অক্ষয়ের সন্তানদের জীবন সহজ নয়

ছেলে আরাভের সঙ্গে অক্ষয় কুমার। ছবি: টুইটার
ছেলে আরাভের সঙ্গে অক্ষয় কুমার। ছবি: টুইটার

অক্ষয় কুমারের যেন কোনো ক্ষয় নেই। গত পরশুদিন সোমবার ৫৩ বছরে পা রাখলেন তিনি। তবে দীর্ঘদিন ধরে তিনি শরীরে বয়সের কোনো ছাপ ফেলতে দিচ্ছেন না। তাঁর জীবন যাপন পদ্ধতি মানুষের জন্য অনুকরণীয়, অনুপ্রেরণাদায়ক। শুধু পেশগতজীবনেই নয়, ব্যক্তিগতজীবনেও তিনি অত্যন্ত সুন্দরভাবে ভারসাম্য রাখতে জানেন। স্ত্রী টুইঙ্কেল খান্না, দুই সন্তান আরাভ আর নিতারাকে নিয়ে তাঁর সুখের সংসার।

সম্প্রতি ভারতের জনপ্রিয় এক দৈনিককে দেওয়া সাক্ষাৎকারে পরিবার আর সন্তানদের নিয়ে কথা বলেছেন। বলিউড হাঙ্গামা সেই সাক্ষাৎকার থেকে প্রতিবেদন করেছে। বাবা মায়ের তারকাখ্যাতি কি তাঁর সন্তানদের স্বাভাবিক জীবনকে বিপর্যস্ত করেছে? তারা কীভাবে পাপারাজ্জির ক্যামেরার ফ্ল্যাশের সঙ্গে মানিয়ে নেয়?

উত্তরে অক্ষয় কুমার স্বীকার করেছেন, তাঁদের তারকাখ্যাতি সন্তানদের জীবনকে কঠিন করেছে। তারা নাকি বাড়ির বাইরে বের হতেই ভয় পায়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বাবা মাকে নিয়ে নানা খবর অক্ষয় কুমারের সন্তানদের রাতের ঘুম নষ্ট করে। তাদের প্রায়শই নানা অস্বস্তিকর প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়। অক্ষয় কুমার বলেন, ‘আমার মতে, ২১ বছরের নীচের কাউকে তার বাবা-মায়ের বিভিন্ন ব্যক্তিগত ও পেশাগত বিষয় নিয়ে প্রশ্ন করা অন্যায়।’

সময় পেলেই নিতারার সঙ্গে ব্যস্ত হয়ে পড়েন অক্ষয় কুমার। ছবি: টুইটার
সময় পেলেই নিতারার সঙ্গে ব্যস্ত হয়ে পড়েন অক্ষয় কুমার। ছবি: টুইটার

নিজের সন্তানদের বিষয়ে কথা বলার সময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর কুফলের ওপরেও আলোকপাত করেছেন অক্ষয়। বলেছেন, ‘প্রযুক্তিও ক্রমাগত পরিবেশকে বিষাক্ত করে তুলছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অন্য মানুষ বা তারকাদের নিয়ে ট্রল করা যেন একটা সংস্কৃতিতে পরিণত হয়েছে। তাঁরা একবারও ভাবে না, এই অসুস্থ হাসি তামাশার ফলে ওই মানুষগুলোর পারিবারিক বা সামাজিক জীবন কীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।’

অনলাইন প্লাটফর্মগুলোর ফলে মানুষের মানসিকতা অত্যন্ত নেতিবাচকভাবে পরিবর্তিত হচ্ছে বলেই মত প্রকাশ করেন ‘মিস্টার খিলাড়ি’। অক্ষয় বলেন, 'অন্যকে, বিশেষ করে সফল মানুষদের অপমান করে, কষ্ট দিয়ে মানুষ একটা পৈশাচিক আনন্দ পাচ্ছে। আর তারকাদের সন্তানদের ওপর এসব প্ল্যাটফর্ম মানসিক চাপ সৃষ্টি করছে। আমার মেয়ে তো আমাকে বলেছে যে তার আমাদের সঙ্গে বাইরে খেতে যেতে ভালো লাগে না। পাপারাজ্জিদের ভালো লাগে না। ক্যামেরার ফ্ল্যাশ ভালো লাগে না। আগে মাঝে মাঝে বাইরে ডিনার করতে যেতাম। এখন আর যায় না ওরা। এমনকি একটা সিনেমা দেখতেও না।'

মাঝে মাঝে পরিবার নিয়ে ঘুরতে বেরিয়ে পড়েন অক্ষয় কুমার। ছবি: টুইটার
মাঝে মাঝে পরিবার নিয়ে ঘুরতে বেরিয়ে পড়েন অক্ষয় কুমার। ছবি: টুইটার

শুধু মেয়ে নিতারা না, আরাভেরও একই অভিযোগ। হয়তো আরাভ তাঁর ট্রেনিং শেষ করে বন্ধুদের সঙ্গে সিনেমা দেখতে গেছে, আর বাসায় ফিরেই দেখল নিজের ছবি। ক্যাপশনে লেখা, আরাভকে মোটেই ভালো দেখাচ্ছে না। ক্লান্ত লাগছে। বাবার মতো হয়নি ছেলে, ইত্যাদি। অক্ষয় কুমারের ছেলেও তাই স্বাভাবিক জীবন বঞ্চিত। অক্ষয় কুমার ওই সাক্ষাৎকারটি শেষ করেছেন এভাবে, ‘তারকা সন্তানদের জীবন খুব কঠিন।’

অন্যদিকে জন্মদিনে ভক্তদের ভালোবাসা আর শুভকামনার উত্তরে টুইটারে একটি ভিডিও দিয়েছেন অক্ষয়। ভিডিওতে ভক্তদের অসংখ্য উপহার আর বার্তার জন্য ধন্যবাদ জানাতে গিয়ে আবেগে আপ্লুত হতে দেখা যায় তাঁকে। ২ মিনিট ৪৪ সেকেন্ডের সেই ভিডিও এখন পর্যন্ত দেখা হয়েছে ২ লাখ ১৮ হাজার বার। ভিডিওটির ক্যাপশনে অক্ষয় কুমার লিখেছেন, ‘ধন্যবাদ, ধন্যবাদ, ধন্যবাদ। আমি যতবারই ধন্যবাদ জানাই না কেন, আপনাদের ভালোবাসা আর শুভকামনার তুলনায় তা নিতান্তই নগণ্য। আপনাদের জন্যই আজকের আমি। আমার জন্মদিন বিশেষ করে তুলবার জন্য কৃতজ্ঞতা।’