গণধর্ষণের অপরাধে কে-পপ তারকার জেল

কে-পপ তারকা জুং জুন-ইয়ং। ছবি: এপি
কে-পপ তারকা জুং জুন-ইয়ং। ছবি: এপি

দক্ষিণ কোরিয়ার পপ ঘরানার মিউজিক কে-পপ সময়ের সঙ্গে সারা বিশ্বে দারুণ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। সেই সঙ্গে জনপ্রিয় হয়েছেন কে-পপ তারকা জুং জুন-ইয়ং। গণধর্ষণের অপরাধে এই তারকাকে ছয় বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন সিউল কেন্দ্রীয় জেলা আদালত।

এ অপরাধের আরেক সঙ্গী, সুরকার চুই জং-হুনকে দেওয়া হয়েছে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড। তা ছাড়া উভয়কে যৌন সহিংসতা চিকিৎসার জন্য ৮০ ঘণ্টার কাউন্সেলিংয়ে অংশ নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তা ছাড়া শিশুদের সঙ্গে কাজের বিষয়েও নিষেধাজ্ঞা এসেছে। বিবিসি, সিএনএন, সিবিএসসহ সমস্ত আন্তর্জাতিক ও দেশীয় গণমাধ্যমে ‘হাই প্রোফাইল’ এই জঘন্য অপরাধের ঘটনা ফলাও করে প্রচারিত হয়েছে।

এফটি আইল্যান্ড ব্যান্ডের সাবেক এই সদস্য এর আগেও ২০১৬ সালে গণধর্ষণের দায়ে অভিযুক্ত হয়েছিলেন। দুটি ভিন্ন অনুষ্ঠানে ভিন্ন দুই নারীকে ধর্ষণের প্রমাণ মিলেছে। শুধু তা-ই নয়, মাতাল ও অচেতন ওই দুই নারীকে ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করেছেন তিনি। আর চলতি বছরের মার্চে সেই ভিডিও শেয়ার করেছেন ব্যক্তিগত একটি অনলাইন গ্রুপে। তারপর সেখান থেকে ওই ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে পুলিশ গ্রেপ্তার করে তরুণদের ‘আইকন’ এই সংগীতশিল্পী ও গীতিকারকে। সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে নারীরা পোস্টার নিয়ে রাস্তায় বের হয়েছে। যেখানে লেখা, ‘আমার জীবন তোমার পর্নো নয়।’

৩০ বছর বয়সী জুং জুন-ইয়ংয়ের এই ঘটনা বিনা মেঘে বজ্রপাতের মতো এসেছে কে-পপভক্তদের কাছে। জুং জুন-ইয়ং এই ভিডিও শেয়ার করেন বিগ ব্যাং ব্যান্ডের সদস্য সিউংগ্রির কাছে। এই সিউংগ্রির বিরুদ্ধে আবার মাদক ও যৌনকর্মী পাচারের অবৈধ ব্যবসার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ রয়েছে।

গতকাল শুক্রবার যখন আদালতে এই রায় দেওয়া হয়, তখন উভয় তারকা কান্নায় ভেঙে পড়েন। মার্চে এই ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পরই সংগীত থেকে অবসর নেন জুং জুন-ইয়ং। রায় ঘোষণার আগেই জুং বলেছিলেন, ‘আমি যে অপরাধ করেছি, তার কোনো ক্ষমা নেই। আমি ওই নারীদের কাছে ক্ষমা চাইছি। আমার বাকি জীবন কেবল অনুতাপ করেই কাটবে।’

দক্ষিণ কোরিয়ায় লুকিয়ে ভিডিও ধারণ করার অপরাধ মহামারি আকার ধারণ করেছে। কেবল ২০১৮ সালেই দক্ষিণ কোরিয়ার সাড়ে পাঁচ হাজার মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয় এই অপরাধে। আর তাঁদের শতকরা ৯৭ ভাগই পুরুষ।