ঝুমুর ঝুমুর অভিনয়

>কীভাবে বুঝবেন আপনি জনপ্রিয়? যখন দেখবেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আপনার অভিনীত নাটকের ছোট ছোট অংশ নিয়ে হবে মিম, যখন সিনেমা–নাটকের পেজ আর গ্রুপগুলোয় হবে আলোচনা, তখনই বুঝবেন সাড়া ফেলছে আপনার কাজ। এখনকার জনপ্রিয়তা আর অভিনয়ের ‘ফিডব্যাক’ পাওয়ার পথ এটাই। আমরা এটা বুঝেছি ‘ফ্যামিলি ক্রাইসিস’ ধারাবাহিকের ঝুমুর চরিত্রটি দিয়ে। এই নাটকে ‘ঝুমুর’ চরিত্রে অভিনয় তরুণ অভিনেত্রী সারিকা সাবা বেশ আলোচিত এখন। সাবার কাছেই জানলাম তাঁর এই অভিনেত্রী হয়ে ওঠার গল্প। লিখেছেন শফিক আল মামুন
সারিকা সাবা। ছবি: খালেদ সরকার
সারিকা সাবা। ছবি: খালেদ সরকার

মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাজ পরিচালিত নাটক ফ্যামিলি ক্রাইসিস–এর ৮২টি পর্ব এরই মধ্যে এনটিভিতে প্রচারিত হয়েছে। সব পর্ব মিলে ইউটিউবে এই নাটকের কয়েক কোটি ভিউ। নাটকটির ছোট ছোট অংশ ফেসবুকেও ছাড়িয়ে গেছে। আর এর মধ্য দিয়ে ছড়িয়ে গেছে সারিকা সাবাও। এই ধারাবাহিকের বাইরে সাবার মিশন বরিশাল, লাভলি ওয়াইফ কিংবা ম্যাজিক অব লাভ নাটকগুলোও তাঁকে অনেকের কাছে পরিচিত করে তুলেছে। তাই এই জনপ্রিয়তার স্বাদ পেয়ে অন্য সব ছেড়ে অভিনয়টাতেই এখন নিজের মূল লক্ষ্য হিসেবে ধরে নিয়েছেন
সারিকা সাবা।

ঝুমুর এবং ফ্যামিলি ক্রাইসিস
ফ্যামিলি ক্রাইসিস নাটককে ঝুমুর চরিত্রটি দিয়ে আলোচনায় এসেছেন সারিকা সাবা। এই আলোচনা নিয়ে সারিকা বলেন, ‘এত সাড়া পাব আগে বুঝিনি। ঢাকার বাইরে গিয়ে আমি বেশি টের পেয়েছি। কিছুদিন আগে মিশন বরিশাল নাটকে অভিনয়ের জন্য ভোলাতে গিয়েছিলাম। সেখানে ঝুমুর চরিত্রটি নিয়ে দর্শকের উচ্ছ্বাস দেখে মুগ্ধ হয়ে গেছি। এর আগে আমার দেশের বাড়ি রংপুরে গিয়েছিলাম। রাস্তায় আমাকে দেখে অনেকই ঝুমুর ঝুমুর বলে চিত্কার করছিল! কী যে ভালো লাগছিল তখন!’

ফিরে দেখা
২০১৮ সালের জানুয়ারি মাসের কথা। শুরুটা হয়েছিল গুণী নির্মাতার হাত দিয়ে। এক সপ্তাহের মাথায় আদনান আল রাজীব ও রেদওয়ান রনির মতো নির্মাতার সঙ্গে দুটি বিজ্ঞাপনচিত্রের মডেল হন সারিকা। এর পরপরই সারিকার গতিপথ পাল্টে যেতে থাকে। কয়েক দিন পর পরিচালক 

মুহাম্মদ মোস্তাফা কামাল রাজের ফ্রেন্ডস নামে এক ঘণ্টার একটি নাটকে কাজের সুযোগ হয়। সারিকা বলেন, ‘ওই সময় শখ করেই বিজ্ঞাপনচিত্রে ও নাটকে অভিনয় শুরু করি। প্রথম নাটক ফ্রেন্ডস পর্দায় দেখতে গিয়ে খেয়াল করলাম আমার অভিনয় হয়নি। কেমন মেকি লাগছিল। ভাবলাম পরে কাজ করার সুযোগ পেলে আরও ভালো করতে হবে। আর সেই তাড়না থেকেই একের পর এক কাজের সঙ্গে যুক্ত হতে থাকি।’

ওই বছরই কাজল আরেফিনের মেয়ে নাটকে অভিনয়ের সুযোগ হয়। ডিসেম্বরে মাসে একই পরিচালকের জাস্ট চিল নাটকে অভিনয় করেন সারিকা। এরপর আর ফিরে তাকাতে হয়নি। একের পর এক কাজ করতে থাকনে। এরই মধ্যে প্রায় ২০টির মতো নাটকে অভিনয় করে ফেলেছেন। 

বন্ধু ও গুরু
মোশাররফ করিম, অপূর্ব, নিশো, ইরফান সাজ্জাদ, মিশু সাব্বির, পলাশ, শামীম হাসান সরকারদের মতো অভিনেতাদের সঙ্গে কাজের সুযোগ হয়েছে সারিকার। সহশিল্পীদের কেউ কেউ তাঁর বন্ধুর মতো, আবার কেউ কেউ অভিনয়ের গুরু। তাঁদের সঙ্গে অভিনয়ের বোঝাপড়াটা কেমন লাগে?—জানতে চাইলে সারিকা বলেন, ‘অভিনয়ের শুরুর দিকে পলাশ, শামীম হাসানদের পেয়েছি। তারা ভালো বন্ধু। দারুণ সহযোগিতাপরায়ণ মানুষ। আবার মোশাররফ করিম, আফরান নিশোরা আমার অভিনয় গুরু। কাজের সময় নিজে সংলাপ দিয়ে অভিনয়ের প্যাটার্ন বুঝিয়ে দেন তাঁরা।’

প্রকৌশলী নয়, অভিনেত্রী
মা–বাবার একমাত্র সন্তান সারিকা। হতে চেয়েছিলেন প্রকৌশলী। নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটারবিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগ থেকে স্নাতক করেছেন। কিন্তু এখন পুরোদস্তুর অভিনেত্রীই হতে চান তিনি। সারিকা বলেন, ‘আমার পরিবারের বেশির ভাগ সদস্যই প্রকৌশলী। এ কারণেই প্রকৌশলী হওয়ার তাগিদ ছিল পরিবার থেকে। কিন্তু অভিনয়টা আমার ভালো লেগে গেছে। এখন এখানেই থাকতে চাই।’