বদলে গেছেন কেটি পেরি
সময়ের সঙ্গে বদলে গেছেন মার্কিন পপ তারকা কেটি পেরি। ২০১১ সালের কথা। সবকিছু তৈরি। কনসার্টে গাইবেন কেটি। মঞ্চে ওঠার আগে পেলেন একটি খুদে বার্তা। পাঠিয়েছেন স্বামী রাসেল ব্র্যান্ড। সেই খুদে বার্তা পড়ে জানতে পারলেন, রাসেল ব্র্যান্ড আর তাঁর সঙ্গে সংসার করতে চান না। তারপর চোখ মুছলেন, মঞ্চে উঠলেন, গাইলেন, কাঁদলেন। সেই কান্নাকে উপস্থিত দর্শক-শ্রোতারা ভেবেছিল পারফরম্যান্সের অংশ। কিন্তু শিল্পীদের কোনটা জীবন আর কোনটা শিল্প, তা আলাদা করে ধরা যায়?
তারপর কেটি পেরি প্রেম করেছেন আরেক সংগীতশিল্পী জন মেয়ারের সঙ্গে। বাগদানও হলো। তারপর সেই বাগদান ভেঙে যায়। আবার হৃদয় ভাঙে কেটির। তারপর সেই ভাঙা হৃদয় জোড়া লাগাতে কেটির জীবনের রঙ্গমঞ্চে আসেন রবার্ট প্যাটিনসন। একদিন অতীত হয়ে যান ‘টোয়ালাইট’ ছবির এই তারকা। ২০১৯ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি কেটিকে ভ্যালেন্টাইনস ডের পার্টিতে হীরার আংটি পরিয়ে দেন ‘ট্রয়’ ছবির তারকা অরল্যান্ডো ব্লুম। এভাবে নিজেদের তিন বছরের সম্পর্ককে পোক্ত করে আরেকটু এগিয়ে নেন তাঁরা।
এবার ‘ভোগ’ ম্যাগাজিনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কেটি পেরি বললেন নতুন বছর নিয়ে তাঁর পরিকল্পনার কথা। জানালেন, নানা স্বপ্ন দিয়ে ভর্তি তাঁর ‘বাকেট লিস্ট’। মনোবিজ্ঞান আর দর্শন নিয়ে পড়তে চান। আর মানুষকে ভালো কিছু করতে অনুপ্রাণিত করতে চান।
৩৫ বছর বয়সী এই তারকা বলেন, ‘১২ বছরেরও বেশি সময় ধরে মানুষ আমাকে চোখে চোখে রেখেছে। এই এক যুগে আমি অনেক ভুল করেছি। দিনশেষে আমিও একজন মানুষ। আর জীবনযুদ্ধে হেরে যেতে চাই না। জীবনের ইতিহাসে পড়ে যাওয়ায় গল্পগুলো থাকে না, থাকে উঠে দাঁড়ানোর গল্প।’
কেটি পেরি তাঁর হতাশার সময়গুলোর কথা বলতে গিয়ে জানান, তখন তাঁকে মনোরোগ বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হতে হয়েছে। তখন সারা দিন ঘরের দরজা বন্ধ করে বিছানায় শুয়ে থাকতেন। বললেন, ‘আমি থেরাপি নিয়েছি। লড়াই করেছি। আর সত্যিকারের জীবনসঙ্গীকে খুঁজে পেয়েছি। অরল্যান্ডো (অরল্যান্ডো ব্লুম) দুর্দান্ত একজন মানুষ। ও আমাকে ধরে রাখে, যাতে আমি পড়ে না যাই। ও হয়তো শিল্পী কেটি পেরির সেরা ভক্ত নয়, কিন্তু ও ক্যাথরিন হাডসনের (কেটি পেরির আসল নাম) সবচেয়ে বড় ভক্ত।’
কবে বিয়ে করছেন? এ বিষয়ে কিচ্ছু বলেননি কেটি পেরি। তবে জানিয়েছেন তাঁর সর্বরোগের মহৌষধের নাম। বিষণ্নতা থেকে মুক্তি পেতে অনেক ধরনের মেডিটেশন করেছেন। তাঁর মতে, সেরা হলো ‘ট্রান্স সেন ডেন্টাল মেডিটেশন’। এটিই কেটিকে দিয়েছে নতুন জীবন। আরও জানালেন, বিশ্বের সবচেয়ে বড় মিথ্যা হলো দুঃখ ছাড়া ভালো শিল্প হয় না। শিল্পীদের তাই দুঃখ থাকতে হয়, বিষণ্নতায় ভুগতে হয়।
কেটি জানিয়েছেন, যখন তিনি ভয়াবহ মানসিক সংকটের ভেতর দিয়ে যাচ্ছিলেন, তখন তিনি শিল্পচর্চায় মনোযোগ দিতে পারেননি। এখন সুখে আছেন, মনের সুখে গান লিখছেন, গাইছেন।
‘ফোর্বস’ ম্যাগাজিনের তথ্য অনুসারে, ২০১১ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত টানা আট বছর কেটি পেরি বিশ্বের সংগীতজগতের সবচেয়ে বেশি অর্থ উপার্জনকারী তারকা।