎকার ও কান্নাকাটি

অভিনব কোহলি, শ্বেতা তিওয়ারি, পলক ও রেয়ানশ
অভিনব কোহলি, শ্বেতা তিওয়ারি, পলক ও রেয়ানশ

মুম্বাইয়ের পূর্ব কান্দিভালির সমতা নগর পুলিশ স্টেশনে গিয়ে চিৎকার আর কান্নাকাটি করেছেন ‘কসৌটি জিন্দেগি কে’ সিরিয়ালের ‘প্রেরণা’ শ্বেতা তিওয়ারি। সম্প্রতি দ্বিতীয় স্বামী অভিনব কোহলির বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে তিনি নির্যাতনের অভিযোগ করেছেন। তিনি অভিযোগ করে বলেছেন, রাতে মদ খেয়ে মাতাল অবস্থায় বাসায় ফিরে শ্বেতার প্রথম পক্ষের মেয়ে পলককে মারধর করেছেন এবং অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেছেন অভিনব কোহলি। আর এ ঘটনা অনেক দিন থেকেই ঘটছে। তিনি আরও অভিযোগ করেন, ২০১৭ সাল থেকে অভিনব নাকি পলককে বিভিন্ন অশ্লীল ছবি দেখাতে শুরু করেন। থানায় ওই সময় শ্বেতার সঙ্গে ছিলেন মেয়ে পলকও।

শ্বেতা তিওয়ারির অভিযোগ লিপিবদ্ধ করেছে সমতা নগর থানার পুলিশ। এর পর অভিনব কোহলিকে থানায় ডেকে আনা হয়। টানা চার ঘণ্টা তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। অভিনব তাঁর বিরুদ্ধে শ্বেতার করা প্রায় সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তবে তিনি বলেছেন, সেদিন রাতে তিনি মদ্যপান করে বাসায় ফেরেন। ওই অবস্থায় শ্বেতার সঙ্গে তাঁর কথা-কাটাকাটি হয়। পলকও তাঁর সঙ্গে উচ্চ স্বরে কথা বলে। তখন তিনি নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে পলককে থাপ্পড় দিয়েছেন।

পলক ও শ্বেতা তিওয়ারি
পলক ও শ্বেতা তিওয়ারি

অভিনব কোহলিকে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদের সময় থানায় মেয়ে পলককে নিয়ে উপস্থিত ছিলেন শ্বেতা তিওয়ারি। এরই মধ্যে অভিনব কোহলির বিরুদ্ধে স্ত্রী নির্যাতনসহ ভারতীয় দণ্ডবিধির সাতটি ধারায় মামলা করা হয়েছে।

বছরখানেক ধরেই শোনা যাচ্ছে, অভিনব কোহলি আর শ্বেতা একসঙ্গে থাকছেন না। আরও শোনা যাচ্ছে, তাঁদের বিয়েটা এরই মধ্যে ভেঙে গেছে। তখন শ্বেতা তিওয়ারি জানান, অনেক দিন থেকে তা শুনতে শুনতে তিনি বিরক্ত। নিজের সংসার নিয়ে সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘আমি যখন মা হব, তখন অভিনবর বাবা মারা যান। অভিনবর মা-বাবা বেঙ্গালুরুতে থাকেন। তাই অভিনবকে অনেকটা সময় তাঁর মায়ের সঙ্গে বেঙ্গালুরুতেই থাকতে হয়েছে। আমার শাশুড়ি একটা প্রকাশনা সংস্থার মালিক। তাই তিনি মুম্বাই চলে আসতে পারেননি। সবকিছু গুটিয়ে আসতে একটু সময়ের দরকার। অভিনবকে এক বছরেরও বেশি সময় সেখানেই থাকতে হচ্ছে। এমনকি রেয়ানশের জন্মের পরও অভিনব খুব কম সময়ের জন্য মুম্বাই এসেছে। যেহেতু এই সময়টাতে আমি একা সব জায়গায় গিয়েছি, বিভিন্ন পার্টিতেও সবাই আমাকে একা দেখেছেন; তাই অনেকেই ভাবছেন, আমরা আর একসঙ্গে থাকছি না।’

অভিনব কোহলি ও শ্বেতা তিওয়ারি
অভিনব কোহলি ও শ্বেতা তিওয়ারি

এবার পুলিশের কাছে শ্বেতার দেওয়া তথ্য থেকে জানা যায়, অভিনব কোহলির সঙ্গে দ্বিতীয় বিয়ের এক বছর পরই তাঁদের মধ্যে ঝামেলার সূত্রপাত। তবে ওই সময় সংবাদমাধ্যমগুলোতে তা লেখা হলেও শ্বেতা ও অভিনব বিষয়টিকে গুজব বলে উড়িয়ে দেন। শ্বেতা জানান, স্বামী অভিনব, ছেলে রেয়ানশ আর মেয়ে পলককে নিয়ে তিনি খুব ভালো আছেন। পলকের বয়স এখন ১৯।

এদিকে অভিনব কোহলির মা পুনম কোহলি ইন্ডিয়া টুডেকে বলেছেন, দুই বছর ধরে শ্বেতা আর অভিনবর সম্পর্ক ভালো যাচ্ছে না। শ্বেতার সঙ্গে অভিনব বিবাহবিচ্ছেদ ঘটাতে চাচ্ছেন। আর এ কারণেই তাঁর ছেলেকে শ্বেতা ফাঁসাতে চাচ্ছেন।

অভিনব কোহলি ও শ্বেতা তিওয়ারি
অভিনব কোহলি ও শ্বেতা তিওয়ারি

ভোজপুরি চলচ্চিত্রের তারকা রাজা চৌধুরীকে ১৯৯৮ সালে বিয়ে করেন শ্বেতা তিওয়ারি। ২০০৭ সাল থেকে তাঁরা আলাদা থাকতে শুরু করেন। রাজা চৌধুরীর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি শ্বেতাকে মারধর করতেন। তাঁর আচরণে অতিষ্ঠ হয়ে প্রতিবেশীরা মুম্বাই পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন। এরপর পুলিশ রাজা চৌধুরীকে মুম্বাই ছাড়ার নির্দেশ দেয়। তখন রাজা চৌধুরীর বিরুদ্ধে শারীরিক নির্যাতনের মামলাও করেছিলেন শ্বেতা। ২০১২ সালে তাঁদের বিবাহবিচ্ছেদ হয়। ওই সময় থেকে মেয়ে পলককে নিজের কাছেই রেখেছেন শ্বেতা।

২০১৩ সালে অভিনেতা অভিনব কোহলিকে বিয়ে করেন শ্বেতা তিওয়ারি। ‘বিগ বস ফোর’-এর সেটেই তাঁদের পরিচয়। বিয়ের আগে তাঁরা তিন বছর প্রেম করেছেন। ২০১৬ সালে আবার মা হন শ্বেতা। তাঁর ছেলের নাম রেয়ানশ।