বিলির অজানা পাঁচ

বিলি আইলিশের নাম জানতে আর কারও বাকি নেই। ছবি: ইনস্টাগ্রাম
বিলি আইলিশের নাম জানতে আর কারও বাকি নেই। ছবি: ইনস্টাগ্রাম

গত রোববার গ্র্যামির রাতের পর যাঁরা বিশ্বসংগীতের একটু হলেও খোঁজ রাখেন, তাঁদের আর কারও বিলি আইলিশের নাম জানতে বাকি নেই। ২০১৬ সালে তিনি ফিনেস ও’কনেলের লেখা ও প্রযোজনায় ‘ওশান আইস’ নামে নিজের গাওয়া একটি গান শেয়ার করেন সাউন্ডক্লাউডে। প্রথম গানেই বিশ্বসংগীত তারকাদের নজরে আসেন তিনি। তাঁর ‘অফিসিয়ালি’ প্রথম গান ‘ডোন্ট স্মাইল অ্যাট মি’ যুক্তরাট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়ার টপ চার্টে স্থান করে নেয়।

‘যা ইচ্ছা তাই করবে’

২০০১ সালের ১৮ ডিসেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার লস অ্যাঞ্জেলেসে জন্ম নেন বিলি আইলিশ। মা অভিনয়শিল্পী, বাবা চিত্রনাট্যকার এবং দুজনই সংগীতশিল্পী। মা–বাবার কাছ থেকেই সংগীতের হাতেখড়ি। বিলি আইলিশের শরীরে বইছে আইরিশ আর স্কটিশ রক্ত। মাত্র চার বছর বয়স থেকেই গান গাইতেন বিলি। আইলিশের মা–বাবা কিন্তু অন্য সব মা-বাবার মতো নন। শুরুতেই তাঁরা সন্তানদের বলে দিয়েছেন, তাঁদের যা ইচ্ছা তা-ই করবে। পড়তে না চাইলে জোর করে পড়াশোনার দরকার নেই। শুধু এটা খুঁজে বের করতে বলেছেন যে তাঁরা জীবনে কী চান। আর তাঁর ফল তো হাতেনাতে পেলেন!

ভাইয়ের সঙ্গে বিলি। ছবি: ইনস্টাগ্রাম
ভাইয়ের সঙ্গে বিলি। ছবি: ইনস্টাগ্রাম

রেকর্ড আর পুরস্কার যত

অবশেষে ইনস্টাগ্রামে গ্র্যামির ছবি শেয়ার করলেন বিলি আইলিশ। পাঁচটি গ্রামোফোন হাতে এই ছবিটি শেয়ার করে তিনি লিখেছেন, ‘ফাইভ, আর ইউ কিডিং?’ প্রায় এক কোটি ভক্ত পছন্দ করেছে এই ছবি। ইতিমধ্যে দুবার নাম উঠিয়েছেন গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে। সর্বকনিষ্ঠ ও প্রথম নারী হিসেবে সেরা নতুন শিল্পী, সেরা গান, সেরা রেকর্ড আর সেরা অ্যালবাম—গ্র্যামির সেরা চার পুরস্কারের চারটিই পেয়েছেন তিনি। সেই সঙ্গে সেরা পপ ভোকাল অ্যালবামের পুরস্কারও উঠেছে বিলি আইলিশের হাতে। এ ছাড়া রয়েছে দুটি আমেরিকান মিউজিক অ্যাওয়ার্ড ও তিনটি এমটিভি ভিডিও মিউজিক অ্যাওয়ার্ড। ২০২০ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত বিলির তিনটি সিঙ্গেল প্লাটিনাম ও চারটি গোল্ড তকমা পায়।

গ্র্যামিতে সেরা অ্যালবামের পুরস্কার হাতে নিয়ে বলেছেন, ‘আমার মনে হয়, আমি নই, এই পুরস্কারের যোগ্য দাবিদার আরিয়ানা গ্রান্ডে।’ ছবি: ইনস্টাগ্রাম
গ্র্যামিতে সেরা অ্যালবামের পুরস্কার হাতে নিয়ে বলেছেন, ‘আমার মনে হয়, আমি নই, এই পুরস্কারের যোগ্য দাবিদার আরিয়ানা গ্রান্ডে।’ ছবি: ইনস্টাগ্রাম

জীবনের সেরা উপহার ভাই

১৮ বছর বয়সী বিলি আইলিশের সবচেয়ে কাছের বন্ধু তাঁর বড় ভাই ফিনেস ও’কনেল (২২)। এমন একটি ভাই উপহার দেওয়ার জন্য জীবনকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি। এটিই নাকি তাঁর জীবনের সেরা উপহার। ভাইয়ের সঙ্গেই শেয়ার করেছেন গ্র্যামির সেরা পপ গান ‘ব্যাড গাই’য়ের অ্যাওয়ার্ড।

ক্যারিয়ারের প্রথম দিকে অভিনয়ের জন্য একাধিক অডিশন দিয়েছিলেন বিলি। যেটা তাঁর মোটেও পছন্দ নয়। ছবি: ইনস্টাগ্রাম
ক্যারিয়ারের প্রথম দিকে অভিনয়ের জন্য একাধিক অডিশন দিয়েছিলেন বিলি। যেটা তাঁর মোটেও পছন্দ নয়। ছবি: ইনস্টাগ্রাম

বিলির আছে টুরেট আর সিনেসথেশিয়া

বিলি ছোটবেলা থেকে টুরেট সিনড্রোম আর সিনেসথেশিয়াতে আক্রান্ত। দুটিই বিরল স্নায়বিক রোগ। ওই যে বলিউডের ‘হিচকি’ ছবিতে রানী মুখার্জি সেই স্নায়বিক সমস্যায় ভোগেন, ক্লাসে শিক্ষার্থীরা হাসাহাসি করে তাঁকে নিয়ে, সেটিই টুরেট সিনড্রোম। এই রোগ নিয়ে বড় পর্দায় রানী মুখার্জি হয়েছেন সফল শিক্ষক। আর বাস্তব জীবনে বিলি এই মুহূর্তে বিশ্বসংগীতের মঞ্চে সবচেয়ে জনপ্রিয় তারকাদের একজন। অন্যদিকে সিনেসথেশিয়াতে অনেকে শব্দের সঙ্গে রং দেখতে পান। অনেকে আবার সুরের সঙ্গে গন্ধ পান। স্পর্শের সঙ্গে স্বাদও পান অনেকে। যেমন ধরুন, গোলাপি রঙের সোয়েটার দেখলেই জিভে এসে ঠেকল স্ট্রবেরির স্বাদ! এই দুই রোগে আক্রান্ত হওয়ায় দীর্ঘদিন বিষণ্নতায় ভুগেছেন বিলি।

তিনি কোনো দিন সিগারেট খাননি বা ড্রাগ নেননি। ছবি: ইনস্টাগ্রাম
তিনি কোনো দিন সিগারেট খাননি বা ড্রাগ নেননি। ছবি: ইনস্টাগ্রাম

ছোঁননি মদ বা সিগারেট

মার্কিন তারকা, সংগীতশিল্পী হলেই যে শিল্পচর্চার খাতিরে হোক আর যে কারণে হোক সিগারেট বা অ্যালকোহলকে সঙ্গী হিসেবে বেছে নিয়েছেন, এমন উদাহরণ ভূরিভূরি। তবে বিলি একেবারেই সে রকম নন। তিনি সবদিক থেকেই আলাদা। ২০১৯ সালের মার্চে দ্য গার্ডিয়ানকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, তিনি কোনো দিন সিগারেট খাননি বা ড্রাগ নেননি। জীবনের এই নীতিতে তিনি অটল থাকতে চান।