বিবাহবিচ্ছেদ নয়, আলাদা থাকছেন ভাস্বর ও নবমিতা

নবমিতা চট্টোপাধ্যায় ও ভাস্বর চট্টোপাধ্যায়। ছবি: ভাস্বর মুখার্জি
নবমিতা চট্টোপাধ্যায় ও ভাস্বর চট্টোপাধ্যায়। ছবি: ভাস্বর মুখার্জি

একসঙ্গে ছিলেন সাড়ে পাঁচ বছর। সংসার করেছেন। কিন্তু আজ চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন অঙ্গনের এই দুই শিল্পীর চলার পথ দুদিকে চলে গেছে। আদালতে তাঁরা পৃথকভাবে থাকার আবেদন করেছেন। এই দুই শিল্পীর একজন মহানায়ক উত্তম কুমারের নাতনি নবমিতা চট্টোপাধ্যায় আর অন্যজন ছোট ও বড় পর্দার জনপ্রিয় অভিনেতা ভাস্বর চট্টোপাধ্যায়।

২০১৪ সালে ২১ জানুয়ারি নবমিতার সঙ্গে বিয়ে হয় ভাস্বর চট্টোপাধ্যায়ের। এটি ছিল ভাস্বরের দ্বিতীয় বিয়ে। বিয়ের পর দুজনের সুখেই দিন কাটছিল। কিন্তু বছরখানেকের মধ্যেই শুরু হয় দাম্পত্য কলহ। পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ একেবারেই ছিল না। তবে এই দুই তারকার বন্ধুদের মতে, ভাস্কর চট্টোপাধ্যায় সবকিছু মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছেন, কিন্তু সে পথে হাঁটেননি নবমিতা।

পারিবারিকভাবে ভাবে জানা গেছে, এ বছরের এপ্রিলে এই দুই তারকার দাম্পত্য কলহ চরমে পৌঁছে যায়। অবশেষে নবমিতা চট্টোপাধ্যায় স্বামীর বাড়ি ছেড়ে চলে যান তাঁর নিজের বাবার বাড়ি ভবানীপুরে। নবমিতাকে বাসায় ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেছেন ভাস্বর চট্টোপাধ্যায়। তাতে সায় দেয়নি নবমিতা। অবশেষে দুজনে ঠিক করেছেন, তাঁরা আর একসঙ্গে থাকবেন না, আলাদা থাকবেন। তবে এখনই বিবাহবিচ্ছেদ নয়। গত জুনে আদালতে এই দম্পতি পৃথক থাকার জন্য যৌথভাবে আবেদন করেছেন। তখন থেকে তাঁরা আলাদা থাকছেন।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে নবমিতা চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, ‘আমরা আলাদা থাকছি।’ আর ভাস্বর চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, ‘পৃথকভাবে থাকার আবেদন আমরা আদালতে জমা দিয়েছি। আমাদের হাতে এক বছর সময় আছে। এখনো চূড়ান্তভাবে বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন করিনি।’

আলাদা থাকার এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রয়োজন হলো কেন? ভাস্বর চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, ‘আসলে আমরা দুজন দুই মেরুর। আমি গুছিয়ে সংসার করতে চাই, কিন্তু ও বড্ড অগোছালো।’

নবমিতা চট্টোপাধ্যায় আর ভাস্বর চট্টোপাধ্যায় এখন ‘বাজলো তোমার আলোর বেণু’ সিরিয়ালে একসঙ্গে অভিনয় করছেন। সিরিয়ালটি প্রচারিত হচ্ছে স্টার জলসায়। শুটিং ইউনিট থেকে জানা গেছে, শুটিংয়ে তাঁরা আসছেন আলাদাভাবে, আলাদা গাড়িতে।

এদিকে এবার লক্ষ্মীপূজায় নবমিতা চট্টোপাধ্যায়ের বাবার বাড়ি যান ভাস্বর চট্টোপাধ্যায়। এ ব্যাপারে নবমিতা বলেছেন, ‘জামাই হিসেবে তাঁকে মা আমন্ত্রণ জানাননি। আমার বন্ধু হিসেবে নিমন্ত্রণ করেছেন। কিন্তু বিসর্জনে মা তাঁকে আমন্ত্রণ জানাননি।’

দুজন আলাদা হওয়ার পর এরই মধ্যে তাঁদের কিছু মানসিক পরিবর্তনের কথা জানা গেছে। নবমিতা চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, ‘এখন মনে হচ্ছে, আমাদের দুজনের মনে জমে থাকা সব রাগ, ক্ষোভ, অভিমান কোথায় উবে গেছে। তবুও বলছি, আমার আর ভাস্বরের সঙ্গে সংসার করা হবে না।’ আর ভাস্বর চট্টোপাধ্যায় বললেন, ‘কিছু জটিলতা কেটে গেছে। এমনও হতে পারে, আমাদের মধ্যে আবার খুব ভালো বন্ডিং তৈরি হয়ে গেল। তখন হয়তো আবার আমরা সম্পর্কে ফিরে যেতে পারি।’

এর আগে ২০০৭ সালে প্লাবনীর সঙ্গে ভাস্বর চট্টোপাধ্যায়ের প্রথম বিয়ে ভেঙে যায়। তবে সেই বিয়ে নিয়ে এই অভিনেতার রয়েছে তিক্ত অভিজ্ঞতা। প্লাবনীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ওই সময় ভাস্বর চট্টোপাধ্যায়কে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছিল। অবশেষে সব পেছনে ফেলে নতুন করে জীবনের দ্বিতীয় অধ্যায় শুরু করেন ভাস্বর চট্টোপাধ্যায়।