লাইট-ক্যামেরা-অ্যাকশনে ফিরেছে এফডিসি

ক্যাসিনো ছবির শুটিংয়ের ফাঁকে এফডিসিতে অভিনয়শিল্পী নিরব, বুবলী ও তাসকিন।  ছবি: প্রথম আলো
ক্যাসিনো ছবির শুটিংয়ের ফাঁকে এফডিসিতে অভিনয়শিল্পী নিরব, বুবলী ও তাসকিন। ছবি: প্রথম আলো

এক মাস বেশ নীরব ছিল এফডিসি। কেবল সমিতিগুলো ও ক্যানটিন চত্বরে ছিল মানুষের আনাগোনা। ফের শুটিংয়ে সরব হলো এফডিসি। মধ্যে ছোট পর্দার কয়েকটি শুটিং ছিল। তবে সিনেমার কোনো বড় কাজ হয়নি। প্রায় এক মাস পর এফডিসিতে শোনা গেল, ‘লাইট, ক্যামেরা, অ্যাকশন’।

২৬ নভেম্বর থেকে জসিম ফ্লোরে শুরু হয়েছে সৈকত নাসির পরিচালিত ক্যাসিনো ছবির প্রথম ধাপের শুটিং। আর বুধবার ২৭ নভেম্বর শুরু হয়েছে মোস্তাফিজুর রহমান মানিকের আনন্দ অশ্রু ছবির শেষ ধাপের কাজ। দুটো ছবিই বড় বাজেটের। তাই প্রাণ ফিরে পেয়েছে এফডিসি।

বুধবার দুপুরে ক্যানটিন চত্বরের সামনে দিয়ে কড়ইতলার দিকে যেতেই চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহির সঙ্গে দেখা। মেকআপ রুম থেকে বেরিয়ে শুটিং লোকেশনে যাচ্ছিলেন তিনি। মাথায় চুল বেণি করে বাঁধা। পরনে সাধারণ সালোয়ার-কামিজ। যেতে যেতে কথা হলো তাঁর সঙ্গে। মাহি বললেন, ‘আনন্দ অশ্রু ছবির শেষ ধাপের শুটিং করছি। ছবিতে আমার চরিত্রের নাম শিরিন। গ্রামের একটি সাধারণ মেয়ে। কলেজে ভালো ফল করেছে। এ জন্য কলেজ থেকে তাঁকে পুরস্কার দেবে আজ। এমন একটি দৃশ্য ধারণ হবে তখন।’

তিনি জানান, আর দুদিন কাজ করলেই ছবির সব দৃশ্যের কাজ শেষ হয়ে যাবে। শুধু বাকি থাকবে গান।

জানা গেছে, একই ছবির আরেকটি অংশের শুটিং চলছে প্রশাসনিক ভবনের নিচতলার ল্যাবে। ছবির নায়ক সাইমন সাদিক ও জয় চৌধুরীর অংশের শুটিং চলছে সেখানে। ল্যাবের মধ্যে থার্টি ফাইভ মিলিমিটার ফিল্মের প্রিন্টের পুরোনো একটি মেশিন। মেশিনের চারপাশজুড়ে আলো-আঁধারি। মেশিনে বাঁধা সাইমন। লাঠি হাতে তাঁর সামনে দাঁড়ানো জয়। সাইমনের মাথা ও মুখ থেকে রক্ত ঝরছে। এমন একটি দৃশ্য ধারণ করা হবে। ক্যামেরা ও লাইট প্রস্তুত হচ্ছে। চোখে চোখ পড়তেই ইশারায় বোঝালেন, দৃশ্য শেষ হলে কথা বলবেন তিনি।

আনন্দ অশ্রু ছবির শিরিন চরিত্রে মাহিয়া মাহি
আনন্দ অশ্রু ছবির শিরিন চরিত্রে মাহিয়া মাহি

জসিম ফ্লোরের ভেতরে ঢুকতেই কপালে চোখ। এলাহি কাণ্ড। ফ্লোরজুড়ে ক্যাসিনো সাজানো হয়েছে। অনেকগুলো জুয়ার টেবিল। আছে বার। সেটজুড়ে হইচই। কারও বোঝার উপায় নেই এটি সিনেমার সেট। টেবিলে টেবিলে চলছে খেলা। সেটের ফটকে পাহারা। ঢোকার আগেই তল্লাশি। সেটের মধ্যে কোনো ছবি তোলা যাবে না। মনিটরের সামনে বসা ছবির পরিচালক। বললেন, ‘সেট বা চরিত্রগুলোর লুক প্রকাশ করছি না। আগেই যদি সবাই দেখে ফেলে, তাহলে ছবির চমক থাকবে না। আমাদের দেশের বাইরে এই রীতি চালু আছে।’

পরিচালক জানালেন, মেকআপ রুমে ছবির তিন শিল্পী বুবলী, নিরব ও তাসকিন আছেন। পরবর্তী দৃশ্যের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন তাঁরা। পাওয়া গেল তিনজনকে। প্রস্তুতির ফাঁকে ফাঁকে তাঁদের সঙ্গে আড্ডা চলল। সেখানেও কড়াকড়ি। রুমের মধ্যে একজন ছবি তুলতে চাইলে বিনীতভাবেই না করলেন নিরব। তিনি বলেন, ‘টিজার, ট্রেলার ও গানগুলো প্রকাশের আগে কোনোভাবে এই ছবির চরিত্রের লুক প্রকাশ করা যাবে না।’ পাশে বসা তাসকিনও বললেন, ‘না না, আমার লুকও প্রকাশ করা যাবে না। পরিচালক বলেছেন আমার একক ছবি দিয়ে লুক প্রকাশ করবেন।’ বুবলী বলেন, ‘চলেন লুক চেঞ্জ করে বাইরে একটু আড্ডা দিই সবাই মিলে। ছবিও তুলি।’