অস্কার নিয়ে খুচরো কথা

অভিনেতা হিসেবে তিনবার মনোনীত হয়েও এই ট্রফি ঘরে তুলতে পারেননি। চতুর্থবারে আক্ষেপ ঘুচবে কি? ট্রফির দিকে তাকিয়ে এ কথাই কি ভাবছিলেন ব্র্যাড পিট?  ছবি: এএফপি
অভিনেতা হিসেবে তিনবার মনোনীত হয়েও এই ট্রফি ঘরে তুলতে পারেননি। চতুর্থবারে আক্ষেপ ঘুচবে কি? ট্রফির দিকে তাকিয়ে এ কথাই কি ভাবছিলেন ব্র্যাড পিট? ছবি: এএফপি

ইতিমধ্যে সবাই জেনে গেছে, অস্কারে কার ভাগ্য ফিরেছে, কে ফিরেছে খালি হাতে। বছরে একবার রুদ্ধশ্বাসে সবাই অপেক্ষা করে অস্কারের ফলাফল জানার জন্য। সেটা জানা হয়ে গেছে ঠিকই, কিন্তু কিছু কিছু ব্যাপার আছে, যা নিয়ে আলোচনা হবে অনেক দিন ধরেই।

আহা! আইরিশম্যান যে এভাবে ডুবে যাবে হতাশার সাগরে, সে কথা কে জানত? নেটফ্লিক্সে কী দাপটের সঙ্গেই না রাজত্ব করল ছবিটা! দশ–দশটা মনোনয়ন পেয়ে শেষে ফিরল কিনা শূন্য হাতে! মার্টিন স্করসেসির এই ছবিটি ভেসে যাবে পুরস্কারের বন্যায়, এমনটাই তো ভাবা হয়েছিল!
তিনটি মনোনয়ন পেয়েছিল দ্য টু পোপস ছবিটি। একই রকম আশা ছিল ডিজনির স্টার ওয়ার্স: দ্য রাইজ অব স্কাই ওয়াকার ছবিটি নিয়ে। দুটি ছবিরই যোগফল শূন্য। ডিজনির ছবিটির ভাগ্যে এমনকি কারিগরি পুরস্কারও জোটেনি, অথচ ব্লকবাস্টার কল্পকাহিনির ভাগ্যে কারিগরি পুরস্কারটা অন্তত জোটে!

এলটন জনের সংগীতময় আত্মজীবনী রকেট ম্যান পেয়েছে শতভাগ সাফল্য! তাদের ভাগ্যে জুটেছিল একটিমাত্র মনোনয়ন। সেরা গানের এই মনোনয়ন এসেছিল ‘(আই অ্যাম গন্না) লাভ মি অ্যাগেইন’ গানটির জন্য। হ্যাঁ, মুখে হাসি ফুটেছে এলটন জনের। দ্বিতীয়বারের মতো অস্কার পেলেন তিনি। ১৯৯৫ সালে লায়ন কিং ছবির ‘ক্যান ইউ ফিল দ্য লাভ টুনাইট’ গানটির জন্য প্রথম অস্কার পেয়েছিলেন গুণী এই শিল্পী।

আমেরিকান ফ্যাক্টরিও কিন্তু একটি মনোনয়ন পেয়ে পুরস্কার লাভ করেছে। নেটফ্লিক্সের তৈরি পূর্ণদৈর্ঘ্য এই তথ্যচিত্র পেয়েছে সেরা তথ্যচিত্রের পুরস্কার। এখানে বলে রাখা ভালো, ছবিটি যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার স্ত্রী মিশেল ওবামার চলচ্চিত্র স্টুডিও হায়ারগ্রাউন্ড প্রোডাকশনসের তৈরি। ২০১৮ সাল থেকে মিশেল আছেন এই স্টুডিও নিয়ে। সে বছরের মে মাসেই নেটফ্লিক্সের সঙ্গে মিশেল আর বারাক ওবামা চুক্তি স্বাক্ষর করেন। নিজেদের প্রথম ছবির জন্যই তাঁরা জিতে নিলেন অস্কার।
অভিনয়শিল্পী হিসেবে ব্র্যাড পিট এবারই প্রথম পেলেন অস্কার। এর আগেও তিনি পেয়েছেন এই পুরস্কার, কিন্তু সেটা ছিল টুয়েলভ ইয়ারস আ স্লেভ ছবির প্রযোজক হিসেবে। এবার নিয়ে ব্র্যাড পিট মোট সাতবার অস্কারে মনোনয়ন পেয়েছেন। অভিনয়শিল্পী হিসেবে পেয়েছেন চারবার।

সেরা সংগীত: স্যার এলটন জন, সেরা পরিচালক: বং জুন হো, সেরা অভিনেতা: হোয়াকিন ফিনিক্স, সেরা অভিনেত্রী: রেনে জেলওয়েগার, সেরা সহ–অভিনেতা: ব্র্যাড পিট, সেরা সহ–অভিনেত্রী: লরা ডার্ন
সেরা সংগীত: স্যার এলটন জন, সেরা পরিচালক: বং জুন হো, সেরা অভিনেতা: হোয়াকিন ফিনিক্স, সেরা অভিনেত্রী: রেনে জেলওয়েগার, সেরা সহ–অভিনেতা: ব্র্যাড পিট, সেরা সহ–অভিনেত্রী: লরা ডার্ন

জোজো র‍্যাবিট ছবিটি ছয়টি মনোনয়ন পেয়ে মাত্র একটিতে পুরস্কার পেয়েছে বলে হাসাহাসি করার কিছু নেই। একটি পুরস্কার যে বড় বড় ছবির ভাগ্যে জোটেনি, সে কথা সবাইকে মনে করিয়ে দেওয়া দরকার।
পোশাক নকশায় পুরস্কার পাওয়া ব্রিটেনের জ্যাকলিন ডুরানের কথা না বলে লেখাটা শেষ করা যাবে না। তিনি দ্বিতীয়বারের মতো পেলেন এই পুরস্কার। লিটল ওম্যান ছবির জন্য তাঁর ভাগ্যে জুটল এটি। গত ১৫ বছরে তিনি সাতবার পোশাক নকশার জন্য পেয়েছেন মনোনয়ন। ২০১২ সালে আন্না কারেনিনা ছবির জন্য পেয়েছিলেন প্রথম অস্কার। তিনি যেসব ছবির পোশাক নকশা করেছেন, সেগুলোর নাম শুনুন—ডারকেস্ট আওয়ার, বিউটি অ্যান্ড দ্য বিস্ট, ম্যাকবেথ, ম্যারি ম্যাকডালেন, মি. টার্নার, প্রাইড অ্যান্ড প্রেজুডিস।