হৃতিক খুবই হেল্পফুল: বাণী

>

যশরাজ ফিল্মসের ছবি দিয়ে বাণী কাপুরের বলিউডজীবন শুরু। এই প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের হয়েই একের পর এক ছবিতে কাজ করছেন এই বলিউড সুন্দরী। রণবীর সিং, সুশান্ত সিং রাজপুতের পর হৃতিক রোশন, টাইগার শ্রফের মতো নায়কের নায়িকা হলেন তিনি। তবে এরপর বলিউডে নিজের স্বতন্ত্র অবস্থান গড়তে পারেননি বাণী। সিদ্ধার্থ আনন্দ পরিচালিত ছবি ওয়ার কি তাঁর ভাগ্য খুলতে পারবে? টাইগার-হৃতিক যুগলবন্দীর মধ্যে অভিনেত্রী হিসেবে নিজেকে কতটা প্রতিষ্ঠিত করতে পারবেন এই নায়িকা। এসব কিছু উঠে এসেছিল যশরাজ স্টুডিওতে বাণীর সঙ্গে প্রথম আলোর আড্ডায়।

বাণী কাপুর। ছবি: ইনস্টাগ্রাম
বাণী কাপুর। ছবি: ইনস্টাগ্রাম

বেফিকরে মুক্তির তিন বছর পার হয়ে গেছে। এত দিন কী নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন?

বাণী কাপুর: পরিবারকে সময় দিয়েছি। অনেক ঘোরাঘুরি করেছি। দুবাই, সিঙ্গাপুর, ফ্রান্সসহ ইউরোপের বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেড়িয়েছি। আর প্রচুর সিনেমা দেখেছি।

 ওয়ার ছবির জন্য নিজেকে কীভাবে প্রস্তুত করেছিলেন?

বাণী: হৃতিক–টাইগার দুজনেই অনেক বড় স্টার। তাঁদের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা দারুণ। আমি এই ছবির জন্য অনেক পরিশ্রম করেছি। বিশেষ করে ‘ঘুঙরু’ গানের দৃশ্যের জন্য আমাকে অনেক কিছু শিখতে হয়েছে। ফিটনেস নিয়ে অনেক ঘাম ঝরাতে হয়েছে। দু-তিন মাস ধরে নাচের মহড়া করেছিলাম। 

যশরাজের এই ছবির ট্রেলারজুড়ে হৃতিক আর টাইগারের আধিপত্য। আপনাকে ছবিতে কীভাবে আর কতটুকু পাওয়া যাবে? 

বাণী: এটা মূলত অ্যাকশনধর্মী ছবি। টাইগার ও হৃতিককে নিয়েই এই ছবির গল্প। তবে আমি অত্যন্ত খুশি এই ছবিতে অভিনয়ের সুযোগ পাওয়ায়। কারণ, আমার চরিত্রটা ছবির দুই কেন্দ্রীয় চরিত্রের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। 

হৃতিক আর টাইগারের মধ্যে একজনকে যদি বেছে নিতে বলা হয়, কার কথা বলবেন? 

বাণী: খুবই কঠিন এটা। দুজনেই অসাধারণ মানুষ। তাঁদের দুজনের ওপরই পুরো দুনিয়ার ক্রাশ। আমি কী করে একজনের নাম বলি? 

টাইগার তো কম কথার মানুষ...

বাণী: আসলে টাইগারের সঙ্গে আমার কোনো দৃশ্য নেই। তবে আমাদের সেটে দেখা হতো। টাইগার খুব শান্ত, ধীরস্থির আর নরম স্বভাবের। তবে ওর একটা অন্য দিকও আছে। টাইগার খুবই মজা করতে পারে। 

আর হৃতিক? 

বাণী: হৃতিক খুবই হেল্পফুল। ওর সঙ্গে কাজ করার মাধ্যমে আমি অনেক কিছু শিখেছি। হৃতিক আমাকে মানসিকভাবে অনেক সমর্থন দিয়েছেন। এটা একটা অভিনেতার বড় গুণ। আর এর ফলে কাজটা অনেক সহজ আর উন্নত হয়। 

বাণী কাপুর
বাণী কাপুর

রণবীর সিং, হৃতিক রোশন, সুশান্ত সিং রাজপুত, রণবীর কাপুরের মতো অভিনেতাদের সঙ্গে কাজ করেছেন আপনি। অভিনেত্রী হিসেবে নিজেকে কতটা সমৃদ্ধ মনে হয়?

বাণী: নিজেকে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সমৃদ্ধ করতে হয়। আমিও যখন যে সময়ে যেই অভিনেতার সঙ্গে কাজ করি, তাঁর থেকেই কিছু না কিছু শিখি, নিজেকে সমৃদ্ধ করি। অভিনেত্রী হিসেবে আরও শিক্ষিত হই। এই শেখাটা কখনো শেষ হওয়ার নয়। এ পর্যন্ত যাঁদের সঙ্গেই কাজ করেছি, অভিনেতা হিসেবে তাঁদের প্রত্যেকের ধরনই আলাদা। তবে এই অভিনেতাদের মধ্যে একটা মিল হলো তাঁরা প্রত্যেকেই নিবেদিত আর কাজের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তাঁদের সঙ্গে অভিনয় করতে গিয়ে নিজেকে নতুনভাবে আবিষ্কার করেছি।

যশরাজ ফিল্মসের মতো বড় প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান আর বড় বড় নায়কের সঙ্গে কাজ করেও সেভাবে সফলতার স্বাদ এখনো পাননি। কোথাও আক্ষেপ হয় না? 

বাণী: দেখুন, আমি যশরাজ ফিল্মসের আত্মীয় নই। আমি মনে করি, ওরা সততায় বিশ্বাসী। ওরা আমার ওপর ভরসা রেখেছে। কোথাও ওরা আমার মধ্যে প্রতিভা দেখেছে, তাই সুযোগ দিয়েছে, দিচ্ছে। আমি ওদের সব থেকে বেশি অডিশন দিয়েছি। ওয়ার ছবির জন্য আমি তিন মাস ধরে অডিশন দিয়েছি। যদি কখনো ওরা মনে করে আমাকে দিয়ে হচ্ছে না, ওরা আমাকে বাদ দিতেই পারে। তবে আদিত্য চোপড়া (যশরাজ ফিল্মসের প্রধান) কখনো কারও সঙ্গে অন্যায় করেন না। নিয়ম মেনে অডিশনের মাধ্যমেই তিনি তাঁর ছবিতে সবাইকে সুযোগ দেন। সেটা কোনো তারকার সন্তান হোক কিংবা বলিউডে নতুন কেউ। যশরাজ কখনো তাদের নীতির বাইরে গিয়ে কিছু করে না। 

আপনি কি আদিত্যকে আপনার গুরু বলে মনে করেন? 

বাণী: অবশ্যই। আদি স্যার খুব বুদ্ধিদীপ্ত একজন মানুষ। তিনি প্রত্যেকের ক্ষেত্রে খুবই সৎ। তাঁর একদম ইগো নেই। তিনি আপাদমস্তক স্বচ্ছ এক ব্যক্তি। 

এই তিন বছরে আপনি অন্য কোনো প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান থেকে ডাক পাননি? 

বাণী: অনেক প্রস্তাবই পেয়েছি। কিন্তু কোনো চিত্রনাট্য আমাকে সেভাবে টানেনি। তাই করা হয়নি। আমার মন্ত্র হলো—কাজ কম করো, কিন্তু তোমার সেরাটা দাও। 

প্রত্যাখ্যানকে কীভাবে নেন? 

বাণী: ছোটবেলা থেকেই আমার অসম্ভব মনের জোর। সহজে হাল ছেড়ে দিই না। আমি মনে করি ব্যর্থতা মানে জীবনে তুমি কিছু করার চেষ্টা করেছিলে। যদি কখনো ব্যর্থ না হও, তার মানে তুমি কখনো সফল হওয়ার চেষ্টাই করোনি। 

শেষ প্রশ্ন, এখনকার নায়িকারা সামাজিক মাধ্যমে খুব সক্রিয়। আপনাকে সেভাবে দেখা যায় না কেন? 

বাণী: এই প্রশ্ন আমাকে অনেকেই করে। অনেকে পরামর্শ দেয় আরও সামাজিক হওয়ার। কিন্তু আমি সামাজিক নই। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো খুব একটা উপভোগ করি না। আমি রেস্তোরাঁর বাইরে দাঁড়িয়ে পোজ দিতে পারি না। আমার এসব ভালো লাগে না। আমার শুধু লক্ষ্য আরও ভালো ছবিতে অভিনয় করার।