আসছে ১১ নির্মাতার ১ সিনেমা

রাত পোহালেই বড় পর্দায় মুক্তি পাবে ইতি তোমারই ঢাকা। বেরোবে স্বল্পদৈর্ঘ্যে প্রথম দীর্ঘযাত্রার আকাঙ্ক্ষিত সেই পরীক্ষার ফল। এরই মধ্যে ছবিটি বিশ্বের অনেক দেশে ঘুরেছে। দেখা দিয়েছে ২৩টি আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে। রাশিয়ার কাজান আর ভারতের জয়পুর আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব থেকে জিতেছে পুরস্কারও। কুড়িয়েছে প্রশংসাস্তবক। এবার বাংলাদেশের দর্শকদের রায়ের পালা। এ রায় পাওয়া যাবে আগামীকাল শুক্রবার। ছবিটি নিয়ে লিখেছেন জিনাত শারমিন
ইতি তোমারই ঢাকা ছবির ১১ নির্মাতা— (বাঁ থেকে ওপরে) তামিন নূর, সালেহ সোবহান অনীম, কৃষ্ণেন্দু চট্টোপাধ্যায়, রবিউল আলম রবি, মাহমুদুল ইসলাম, রাহাত রহমান, (বাঁ থেকে নিচে) নুহাশ হুমায়ূন, গোলাম কিবরিয়া ফারুকী, তানভীর আহসান, সৈয়দ আহমেদ শাওকী ও মীর মোকাররম হোসেন। ছবি: সংগৃহীত
ইতি তোমারই ঢাকা ছবির ১১ নির্মাতা— (বাঁ থেকে ওপরে) তামিন নূর, সালেহ সোবহান অনীম, কৃষ্ণেন্দু চট্টোপাধ্যায়, রবিউল আলম রবি, মাহমুদুল ইসলাম, রাহাত রহমান, (বাঁ থেকে নিচে) নুহাশ হুমায়ূন, গোলাম কিবরিয়া ফারুকী, তানভীর আহসান, সৈয়দ আহমেদ শাওকী ও মীর মোকাররম হোসেন। ছবি: সংগৃহীত

জড়িয়ে আছে অনেক প্রথম
ইতি তোমারই ঢাকা অনেক প্রথমের সাক্ষী। একসময় ইতিহাসে লেখা হবে, এই ছবির মধ্য দিয়ে ১১ জন নির্মাতা একটি অমনিবাস চলচ্চিত্র নিয়ে এসেছেন বড় পর্দায়। অ্যান্থলজি বা অমনিবাস চলচ্চিত্রের ধারণা বিশ্ব চলচ্চিত্রে সচরাচর ব্যাপার হলেও আমাদের দেশে বিরল। সহজ কথায়, একই বিষয়ের ওপর অনেক ছোট ছোট গল্পের সমন্বয়ে বানানো একটা সিনেমাকে বলা হয় অমনিবাস। এই যেমন, পাশের দেশ ভারতের লাস্ট স্টোরিজ। শহরকেন্দ্রিক অমনিবাস ছবির ধারণাটাও নতুন নয়৷ বার্লিন, আই লাভ ইউ, নিউইয়র্ক, আই লাভ ইউ, বোম্বে টকিজ—আরও কত নাম পাওয়া যাবে, কিন্তু ঢাকা শহরের জন্য ইতি তোমারই ঢাকাই প্রথম কোনো চলচ্চিত্র প্রয়াস।

যাঁরা লিখলেন এই উড়োচিঠি
ইতি তোমারই ঢাকার নির্বাহী প্রযোজক ফরিদুর রেজা সাগর ও ইবনে হাসান খান। ক্রিয়েটিভ প্রযোজক আবু শাহেদ ইমন। ছবিটির দৈর্ঘ্য ২ ঘণ্টা ১৬ মিনিট। ১১টি ছোটগল্প মিলে এই ছবি। প্রতিটি গল্পের দৈর্ঘ্য ১০ থেকে ১২ মিনিট। ছবিগুলো নির্মাণ করেছেন বাংলাদেশের ১১ জন তরুণ নির্মাতা—গোলাম কিবরিয়া ফারুকী, কৃষ্ণেন্দু চট্টোপাধ্যায়, নুহাশ হুমায়ূন, মাহমুদুল ইসলাম, মীর মোকাররম হোসেন, রাহাত রহমান, রবিউল আলম রবি, সালেহ সোবহান অনীম, সৈয়দ আহমেদ শাওকী, তামিন নূর ও তানভীর আহসান। আবু শাহেদ ইমনের মতে, ছবিটি ১১ তরুণের ভাবনায় ঢাকা শহরের প্রতি তাঁদের প্রেমকাব্য অথবা কেবলই উড়োচিঠি, যা লেখা হয়েছে ক্যামেরার চোখে।  

এক ছবিতেই অনেক তারা
এই ছবিতে অভিনয় করেছেন বাংলাদেশের খ্যাতনামা ৫৪ জন অভিনয়শিল্পী। নানা রঙের বৈচিত্র্যময় সব চরিত্র নিয়ে পর্দায় হাজির হবেন তাঁরা। দেখা যাবে ফজলুর রহমান বাবু, ইলোরা গওহর, নুসরাত ইমরোজ তিশা, অর্চিতা স্পর্শিয়া, অ্যালেন শুভ্র, ইরেশ যাকের,  মোস্তফা মনোয়ার, মনোজ প্রামাণিক, ইন্তেখাব দিনার, শতাব্দী ওয়াদুদ, ইয়াশ রোহান, রওনক হাসান, শেহতাজ, গাউসুল আলম শাওন, মোস্তাফিজুর নূর ইমরান, দোয়েল ম্যাশ, লুৎফর রহমান জর্জসহ আরও অনেককে।

দর্শক কেন দেখবে এই ছবি?
এই ছবির অভিনয়শিল্পী নুশরাত ইমরোজ তিশা বলেন, এক ছবিতেই ১১ গল্প। ১১ রকমের অনুভূতি এক টিকিটেই। দর্শকদের অবশ্যই এই ছবি দেখা উচিত। এ রকম একটা নতুন ধরনের যাত্রার সঙ্গে থাকা উচিত।

নির্বাহী প্রযোজক ইবনে হাসান খানের মতে, দর্শক এই প্রথম উদ্যোগকে সাদরে গ্রহণ করবে। কারণ, সব দর্শকের সব প্রিয় তারকা আছেন এই একটি ছবিতে। তাঁর মতে, অভিনয়শিল্পীদের এত বড় কোলাবরেশন আগে বাংলাদেশের অন্য কোনো ছবিতে হয়নি।    ক্রিয়েটিভ প্রযোজক আবু শাহেদ      ইমন বলেন, এক টিকিটে ১১ ছবি দেখার সুযোগ সচরাচর মেলে না। এই সুযোগ দর্শকের হাতছাড়া করা ঠিক হবে না।

পরিচালক কৃষ্ণেন্দু চট্টোপাধ্যায় বললেন, এই ছবিতে বিভিন্ন স্বাদের গল্প আছে, আছে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীদের কথাও। এ ধরনের গল্প এর আগে কেউ বড় পর্দায় দেখানোর কথা ভাবেননি। দর্শকের এসব জীবনঘনিষ্ঠ ভালো লাগবে।

ট্রেলার রিভিউ
শঙ্কার মেঘ পেরিয়ে ইতিমধ্যে ট্রেলার দেখে ফেলেছে আশার সূর্যের উঁকি। ইতি তোমারই ঢাকার ট্রেলারে বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের নতুন দিনের ডাক শুনছেনও কেউ কেউ। ইউটিউবের ভিডিওর নিচে অসংখ্য দর্শক জানিয়েছেন, ট্রেলার তাঁদের মনে ধরেছে।

আবার কয়েকজন ভ্রু কুঁচকে ‘এসব ছবি এই দেশে চলবে না’ বলেও যে রায় দেননি, তা নয়৷ তবে মোটের ওপর ছবি নিয়ে ইতিবাচকতার পারদ অনেক উঁচুতে। বিশেষ করে সংলাপ আর আবহসংগীত তো প্রত্যাশা অনেকের বাড়িয়ে দিয়েছে।

আবু শাহেদ ইমন জানিয়েছেন, এই ছবি নিয়ে আছে আরও সুখবর। কী সেই সুখবর? উত্তরে কেবল রহস্যময় হাসি হেসেছেন। আর বলেছেন, সময়ই দেবে সেই উত্তর।