অতিথি সাবিনা, উপস্থাপক আফজাল
বরেণ্য সংগীতশিল্পী সাবিনা ইয়াসমীনের জন্মদিন আগামীকাল ৪ সেপ্টেম্বর। অসাধারণ গায়কি আর কণ্ঠমাধুর্যের কারণে বাংলাভাষীদের হৃদয় জয় করে নিয়েছেন তিনি। জনপ্রিয় এ শিল্পীকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাতে চ্যানেল আই ‘তারকাকথন’ অনুষ্ঠানের বিশেষ পর্ব প্রচার করবে। অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করবেন জনপ্রিয় অভিনেতা ও নির্মাতা আফজাল হোসেন।
চ্যানেল আইয়ের জনসংযোগ বিভাগ সূত্র জানিয়েছে, আগামীকাল বুধবার সাবিনা ইয়াসমীনকে লালগালিচা সংবর্ধনা দেওয়া হবে। তিনি দুপুর সাড়ে ১২টায় অনুষ্ঠিতব্য ‘তারকাকথন’ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে নিজের সংগীতজীবনের নানা গল্প তুলে ধরবেন দর্শক আর ভক্তদের কাছে। অনুষ্ঠানটি প্রযোজনা করবেন অনন্যা রুমা। আগামীকাল সকাল সাড়ে সাতটায় ‘গানে গানে সকাল শুরু’ অনুষ্ঠানে সাবিনা ইয়াসমীনের জনপ্রিয় গান পরিবেশন করবেন ২০০৮ সালে ‘চ্যানেল আই সেরা কণ্ঠ’ প্রতিযোগিতার চ্যাম্পিয়ন ঝিলিক। বেলা ১টা ৫ মিনিটে ‘এবং সিনেমার গান’ অনুষ্ঠানে প্রচারিত হবে সাবিনা ইয়াসমীনের জনপ্রিয় কিছু গান।
সাবিনা ইয়াসমীন জন্মগ্রহণ করেন ১৯৫৪ সালের ৪ সেপ্টেম্বর। পৈতৃক বাড়ি সাতক্ষীরা হলেও তাঁর জন্ম ঢাকায়। পাঁচ বোনের মধ্যে ফরিদা ইয়াসমীন, ফওজিয়া খান, নীলুফার ইয়াসমীন ও সাবিনা ইয়াসমীন গানের মানুষ। বড় বোন ফরিদা ইয়াসমীন যখন গান শিখতেন ওস্তাদ দুর্গাপ্রসাদ রায়ের কাছে, ছোট্ট সাবিনা সারাক্ষণ তাঁর পাশে থাকতেন। পরে ওস্তাদ পি সি গোমেজের কাছে উচ্চাঙ্গসংগীতের তালিম নেন তিনি। মাত্র সাত বছর বয়সে তিনি স্টেজ প্রোগ্রাম শুরু করেন। আট বছর বয়সে ছোটদের গানের অনুষ্ঠান ‘খেলাঘর’-এর মাধ্যমে রেডিওতে গান করেন। এরপর ১৯৬৫ সালে টেলিভিশন সম্প্রচার শুরু হলে শিশু শিল্পী হিসেবে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তিনি গান পরিবেশন করতেন।
সাবিনা ইয়াসমীন ১৯৭৫ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজবিজ্ঞানে এমএ পাস করেন। অন্য বোনদের মধ্যে নিলুফার ইয়াসমীন ধ্রুপদি ধারায় জনপ্রিয়তা পান আর সাবিনা ইয়াসমীন এগিয়ে যান আধুনিক গান ও প্লেব্যাক নিয়ে। বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের গানে সাবিনা ইয়াসমীনের উচ্চতা স্পর্শ করা আজও কারও পক্ষে সম্ভব হয়নি। চলচ্চিত্রে দেড় হাজারের বেশি গানে তিনি কণ্ঠ দিয়েছেন। এ ছাড়া সেরা কণ্ঠশিল্পী হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন ১২ বার। ছবিগুলো হলো ‘সাধারণ মেয়ে’ (১৯৭৫), ‘গোলাপি এখন ট্রেনে’ (১৯৭৮), ‘সুন্দরী’ (১৯৭৯), ‘কসাই’ (১৯৮০), ‘চন্দ্রনাথ’ (১৯৮৪), ‘প্রেমিক’ (১৯৮৫), ‘রাজলক্ষ্মী শ্রীকান্ত’ (১৯৮৭), ‘দুই জীবন’ (১৯৮৮), ‘দাঙ্গা’ (১৯৯১), ‘রাধাকৃষ্ণ’ (১৯৯২), ‘দুই দুয়ারি’ (২০০০), ‘দুই নয়নের আলো’ (২০০৬)। এ ছাড়া তিনি বাচসাস পুরস্কার পেয়েছেন পাঁচবার।
সাবিনা ইয়াসমীন ১৯৮৪ সালে অর্জন করেন একুশে পদক। ১৯৮৫ সালে ভারতের ‘বিশ্ব উন্নয়ন সংসদ’ সংগীতে বিশেষ অবদানের জন্য তাঁকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান করে এবং ‘সংসদরত্ন’ সম্মানে ভূষিত করে। ১৯৯৬ সালে স্বাধীনতা দিবস পুরস্কারও পান জনপ্রিয় এই কণ্ঠশিল্পী।