রোডিশের 'রিয়েল হিরো' অরুণ শর্মা

রোডিশের বিজয়ী অরুণ শর্মা
রোডিশের বিজয়ী অরুণ শর্মা

রোডিশ!
ভারতীয় তরুণদের সবচেয়ে বড় ক্রেজের নাম। ২০০৩ সালে জনপ্রিয় এই শোর যাত্রা শুরু হয়। এবার শেষ হয়েছে এই শোর ১৬তম সিজন। রনভিজে সিং, আয়ুষ্মান খুরানা, প্রিন্স নারুলাদের পর রোডিশের বিজয়ী হওয়ার গৌরব অর্জন করেছেন ভারতের জনপ্রিয় র‍্যাপার রাফতারের গ্যাং মেম্বার অরুণ শর্মা। প্রিন্স নারুলার গ্যাং থেকে অঙ্কিতা আর বিধানকে পেছনে ফেলে জয়ী হন তিনি।

প্রতিটি বিজয়ীরই সিংহাসনে বসার সেই কঠিন যাত্রার একটা গল্প আছে। কিন্তু অরুণ শর্মার গল্পটা যেন একটু বেশি ভিন্ন। তিনি অন্যদের মতো সরাসরি রোডিশের যাত্রা শুরু করতে পারেননি। নিজের শারীরিক আর মানসিক দক্ষতা দিয়ে বিচারকদের মন ভরাতে পারলেও পাননি ডিরেক্ট এন্ট্রি। পরে ওয়াইল্ড কার্ড এন্ট্রির মাধ্যমে ‘রোডিশ’ রিয়েল হিরো প্রতিযোগী হিসেবে পেয়েছে অরুণ শর্মাকে। আর সেই সুযোগের শতভাগ সদ্ব্যবহার করেছেন অরুণ। প্রতিটি পর্বে জ্বলে উঠেছেন। প্রতিযোগী আর গ্যাং লিডারদের মুখ থেকে অবচেতনভাবেই বের হয়েছে, ‘ওয়াও!’

অরুণের শক্তি আর সাহসের প্রশংসা করতে বাধ্য হয়েছেন অন্যান্য প্রতিযোগী আর গ্যাং লিডার। এই সিজনের ফাইনালে সর্বশেষ টাস্কের নাম ছিল ‘রোডিশ রিয়েল হিরো টাস্ক’। আর শেষ সুযোগে অরুণ যা দেখিয়েছেন, তা কোনো অ্যাকশননির্ভর হলিউড ছবির চেয়ে কম নয়। সবচেয়ে কম সময়ে অরুণের সেই টাস্ক শেষে সবাই সব ভুলে ‘অরুণ অরুণ’ বলে চিৎকার করেছে। এই হলো কয়েক দিনের মধ্যেই ভারতের প্রত্যন্ত অঞ্চলের এক গ্রাম থেকে উঠে আসা অরুণ নামের এক তরুণের সাধারণ থেকে অসাধারণ হয়ে যাওয়ার গল্প।

এখন যতজন অরুণের গ্রামের নাম জানে না, তার চেয়ে অনেক বেশি মানুষ জানে অরুণের নাম। বিজয়ীয় মুকুট মাথায় নিয়ে কেমন লেগেছে অরুণের? দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, অরুণ শর্মা তাঁর অনুভূতি জানিয়েছেন এভাবে, ‘ভারতের লাইন অব কন্ট্রোলের (এলওসি) কাছে নাহোতি নামের ছোট্ট একটা গ্রামে আমার জন্ম। গ্রামের অধিকাংশ মানুষ গরিব। তারা ঠিকভাবে কথা বলতে পারে না। সেই মানুষদের একজন রোডিশের বিজয়ী হওয়ায় বিজয়ের গুরুত্ব আরও বড় হয়ে যায়। আমি দুবার রোডিশ থেকে বাদ পড়েছি। জীবনের কঠিন সময়ের মানে আমার জানা। আমি পড়ে গিয়ে উঠে দাঁড়াতে না পারলেও থামিনি। হাল ছাড়িনি। হামাগুড়ি দিয়ে হেঁটেছি।’

২১ বছর বয়সী অরুণ বলেন, ‘আমি সব সময় টাস্ক ভালোবাসতাম। কারণ, টাস্কই আমাকে আত্মবিশ্বাসী করে তুলত। আজকের এই বিজয়ে আমি আমার বন্ধু আর শত্রু, সবার কাছেই আন্তরিক কৃতজ্ঞ। তাঁদের যত ধন্যবাদ দিই না কেন, কম। আমার জেদি মানসিকতাই আমাকে শিখিয়েছে, সব সম্ভব।’

অনলাইন প্ল্যাটফর্মসহ অন্যান্য মাধ্যমের জনপ্রিয়তা যেভাবে বাড়ছে, তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে টেলিভিশনে টিকে থাকার চ্যালেঞ্জের তুঙ্গস্পর্শী জনপ্রিয়তা ধরে রাখতে পেরেছে রোডিশ। এবারের সিজনে গ্যাং লিডার হিসেবে ছিলেন প্রিন্স নরুলা, রাফতার, নেহা ধুপিয়া, সন্দীপ সিং আর নিখিল ছিনাপা। রিংমাস্টার হিসেবে ছিলেন এই শোর প্রথম সিজনের বিজয়ী রনভিজে সিং।