সুজান আমার জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ: হৃতিক রোশন

টাইগার শ্রফ ও হৃতিক রোশন অভিনীত ‘ওয়ার’ ছবিটি মুক্তি পাবে আগামী ২ অক্টোবর
টাইগার শ্রফ ও হৃতিক রোশন অভিনীত ‘ওয়ার’ ছবিটি মুক্তি পাবে আগামী ২ অক্টোবর

বলিউড তারকা হৃতিক রোশন প্রায় দুই বছর পর ফিরলেন। উপহার দিলেন হিট ছবি ‘সুপার থার্টি’। হৃতিককে সুপারহিরো ‘কৃষ’রূপে যেমন গ্রহণ করেছে দর্শক, গ্রামের দরিদ্র, তুখোড় মেধাবী আনন্দ কুমার হিসেবেও ততটাই আপন করে নিয়েছে। শিগগিরই মুক্তি পাবে যশরাজ ফিল্মসের অ্যাকশননির্ভর ছবি ‘ওয়ার’। এই ছবিতে হৃতিক প্রথমবারের মতো পর্দা ভাগ করবেন টাইগার শ্রফের সঙ্গে। আগামী বছর আসছে ‘কৃষ’ সিরিজের চতুর্থ ছবি, ‘কৃষ ফোর’। ক্যারিয়ারের সাফল্য, সুপার থার্টি এবং সাবেক স্ত্রী সুজান খানের সম্পর্কে বললেন ফিল্মফেয়ারকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে।

‘সুপার থার্টি’ আপনার জীবনের একটা টার্নিং পয়েন্ট? কারণ, এর আগের দুটো ছবি ‘মাহেঞ্জোদারো’ (২০১৬) ও ‘কাবিল’ (২০১৭) একেবারই ফ্লপ হয়।
‘সুপার থার্টি’ নিঃসন্দেহে আমার জীবনের একটা সেরা সিদ্ধান্ত। এটা কোনো মসলাদার ছবি না। এ ধরনের ছবি আগে কখনো করিনি। ‘হ্যাঁ’ বলাটা খুব কঠিন আর ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। কিন্তু আমি আমার হৃদয়ের কথা শুনেছি। বক্স অফিসের কথা ভাবিনি। কিন্তু দিন শেষে দেখা গেল বক্স অফিস হৃদয়কে সঙ্গ দিয়েছে।

হৃতিক রোশন
হৃতিক রোশন

আপনার চেহারার সঙ্গে নাকি গ্রিক দেবতার মিল আছে। এত দিন যেসব চরিত্র করেছেন, তার সঙ্গে এই চেহারা বেশ মানিয়ে যায়। কিন্তু ‘সুপার থার্টি’র চরিত্রটা একাবারে গ্রামের দরিদ্র একজন মানুষের। নিশ্চয়ই চ্যালেঞ্জিং ছিল।
চেহারা বা সিক্সপ্যাক বডি দিয়ে আমি নিজেকে চেনাতে চাই না। অন্য কোনো চরিত্র হয়ে ওঠাই তো আমার কাজ। একটা মানুষ দেখতে কেমন, তা দিয়ে আমি তাঁকে বিচার করি না। তাই চেহারা, শরীর আমার জন্য কোনো বিষয় না। আমি হৃদয় দিয়ে সেই মানুষটা হয়ে উঠি। ‘কোয়ি মিল গ্যায়া’, ‘গুজারিশ’, ‘যোধা আকবর’—প্রতিটি ছবিতেই আমি ওই চরিত্রের হৃদয় ধারণ করার চেষ্টা করেছি।

‘সুপার থার্টি’র সাফল্য থেকে কী শিখেছেন?
এই সফলতা নিশ্চিত করেছে যে আমার ব্যর্থতা থেকে আমি শিখতে পেরেছি। কোনো কিছু না ভেবে কেবল মনের কথা শুনতে আমার হৃদয় ও আত্মাকে সাহস জুগিয়েছে।

‘সুপার থার্টি’র শুটিংয়ের সময় পরিচালক বিকাশ বহেলের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্তার অভিযোগ ওঠে।
আমার বিশ্বাস, অভিযোগটি সাজানো। এর কোনো ভিত্তি নেই। আমরা প্রতিদিন অফুরান প্রাণশক্তি নিয়ে শুটিং করছিলাম। যখন খবরটি সামনে এল, সবাই খুব মর্মাহত হয়েছি। তখন ছবিটা ভালোভাবে শেষ করা এবং মুক্তি দেওয়াই আমাদের জন্য একটা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়। আমরা সেই পরীক্ষায় সফল হয়েছি।

‘ওয়ার’ ছবির দৃশ্যে হৃতিক রোশন
‘ওয়ার’ ছবির দৃশ্যে হৃতিক রোশন

‘ওয়ার’ ছবির বিশেষত্ব কী?
আমি নিজে একজন দর্শক হিসেবে যে ছবি দেখতে চাই, এটি সে রকমই একটা ছবি। ‘ধুম টু’ বা ‘ব্যাং ব্যাং’ ধারার। পরিচালক সিদ্ধার্থ আনন্দ আমাকে স্ক্রিপ্ট দেন। পড়ে তো তখনই এই ছবি করার জন্য তৈরি! অবশেষে ‘ব্যাং ব্যাং’-এর পর আবারও একটা ছবি পেলাম, যে ধরনের ছবির জন্য আমি অপেক্ষা করছিলাম।

টাইগার শ্রফ তো আপনার বড় ভক্ত...
ওর কঠোর পরিশ্রম দেখে আমিও কিন্তু তাঁর ভক্ত হয়েছি। তিনি শুটিংয়ের সেটে একজন সৈনিকের মতো। আমি খুব খুশি, কারণ আমি তাঁকে অনুপ্রাণিত করতে পেরেছি। আর এখন টাইগারকে দেখে আমি অনুপ্রাণিত হই।

হৃতিক রোশন
হৃতিক রোশন

ভালো আর খারাপ সময় থেকে আপনি কী শিখেছেন?
‘খারাপ সময়’ শিক্ষক হিসেবে বেশি ভালো। খারাপ সময় মানুষকে জ্ঞানী বানায়। আসলে ভালো সময় থেকে তেমন কিছু শেখার নেই। আমি আমার বাচ্চাদের শেখাই, প্রতিদিন সমস্যা আসবে। আর তোমরা হাসতে হাসতে সেসব সমস্যার সমাধান করবে। কোনো অভিযোগ করবে না। অভিযোগ করা কোনো সমাধান না। তোমরা সমাধান বের করবে।

হৃতিক রোশন ও সুজান খান
হৃতিক রোশন ও সুজান খান

সুজান আর আপনি তো বিবাহবিচ্ছেদের পরও বন্ধুসুলভ সম্পর্ক বজায় রেখেছেন। কীভাবে?
আমার সঙ্গে সুজানের খুবই বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক। সে এখনো আমার জীবনের একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ। আমার মতো সেও প্রতিনিয়ত ভালো মানুষ হয়ে উঠতে চেষ্টা করে। যখন কেউ বলে যে আমাদের সম্পর্ক তাঁদের জন্য অনুপ্রেরণা, খুব ভালো লাগে। এটা খুবই দুঃখজনক, খুব কম দম্পতিই বিচ্ছেদের পর বন্ধুত্বপূর্ণ ও সুখী সম্পর্ক বজায় রাখে।