শ্রীলঙ্কার টিভিতে বাংলাদেশের 'মাটির প্রজার দেশে'

বাংলা, ইংরেজি ও সিংহলি ভাষায় নির্মিত মাটির প্রজার দেশের পোস্টার। ছবি: ফেসবুক
বাংলা, ইংরেজি ও সিংহলি ভাষায় নির্মিত মাটির প্রজার দেশের পোস্টার। ছবি: ফেসবুক

মাটির প্রজার দেশে। ২০১৮ সালের ২৩ মার্চ মুক্তি পাওয়া বিজন আহমেদ পরিচালিত এই ছবি নানা দিক থেকে বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের দুঃসময়ে খানিক স্বস্তি দিয়েছিল। ২০টির বেশি আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করা ছবিটি এবার দেখানো হবে শ্রীলঙ্কান টেলভিশনে। প্রথমবারের মতো ১৫ ডিসেম্বর রাত ১০টায় বাংলাদেশের কোনো ছবি দেখানো হবে শ্রীলঙ্কার টেলিভিশন চ্যানেলে। মাটির প্রজার দেশের প্রযোজক আরিফুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

ছবিটি শ্রীলঙ্কার অফিশিয়াল ভাষা সিংহলিতে ডাবিং করে দেখানো হবে। গুপী বাঘা প্রোডাকশনের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজ থেকে লেখা হয়েছেন, ‘অসম্ভব গর্বের সাথে জানাচ্ছি শ্রীলঙ্কার ন্যাশনাল টেলিভিশনে প্রথমবারের মতো কোনো ভিন্ন ভাষার ছবি হিসেবে প্রিমিয়ার হবে মাটির প্রজার দেশে। ১৫ ডিসেম্বর রাত ১০টার প্রাইম টাইম স্লটে। এই সময়টায় ৩০ লাখের বেশি দর্শক দেখবেন বাংলা ভাষার এ ছবিটি। এটা শ্রীলঙ্কা রাষ্ট্রের বাংলাদেশের স্বাধীনতা এবং ভাষার প্রতি একটি উপহার। ১৬ ডিসেম্বরের ঠিক আগের দিন! বাংলাদেশ হাইকমিশন অব শ্রীলঙ্কা পাশে না থাকলে এটা সম্ভব হতো না। শিল্পের জন্য, সিনেমার জন্য নিবেদিতপ্রাণ একজন রিয়াজ হামিদুল্লাহ না থাকলে এটা সম্ভব হতো না।’

এর আগে শ্রীলঙ্কায় বাংলাদেশের হাইকমিশনার আয়োজিত চলচ্চিত্র উৎসবে ছবিটি দেখানো হয়। সেখানে শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রীয় পক্ষের কর্তাব্যক্তিরা ছবিটি দেখেন। ছবিটি দেখে তাঁরা মনে করেন, শ্রীলঙ্কার আর্থসামাজিক অবস্থার সঙ্গে ছবিটি খুবই প্রাসঙ্গিক ও গুরুত্বপূর্ণ। তাই বাংলাদেশের মানুষের স্বাধীনতাসংগ্রাম ও বাংলা ভাষার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে, সর্বোপরি বাংলাদেশের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক সম্পর্কের অংশ হিসেবে বাংলাদেশের বিজয় দিবসের আগের দিন রাতে তাঁরা ছবিটি দেখানোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।

মাটির প্রজার দেশে ছবির একটি দৃশ্য। ছবি: ফেসবুক
মাটির প্রজার দেশে ছবির একটি দৃশ্য। ছবি: ফেসবুক

এরপর তাঁরা শ্রীলঙ্কায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার রিয়াজ হামিদুল্লাহ ও মাটির প্রজার দেশে ছবির প্রযোজক আরিফুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করে সবকিছু চূড়ান্ত করেন। রাষ্ট্রীয় ও আমলাতান্ত্রিক সব আনুষ্ঠানিকতা শেষ। এখন শুধু ছবিটি প্রচারের অপেক্ষা। বাংলাদেশি চলচ্চিত্র ও চলচ্চিত্রের জন্য এটি অত্যন্ত আনন্দের ঘটনা।

৩০ লাখের বেশি শ্রীলঙ্কান দর্শক দেখবেন বাংলা ভাষার এই ছবিটি। ছবি: ফেসবুক
৩০ লাখের বেশি শ্রীলঙ্কান দর্শক দেখবেন বাংলা ভাষার এই ছবিটি। ছবি: ফেসবুক

মাটির প্রজার দেশে শুরু হয় আরও দুটি বিখ্যাত ছবির শৈশবের নস্টালজিয়া দিয়ে। পথের পাঁচালীর অপু-দুর্গাকে মনে পড়ে যায়, মনে পড়ে মাটির ময়নার আনু-আসমাকে। তাদের মতোই যেন জামাল-লক্ষ্মী। তবে এরা ভাইবোন নয়, দুই বন্ধু।

২০১৬ সালে মাটির প্রজার দেশে ছবিটি শিকাগো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে ভারতের মাসান ও আলীগড়-এর মতো বহুল প্রশংসিত ছবিকে টপকে সেরা ছবির পুরস্কার জিতেছিল।

ছবিতে অভিনয় করেছেন জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়, রোকেয়া প্রাচী, কচি খন্দকার, আবদুল্লাহ রানা, মনির আহমেদ, রামিজ রাজু, শিউলি আখতার। জামাল চরিত্রে মাহমুদুর অনিন্দ্য ও ফাতেমা চরিত্রে চিন্ময়ী গুপ্ত ভালো অভিনয় করেছেন।

মাটির প্রজার দেশে ছবির একটি দৃশ্য।  ছবি: ফেসবুক
মাটির প্রজার দেশে ছবির একটি দৃশ্য। ছবি: ফেসবুক

সম্প্রতি এই ছবিতে অভিনয় করে মাহমুদুর অনিন্দ্য শিশু শিল্পী (বিশেষ) শাখায় জিতেছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার।