ঋত্বিক ঘটকের বোন প্রতীতি দত্ত মারা গেছেন

প্রতীতি দেবী। ছবি: সংগৃহীত
প্রতীতি দেবী। ছবি: সংগৃহীত

চলচ্চিত্রকার ঋত্বিক ঘটকের যমজ বোন প্রতীতি দেবী মারা গেছেন। রোববার রাত ৮টা ৪০ মিনিটে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৫ বছর। তিনি শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের পুত্রবধূ এবং সংসদ সদস্য আরমা দত্তের মা। মহাশ্বেতা দেবীর পিসি। তাঁর লেখা বইয়ের মধ্যে ‌‘ঋত্বিককে শেষ ভালোবাসা’ বেশ পরিচিত। 

প্রতীতি দেবীর মৃত্যুর খবরটি তাঁর মেয়ে আরমা দত্ত নিশ্চিত করেছেন। বার্ধক্যজনিত কারণে অসুস্থ হয়ে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন প্রতীতি দেবী।

প্রতীতি দেবী ১৯২৫ সালের ৪ নভেম্বর জন্মেছেন পুরোনো ঢাকার হৃষীকেশ দাস রোডের এক বাড়িতে। ঋত্বিক ঘটক আর প্রতীতি দেবী ঘটক জন্মেছেন পাঁচ মিনিটের অনুজ সহোদরা হিসেবে। সে সময় যমজের ডাকনাম রাখা হয় ভবা ও ভবি। ভবা হচ্ছেন ঋত্বিক, ভবি হচ্ছেন প্রতীতি দেবী। তাঁদের বাবা সুরেশ ঘটক ছিলেন তৎকালীন ঢাকার ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট।

পরিবারের অধিকাংশ ব্যক্তি অনেকের মতোই বাংলাদেশ ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গে। কিন্তু পরে নিজের দেশে ফিরে আসেন প্রতীতি। তাঁর বিয়ে হয় ভাষা সংগ্রামী ও পূর্ব পাকিস্তানের মন্ত্রী ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের পুত্র সঞ্জীব দত্তের সঙ্গে। পুত্র রাহুল দত্ত ও কন্যা আরমা দত্তকে নিয়ে বাংলাদেশেই তিনি থেকে যান। মাঝে কিছুদিন আগরতলা, কলকাতা ও পন্ডিচেরিতে তিনি অবস্থান করেছিলেন। কিন্তু নিজের মাটিকে ছেড়ে যাননি। তাঁর চোখের সামনে ১৯৭১ সালের ২৯ মার্চ কুমিল্লার নিজ বাসভবন থেকে পাক হানাদার বাহিনী ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত ও তাঁর ছোট ছেলে দিলীপ কুমার দত্তকে ধরে নিয়ে যায়।

বাংলা ভাষা, সংস্কৃতি ও বাংলাদেশ গড়ে ওঠার সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে রয়েছে প্রতীতি দেবীর পিতৃগৃহ ও শ্বশুরবাড়ির পরিবার। তিনি নিজেও নানা সাংস্কৃতিক ও সামাজিক কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। সোমবার সকাল ১০টায় মগবাজার সেঞ্চুরি টাওয়ার প্রাঙ্গণে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে জানিয়েছেন মেয়ে আরমা দত্ত।