৩০ দিন শুটিং করা আমার লক্ষ্য নয়: ভাবনা

ঈদ উপলক্ষে বেশ কিছু নাটক ও টেলিছবিতে অভিনয় করেছেন আশনা হাবিব ভাবনা। অভিনয়শিল্পী হিসেবে পরিচিত হলেও নৃত্যশিল্পী হিসেবেই কাজ শুরু করেছিলেন তিনি। ঈদের নাটক ও বিনোদন অঙ্গন নিয়ে নিজস্ব কিছু ভাবনা ভাগাভাগি করলেন তিনি।
আশনা হাবিব ভাবনা
আশনা হাবিব ভাবনা

ঈদ কেমন কাটালেন?
খুব ভালো।

টিভিতে নিজের কোন কাজটা দেখলেন?
ফেরা দেখলাম। হয়তো মিলিয়ন মিলিয়ন ভিউ হবে না টেলিছবিটার, কিন্তু তাতে কিছু যায়-আসে না। এটা হবে মনে রাখার মতো একটা কাজ। প্রথম আধঘণ্টা নির্বিঘ্নে দেখলাম। তারপর একটা দৃশ্য শেষ হতে না হতেই বিজ্ঞাপন শুরু হলো। বিরক্ত হয়ে গেলাম।

টেলিভিশনের কর্মকর্তা হলে বিজ্ঞাপনের যন্ত্রণা দূর করতে কী পদক্ষেপ নিতেন?
টেলিভিশনের কর্মকর্তারা বলে থাকেন, নাটকে নাকি বিজ্ঞাপন কম পাওয়া যায়। বেশি বিজ্ঞাপন আসে খেলা ও টক শোতে। এ কথায় আমার কেবলই মনে হয়, মানসম্পন্ন কাজ কি আপনারা দেখাচ্ছেন? আলী যাকের বা আসাদুজ্জামান নূরের মতো অভিনেতাদের সামনে গিয়ে আমি বলতে পারি না, আঙ্কেল, একটা সেলফি তুলব। কারণ, আমি তাঁদের অনেক শ্রদ্ধা করি। তাঁরা মানসম্পন্ন সব কাজ করেছেন এবং মানুষ হিসেবে অনেক ব্যক্তিত্বসম্পন্ন। কিন্তু আমরা খুব সহজলভ্য হয়ে গেছি। অবস্থা বদলাতে চাইলে টেলিভিশনের জন্য মানসম্মত কাজ করতে এবং প্রচার করতে হবে।

নিজের সম্প্রতিক কাজগুলো নিয়ে আপনি সন্তুষ্ট?
কখনোই না। আমি সবসময় প্রস্তুতি নিয়ে কাজ করার চেষ্টা করি। কিন্তু দেখা যায়, সে রকম চিত্রনাট্য আসে না, এক ঘণ্টার নাটকের শুটিং এক দিনেই শেষ! আমাকে হয়তো অনেকগুলো টাকা দেয়, কিন্তু বুঝি না, কেন দেয়। আমি আসলে এখনকার অনেক কিছুই বুঝি না।
এই সময়টাকে খুব বৈরী মনে হয় আপনার?
সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে আজ থেকে ৫০ বছর পর। এখন কিন্তু নাটক দেখানো অনেক কঠিন, প্রতিযোগিতাপূর্ণ।

স্বল্পদৈর্ঘ্য ‘টু মাছ’-এ চিকিৎসকের চরিত্রটা খুব উপভোগ করেছেন?
উল্টো। শিশু হাসপাতালে শুটিং করছিলাম। একটু পরপর ফোন আসছিল— আরেকটি রোগী এসেছে, ব্যবস্থা নিন। ঢাকার মতো শহরে মশার কামড়ে মানুষ মারা যাচ্ছে, এটা যে কত দুঃখজনক, তা বলার নয়! যে ওয়ার্ডটায় ছিলাম, সেখানে নবজাতকদের যন্ত্রণা দেখে রীতিমতো অস্থির হয়ে পড়ছিলাম। নিজেকে খুব অসহায় লাগছিল। আমরা কত অল্পে হতাশ হয়ে পড়ি, ভাবি, নাটক-সিনেমা করছি। অথচ জীবন যে কত কষ্টের, সেটা হাসপাতালে গেলে বোঝা যায়। সারা দিন ভীষণ মানসিক যন্ত্রণায় ছিলাম সেদিন।

তুলনামূলক কম কাজ করেন। কারণ কী?
কী লাভ? অনেকগুলো নাটক-সিনেমা করলাম, লাখ লাখ টাকা রোজগার করলাম, ৫০ বছর পর সেগুলো নিয়ে কোনো কথা হবে না। আমি আসলে অর্থপূর্ণ কিছু করব বলে কম কাজ করি। মায়াবতী, ফেরার মতো কাজ করতে চাই। হারিয়ে যেতে চাই না। নাম্বার ওয়ান নায়িকা হতে না পারি, ভালো কাজ করতে চাই। তবে ৩০ দিন শুটিং করা আমার লক্ষ্য নয়।

শেষ তিন প্রশ্ন
এ অঙ্গনে আপনার প্রথম বন্ধু কে?
রাইসুল ইসলাম আসাদ।

কোন অভিনেতার সঙ্গে কাজ করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন?
মামুনুর রশীদ।

বিদেশের কোন কোন অভিনেতার সঙ্গে কাজ করতে ইচ্ছা করে?
ডেভ প্যাটেল, ভিকি কৌশল ও রণবীর কাপুর।