এই দিনে মায়ের কথা বেশি মনে পড়ে: চম্পা

নাতিদের নিয়ে জন্মদিনের কেক কেটেছেন চম্পা।  ছবি: সংগৃহীত
নাতিদের নিয়ে জন্মদিনের কেক কেটেছেন চম্পা। ছবি: সংগৃহীত
>

গতকাল রোববার ছিল চিত্রনায়িকা চম্পার জন্মদিন। জন্মদিনটা চম্পা কী করে কাটান, সেদিকে লক্ষ রেখেছিলাম আমরা। জন্মদিন নিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা হলো, কথা হলো আরও অনেক বিষয়ে। ছোট ও বড় পর্দা মিলিয়ে ৩৯ বছর ধরে অভিনয়ের সঙ্গে যুক্ত আছেন তিনি। দীর্ঘ অভিনয়জীবনে অসংখ্য দর্শকপ্রিয় সিনেমা উপহার দিয়েছেন। সম্প্রতি এই অভিনয়শিল্পী শুটিং শেষ করছেন ‘বিশ্বসুন্দরী’ সিনেমার। এসব নিয়ে গতকাল সন্ধ্যায় কথা বললেন তিনি

জন্মদিন কেমন কাটল?
এত ফোন, এসএমএস, ফেসবুকে শুভেচ্ছা বার্তা—আমি মুগ্ধ। অনেকগুলো কেক কেটেছি। বিকেলে বের হয়েছি সন্তানদের নিয়ে, নাতি-নাতনিদের সঙ্গেও কেক কেটেছি। আর রাতে ববিতা আপা, সুচন্দা আপাসহ পরিবারের রেস্টুরেন্টে সময় কাটানোর পরিকল্পনা।

ছোটবেলার জন্মদিনের কথা মনে পড়ে কি?
ছোটবেলায় তো আনন্দ ছিল অন্য রকম। উপহারের জন্য উদ্গ্রীব থাকতাম। তখন জামাকাপড় পেতাম সবচেয়ে বেশি। সারা দিন মনমতো নতুন জামা পরতাম, আর বারবার বদল করতাম। এটা আলাদা একটা আনন্দের।

জন্মদিন এলে কী মনে হয়?
জীবন থেকে একটা বছর করে কমে যাচ্ছে। মানুষের ভালোবাসায় আনন্দের অনুভূতি হয়। জীবন থেকে বয়স কমে যাওয়ার বিষয়টি তখন আর মনে থাকে না, ভালোই লাগে। আফসোস, ছোটবেলা থেকে মাকে পাইনি। ৮ বছর বয়স থেকে মা নেই। বড় বোনেরা আমাকে লালন-পালন করেছেন। মাতৃস্নেহে বড় করেছেন। আমি মনে করি, একটা মেয়ের বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মায়ের প্রয়োজন বাড়ে। যদিও মায়ের অভাব পূরণ করেছে আমার বোনেরা। তবে এই দিনে মায়ের কথা বেশি মনে পড়ে।

ফেসবুকেও দেখলাম, অনেকে শুভেচ্ছাবার্তা জানাচ্ছে...
অনেক অনেক। পড়ছি আর ভালোবাসায় ভাসছি। একজনের শুভেচ্ছা বার্তা তো আমাকে নস্টালজিক করেছে, তিনি আমার অভিনীত বিশ্বসুন্দরী ছবির চিত্রনাট্যকার রুম্মান রশীদ খান। বিশেষ করে ফেসবুকে তাঁর পোস্ট করা ছবিগুলো আমাকে পুরোনো দিনের অনেক স্মৃতি কিছু মনে করিয়ে দিয়েছে।

‘বিশ্বসুন্দরী’ ছবিতে কাজের অভিজ্ঞতা কেমন?
এই ছবিতে আমার চরিত্রটি ভীষণ সুন্দর। গল্পটাও অন্য রকম। ছবির পরিচালক চয়নিকা চৌধুরীর সঙ্গে আমার প্রথম কাজ। খুব যত্ন নিয়ে কাজটি করেছেন। গতানুগতিকতার বাইরে গল্প বলার চেষ্টা করেছেন। এর বাইরে শান নামে আরেকটি ছবিতে অভিনয় করছি।

‘বিশ্বসুন্দরী’ ছবির গল্পের শক্তিটা কী?
নাম শুনে ছবিটি একরকম মনে হতে পারে। তবে গল্পটা পুরোই উল্টো। সব ছবিতে নায়ক-নায়িকার ব্যাপারটাই আমাদের চোখে পড়ে, এখানে তেমন ব্যাপার নেই। ছেলের সঙ্গে মায়ের সুন্দর সম্পর্কের গল্প দর্শকেরা দেখতে পাবেন।

এখন ছবি বাছাইয়ের ক্ষেত্রে কোন বিষয়কে গুরুত্ব দেন?
সিনেমায় কাজের ক্ষেত্রে পরিবেশটা কেমন হবে, তা বোঝার চেষ্টা করি। এরপর আমার চরিত্র ও ইউনিট দেখি।

দেশের চলচ্চিত্র এখন কেমন আছে?
সবাই দেখছি এগিয়ে যাওয়ার কথা বলছে। কিন্তু এগিয়ে যাওয়ার জন্য কীভাবে কাজ করা উচিত, তা করছে না। এতে অনেক দেরি হয়ে যাচ্ছে। পাশের দেশ, কলকাতার সিনেমার অবস্থা দেখছিলাম তালা ঝোলার মতো অবস্থা, এখন তালাগুলো খুলে তারা আলোয় ঝলমল করছে। অন্যদিকে আমাদের আলো-ঝলমল ইন্ডাস্ট্রি হাতে গোনা কয়েকজন ছাড়া তালা ঝোলার মতো অবস্থায় এসে পৌঁছেছে। এফডিসি কেমন যেন নিষ্প্রাণ। দু-চারটা ভালো ছবি হচ্ছে, আমাদের ভালো ছবির সংখ্যা আরও বাড়াতে হবে। সবাইকে একত্র হতে হবে। একা একা একটা ইন্ডাস্ট্রি এগোতে পারে না। দলাদলি বন্ধ করতে হবে। কাজের মানুষদের কাজ করতে দিতে হবে।

এ সময়ের নায়ক-নায়িকাদের অনেকে আপনার সঙ্গে কাজ করছেন। কয়েকজনের নাম শুনতে চাই, যাঁরা আপনার দৃষ্টিতে সম্ভাবনাময়।
পূজা চেরিকে অনেক বেশি সম্ভাবনাময় মনে হয়। পরীমনি যদি যত্নশীল হয়, তাহলে ঠিক আছে, তা না হলে নয়। নুসরাত ফারিয়ার আরও বেশি কাজ করতে হবে। নায়কদের মধ্যে আরিফিন শুভ ও সিয়ামকে ভালো লাগে।