উপহাস-কটূক্তির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ

অমিতাভ রেজা চৌধুরী।  ফেসবুক থেকে নেওয়া
অমিতাভ রেজা চৌধুরী। ফেসবুক থেকে নেওয়া

শিশুদের মধ্যে উপহাস-কটূক্তি (বুলি) চর্চার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন চলচ্চিত্র পরিচালক অমিতাভ রেজা চৌধুরী। সম্প্রতি রাজধানীসহ দেশের স্কুলগুলোতে সহপাঠীদের সঙ্গে উপহাস-কটূক্তির চর্চা আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। এতে শিশুদের সৃজনশীল বিকাশ ব্যাহত হচ্ছে। এ নিয়ে অভিভাবক, শিক্ষক ও স্কুল কর্তৃপক্ষকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন এই পরিচালক।

‘বুলির কারণে হাজারো মেধা ঝরে পড়ছে অকালেই। #এন্ডবুলিংনাউ’ লেখা একটি প্ল্যাকার্ড হাতে গতকাল ফেসবুকে ছবি পোস্ট করেছেন অমিতাভ রেজা চৌধুরী। সঙ্গে লিখেছেন, ‘আমার স্কুলের বন্ধুরা সারা জীবন আমাকে ভালোবাসাই দিয়ে গেছে, কিন্তু সবার সেই সৌভাগ্য হয় না।’ হঠাৎ কেন এ প্রসঙ্গে সোচ্চার হলেন তিনি। জানতে চাইলে অমিতাভ রেজা চৌধুরী বলেন, ‘সালাম আদিল নামের এক মায়ের সন্তানের সঙ্গে ঘটে যাওয়া বুলিংয়ের ঘটনা শুনে ধাক্কা খেয়েছি। বুলিংয়ের এসব ঘটনা সবচেয়ে বেশি দেখা যাচ্ছে ইংরেজি মাধ্যম স্কুলগুলোতে, যদিও সেটা আমার শোনা। স্কুলগুলোতে এ ধরনের চর্চা ও এসবের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ার কারণে বুলিং বেড়েছে। তারা কখনো কখনো সহপাঠীদের ‘ক্ষ্যাত’, ‘কামলা’ শব্দগুলো দিয়ে উপহাস করে। এতে বুলিংয়ের শিকার শিশুদের ভেতরে হীনম্মন্যতা তৈরি হয়।’

সম্প্রতি সালমা আদিল নামের এক অভিভাবক ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে তাঁর শিশুর বুলিংয়ের শিকার হওয়ার অভিযোগ আনেন। একটি টেলিভিশন চ্যানেলে এ নিয়ে আলোচনায় সরাসরি যুক্ত হন তিনি। তিনি জানান, শুরুতে স্কুলের ব্যাপারে ভীষণ উৎসাহিত থাকলেও তাঁর শিশু হঠাৎ করে স্কুলে যাওয়া ও বিশেষ কিছু ক্লাসে উপস্থিত হওয়ার ব্যাপারে নিরুৎসাহিত হয়ে পড়ে। অভিভাবককে সে জানায়, শারীরিক শিক্ষা ও সাঁতারের ক্লাসগুলোতে সহপাঠীরা তাঁর গায়ের রং, ওজন, উচ্চতা নিয়ে কটূক্তি ও উপহাস করে। এ বিষয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করলেও আমলে নেননি তাঁরা। উল্টো এই পরিবেশেই তাকে খাপ খাইয়ে নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।

অমিতাভ রেজা চৌধুরী মনে করেন পারিবারিক চর্চা ও শিক্ষাপদ্ধতির কারণেই শিশুরা সহপাঠীকে বুলিং করে। তিনি বলেন, ‘তাদের শেখানো উচিত যে বিলাস-বৈভবের বাইরেও একটা জীবন আছে। অভিভাবকদের এ বিষয়ে সচেতন হতে হবে। শিশু বুলিংয়ের শিকার হচ্ছে বা কাউকে বুলিং করছে কি না, সেটা দেখতে হবে। স্কুলগুলোর উচিত বুলিংয়ের অভিযোগ এলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া।’