ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের গল্প নিয়ে ক্যাম্পাস ক্লাইম্যাক্স

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থীর গল্প নিয়ে নির্মিত হয়েছে পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘ক্যাম্পাস ক্লাইম্যাক্স’। ছবি: সংগৃহীত
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থীর গল্প নিয়ে নির্মিত হয়েছে পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘ক্যাম্পাস ক্লাইম্যাক্স’। ছবি: সংগৃহীত

অনলাইনে উন্মুক্ত হলো ‘ক্যাম্পাস ক্লাইম্যাক্স’। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থীর গল্প নিয়ে নির্মিত হয়েছে পূর্ণদৈর্ঘ্য এই চলচ্চিত্রটি। ক্যাম্পাস ক্লাইম্যাক্সের সঙ্গে জড়িত সব কলাকৌশলী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। অভিনয়ের সঙ্গে যুক্ত সব শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র–শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সদস্য। কেউ মূকাভিনয় শিখতেন, কেউ কবিতা আবৃত্তি দলের সদস্য, গান, চলচ্চিত্র সংসদ, অনেকে ছিলেন বিভিন্ন নাট্যদলের ও নাচের শিক্ষার্থী।

চলচ্চিত্রটির গল্প, চিত্রনাট্য ও পরিচালনা করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী জিৎ দে। চিত্রগ্রহণে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাইকোলজির বিভাগের শিক্ষার্থী আকাশ হক। চলচ্চিত্রটিতে অভিনয় করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থী খাইরুল বাসার, মৌসুমি মৌ, আফসানা আশা, মীর লোকমান, মৃত্যুঞ্জয় মজুমদার, রানা নাসির, অনন্যা পাখি, সাফওয়ান মাহমুদ প্রমুখ।

চলচ্চিত্রটির নির্মাণ শুরু হয় ২০১৬ সালে। আর্থিক সংকটের কারণে দীর্ঘদিন লাগে শুটিং শেষ করতে। নির্মাণের পাশাপাশি ছবিটির অর্থায়ন করেছেন জিৎ নিজেই। নিজের হাতখরচের টাকা বাঁচিয়ে ছবিটির শুটিং চালিয়ে গেছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর থেকে চক্ষুষ দেখা বিভিন্ন ঘটনা নিয়েই ক্যাম্পাস ক্লাইমেক্সের গল্প সাজিয়েছেন এই নির্মাতা।

চলচ্চিত্রটিতে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের নানা বিষয়। পরিচালক জিৎ দে বলেন, ‘স্বপ্ন, হতাশা, প্রেম, বিরহ, আনন্দ, বেদনা, সম্পর্কের টানাপোড়েন, জীবন সংগ্রাম, এই ব্যাপারগুলো বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রছাত্রীদের জীবনে রেললাইনের মতো সমানতালে চলে। তাই এই বিষয়গুলোই প্রাধান্য পেয়েছে চলচ্চিত্রটির গল্পে।’

চলচ্চিত্রটিতে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের নানা বিষয়। ছবি: সংগৃহীত
চলচ্চিত্রটিতে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের নানা বিষয়। ছবি: সংগৃহীত

বাজেট সংকটের কারণে বিভিন্ন উৎসবের জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছে ছবিটির নির্মাণসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের। গল্পের প্রয়োজনেই সিনেমায় দেখা যাবে পয়লা ফাল্গুন, বইমেলা, একুশে ফেব্রুয়ারি, সরস্বতী পূজা। শুটিং হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরির সামনে, মল চত্বর, কলা ভবন, হাকিম চত্বর, টিএসসি, জগন্নাথ হল, বিজয় একাত্তর হলের বিভিন্ন জায়গায়। ক্যামেরাম্যান পালন করেছেন সহকারী পরিচালকের দায়িত্ব। টিমের ৩৮ জন সদস্যের মধ্যে ক্যামেরার পেছনে নির্মাতার দলে ছিলেন ৩ জন, বাকি ৩৫ জন অভিনয় করেছেন। সবাইকে শুটিংয়ে নিয়ে আসার জন্যও নির্মাতাকে কাঠখড় পোহাতে হয়েছে। সবার সঙ্গে শিডিউল মিলিয়ে শুটিং করাও ছিল চ্যালেঞ্জিং। নির্মাতা জিৎ বলেন, সবাই ভিন্ন ভিন্ন বিভাগে পড়াশোনা করে। তাদের পরীক্ষা, পড়ালেখার চাপ, অনেকে বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত থাকা সত্ত্বেও ছবিটির শুটিং শেষ করতে সবার একান্ত সহযোগিতা ছিল। কেউ কোনো পারিশ্রমিক নেয়নি।

ছবিতে কাহিনির পাশাপাশি প্রতিটি দৃশ্যেই আলাদাভাবে একটা বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন নির্মাতা। ছবিতে মোট গান রয়েছে তিনটি। গানগুলো গেয়েছেন রুদ্র, লাবণ্য ও শুভ্র।

‘ওপেন মুভিজ’ নামের ইউটিউব চ্যানেলে মুক্তি পেয়েছে ছবিটি। ‘ক্যাম্পাস ক্লাইম্যাক্স ফুল মুভি’ লিখে সার্চ দিলে পাওয়া যাবে ক্যাম্পাস ক্লাইম্যাক্সের গল্প।