আমার এখন কটু কথাও খারাপ লাগে না

বিদ্যা বালান
বিদ্যা বালান
>মিশন মঙ্গল ছবিতে আবার বাজিমাত করলেন বিদ্যা বালান। বৃষ্টিভেজা এক দুপুরে বলিউডের এই অভিনয়শিল্পীর সঙ্গে আড্ডা দিলেন প্রথম আলোর মুম্বাই প্রতিনিধি দেবারতি ভট্টাচার্য

হেই বেবি ও ভুল ভুলাইয়ার পর মিশন মঙ্গলও সাফল্য পেল। অক্ষয়ের সঙ্গে আপনার তৃতীয় ছবিও হিট। এত দিন আপনাদের একসঙ্গে ছবিতে দেখা যায়নি কেন?

বিদ্যা বালান: আমি তো কতবার অক্ষয়কে বলেছিলাম, তোমার সঙ্গে ছবি করতে চাই। কিন্তু ও আমাকে নেয়নি (হেসে)। আরে না না, মজা করছিলাম। আসলে সে রকম কোনো ছবির প্রস্তাব আসেনি। তবে বারবার ওর সঙ্গে কাজ করতে চাইব। 

শুনেছি, অক্ষয় সেটে নানান ঠাট্টা-তামাশা করতেন…

বিদ্যা: অক্ষয়ের মধ্যে কোনো পরিবর্তনই আসেনি। শুধু ওর বয়সটাই বেড়েছে। এখনো ও একই রকমভাবে হাসি–মজায় সবাইকে মাতিয়ে রাখে; ১২ বছর আগে যে রকম ছিল। আশপাশের মানুষের সঙ্গে কীভাবে মজা করতে হয়, তা আমি ওর কাছ থেকে শিখেছি। এবারও আমাদের কাউকে ছাড়েনি ও। আমার শাড়ির আঁচলে চামচ বেঁধে দিত। আমাদের একে–অপরের শাড়ির আঁচল বেঁধে দিত। সত্যি ও এতটুকু বদলায়নি। আর এমন চাতুর্যের সঙ্গে সবকিছু করত যে বোঝাই যেত না। 

আপনার কি মনে হয় যে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির দৃষ্টিভঙ্গি এখন অনেক বদলেছে? এখন অভিনেত্রীর বয়স নিয়ে কেউ মাথা ঘামায় না।

বিদ্যা: নিশ্চয়ই। ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে এখন অনেক পরিবর্তন এসেছে। আমি নিজে এই ইন্ডাস্ট্রিতে এসেছি ২৬ বছর বয়সে। আগেকার দিনে সাধারণত নায়িকারা এমন বয়সে অবসর নিতেন। তারপর বিয়েথা করে ছেলেপুলে নিয়ে সংসার করতেন। কিন্তু এখন কারও জীবন বিয়ে, বাচ্চার পর থেমে থাকে না। তাই সবার আগে নিজের মধ্যে কাজ করার ইচ্ছাকে জাগিয়ে রাখতে হবে।

ফিগার নিয়ে আপনাকে সব সময়ই নানান কথা শুনতে হয়। কীভাবে নেন এসব মন্তব্য? 

বিদ্যা: ইন্ডাস্ট্রিতে পা রাখার পর আমি একবার নিজের ওজন অনেক কমিয়ে ফেলেছিলাম। আর তখন সবাই বলতে শুরু করল যে আমি খুব রোগা হয়ে গেছি। আমার মধ্যে সেই উজ্জ্বলতা আর নেই। এদিকে আমার ওজন যখন বেড়ে গেল তখন সবাই বলত, ওজন কমাও। একজন প্রযোজক, নাম বলব না, আমাকে আবার ওজন বাড়ানোর পরামর্শ দেন। আর তখনই মনঃস্থির করি যে নিজের ব্যক্তিত্বে আমি যেন নিজে খুশি থাকি। সেটাই বড় কথা। বাকি দুনিয়া কোনো দিনই সন্তুষ্ট হবে না। এখন অন্য কারও কোনো মন্তব্যে আমার কিছু যায়–আসে না। আমার এখন কটু কথাও খারাপ লাগে না।

ছবির সফলতা-অসফলতার প্রভাব আপনার ওপর কতটা পড়ে?

বিদ্যা: কাহানি ছবির পর দ্য ডার্টি পিকচার হিট হয়। এরপর আমার ওপর এসব কিছুর প্রভাব ভীষণভাবে পড়েছিল। পরপর ছবি ফ্লপ হওয়ার পর ধীরে ধীরে আমার জীবন থেকে এর প্রভাব ফিকে হয়ে আসে। এখন ছবি হিট-ফ্লপে আমার কিছু যায়–আসে না। ছবি চলা বা না চলার দায় আমি নিতে পারি না। আমি শুধু একটা ছবির অংশ মাত্র। 

অনেকে বিশ্বাস করেন যে ‘হরোস্কোপ সমান বায়োস্কোপ’। আপনি নিজে কতটা ভাগ্যে বিশ্বাসী?

বিদ্যা: সত্যি বলতে, আত্মবিশ্বাসে আমি বিশ্বাসী। আমি কোনো দিন জ্যোতিষে বিশ্বাসী নই। ২০০৩ সালে আমি একটা তামিল ছবি করছিলাম। তখন আমার মা আমাকে এক জ্যোতিষের কাছে নিয়ে যান। জ্যোতিষী বলেন, এই ছবি থেকে আমাকে বাদ দেওয়া হবে না। কিন্তু সেই তামিল ছবি থেকে আমাকে বাদ দেওয়া হয়। এরপর আরেক জ্যোতিষীর কাছে মা নিয়ে যান আমাকে। এই জ্যোতিষী বলেন, আমি শুধু টেলিভিশনে কাজ করব। সিনেমায় কোনো দিন সুযোগ পাব না। তাঁর সে কথা ভুল প্রমাণিত হয়েছে। সেই জ্যোতিষীর বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর মাকে বলেছিলাম, আমি তাঁর গণনা ভুল প্রমাণ করে ছাড়ব।