টনি এলেন, ফিরেও গেলেন

বিনোদনজগতের বন্ধুদের সঙ্গে টনি ডায়েস। ছবি: ফেসবুক
বিনোদনজগতের বন্ধুদের সঙ্গে টনি ডায়েস। ছবি: ফেসবুক

পাঁচ বছর পর হঠাৎ করে দেশে এসেছিলেন একসময়ের জনপ্রিয় অভিনেতা, আবৃত্তিকার টনি ডায়েস। থাকেন নিউইয়র্কে। ২৪ জানুয়ারি তিনি কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের একটি ছবি দিয়ে লেখেন, ‘আহা কী শান্তি’। তখনো বিষয়টা পুরোপুরি বুঝতে পারেননি অনেকে। ওই দিন বিকেলে আরেকটি ছবি দিয়ে লিখেছেন, ‘প্রকৃতি’। পরদিন বিকেলে সূর্যাস্তের ছবি দিয়ে একটি গানের প্রথম চরণ লিখেছেন, ‘সূর্যোদয়ে তুমি সূর্যাস্তে তুমি...ও আমার বাংলাদেশ।’ ফেসবুকে ছবি দেখে জানাজানি হয়েছে, টনি ডায়েস এখন বাংলাদেশে।

গতকাল সোমবার দুপুরে যখন টনি ডায়েসের সঙ্গে কথা হয়, তখন তিনি ছিলেন গাজীপুর। বললেন, ‘আমি এসেছি গত বুধবার রাতে। বৃহস্পতিবার একটু ঢাকা শহরটা ঘুরলাম। শুক্রবার চলে গেলাম কক্সবাজার। রোববার ঢাকায় ফিরেছি। সোমবার রাতেই ফিরে যাব।’

টনি ডায়েস জানান, পাঁচ বছর পর তাঁর দেশে আসার একমাত্র কারণ শুধুই স্কুলজীবনের বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটানোর জন্য। আদমজী ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজে তাঁদের শৈশব-তারুণ্য কেটেছে। এমন ৪০ জন বন্ধু এক হয়েছেন সমুদ্রসৈকতে। শুধু তিনি নন, এই ৪০ জনের মধ্যে অনেকেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে থাকেন। সবার আসার একটাই উদ্দেশ্য, কক্সবাজার সৈকতে আবারও শৈশবের আড্ডায় মেতে ওঠা। তিনি বলেন, ‘মোটামুটি সবার পরিবার–পরিজন আছে। তবে পরিবারের সদস্যদের বুঝিয়ে সবাই সিঙ্গেল এসেছি। বন্ধুত্বের এই সংযোগ আমরা ৪০ বছর ধরেই অটুট রেখেছি। এমনিতে ২০২০ সালটা আমাদের সব বন্ধুর জন্য গুরুত্বপূর্ণ। অনেক কিছু করার পরিকল্পনা আছে এ বছর।’

কক্সবাজারে তাজা চিংড়ি খাওয়ার অভিজ্ঞতা হয়েছে। ছবি: ফেসবুক থেকে
কক্সবাজারে তাজা চিংড়ি খাওয়ার অভিজ্ঞতা হয়েছে। ছবি: ফেসবুক থেকে

কাউকে না জানিয়ে আসার একমাত্র কারণ, শুধু বন্ধুত্বের আড্ডায় প্রভাব না ফেলা। এ কয়টা দিন তিনি মিশে গেছেন পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকতে, শৈশবের বন্ধুদের সঙ্গে, জম্পেশ আড্ডায়। বেশ ভালো অভিজ্ঞতা নিয়ে ফিরছেন টনি ডায়েস। প্রায় চার দিনের সফরে কক্সবাজার আর টেকনাফে ঘুরেছেন টনি ও তাঁর বন্ধুরা। টনির ভাষায়, ‘অসাধারণ সময় কেটেছে এখানে। নিজেকে রিফ্রেশ করে নিলাম।’ তবে প্রথম দিন ঢাকায় এসে ঘুরে মন খারাপ হয়ে যাওয়ার কথাও বললেন; ‘রাস্তাগুলোর অবস্থা খুব বাজে, প্রচণ্ড জ্যাম। মানুষকে প্রায় রাস্তাতেই পুরো সময় আটকে থাকতে হয়। সবাই অসহায় হয়ে পড়ছে নিয়ন্ত্রণহীন এই জ্যামের শহরে।’

শুধু শৈশব–কৈশোরের বন্ধুদের টানে এলেও টনি এসেছেন, অথচ বিনোদনজগতের বন্ধুদের সঙ্গে দেখা হবে না, কথা হবে না, তা কী করে হয়! দেখা হয়েছে শহীদুজ্জামান সেলিম,তৌকির আহমেদ, আজিজুল হাকিম, রুনা খান, তারিন, সুইটি থেকে শুরু করে একালের ভাবনার সঙ্গেও। হয়েছে আড্ডাও।

সমুদ্রসৈকতে টনি ডায়েস। ছবি: ফেসবুক থেকে
সমুদ্রসৈকতে টনি ডায়েস। ছবি: ফেসবুক থেকে

১৯৮৯ সালে নাটকের দল নাগরিক নাট্য সম্প্রদায়ে যোগ দেওয়ার মধ্য দিয়ে টনি ডায়েসের অভিনয়জীবন শুরু হয়। ১৯৯৪ সাল থেকে শুরু হয় টিভি নাটকের ক্যারিয়ার। ২০০৮ সাল পর্যন্ত চার শতাধিক নাটক, ধারাবাহিক আর টেলিছবিতে অভিনয় করেছেন টনি। তাঁর অভিনীত চলচ্চিত্রের সংখ্যা দুটি—‘মেঘের কোলে রোদ’ ও ‘পৌষ মাসের পিরিত’।
২০০৮ সালের শেষের দিকে টনি ডায়েস তাঁর স্ত্রী প্রিয়া ডায়েস ও মেয়ে অহনাকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান। বর্তমানে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে নিউইয়র্ক লং আইল্যান্ডের হিকসভিল শহরে বসবাস করছেন তিনি।