ট্রায়াল রুমে আতঙ্কে থাকেন মেহ্জাবীন
বাসার বাইরে শুটিং স্পট কিংবা বিপণিবিতানের যেখানেই যান না কেন, পোশাক বদলে আতঙ্কে থাকেন। বিপণিবিতানের চেঞ্জিং রুমের কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এই অভিনয়শিল্পীকে আরও ভাবিয়ে তোলে। বিষয়টি সম্পর্কে নারীদের আরও সচেতন হতে কলম ধরলেন মেহ্জাবীন। লিখলেন নাটক। ‘থার্ড আই’ নামের এই নাটকের চিত্রনাট্যও করেছেন তিনি। মেহ্জাবীনের লেখা ও চিত্রনাট্যের এই নাটকের পরিচালক শ্রাবণী ফেরদৌস।
কেনাকাটা করতে গিয়ে অনেক নারীর নানা রকম তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা কানে এসেছে মেহ্জাবীন চৌধুরীর। এই তিক্ত অভিজ্ঞতায় ঘাবড়ে যান তিনি। তাই নাকি কখনোই কোনো পোশাক কিনতে গেলে চেঞ্জিং রুমে যান না। তবে নিজে সচেতন থাকলে এই বিষয়টায় অন্যদেরও সচেতন করতে চান তিনি। তাই তো নিজের মনের ভাবনাটা গল্প আকারে লিখলেন। এরপর ভাবনাটা ভাগাভাগি হয় পরিচালকের সঙ্গে। পরিচালক জানালেন, এটি নিয়ে তিনি নাটক বানাতে চান। উপলক্ষ হিসেবে বেছে নেওয়া হলো নারী দিবস। বললেন মেহ্জাবীন।
মেহ্জাবীনের লেখা ও চিত্রনাট্যে এটি প্রথম নাটক হলেও গেল ঈদে তাঁর গল্পভাবনায় একটি নাটক তৈরি হয়। ‘স্বপ্ন দেখি আবারও’ শিরোনামের নাটকটির পরিচালক মাহমুদুর রহমান। মেহ্জাবীন বলেন, ‘দেড় বছর আগে এই ইস্যু নিয়ে কাজ করার ভাবনা মাথায় আসে। কিন্তু নানার কারণে তা আর হয়ে ওঠেনি। এবারের নারী দিবসের আগে ভাবলাম, এটা যেহেতু নারীকেন্দ্রিক গল্প, এই সময়টায় করা যায়। জানুয়ারিতে পরিচালক শ্রাবণী ফেরদৌসের সঙ্গে ভাবনাটা শেয়ার করলাম। তখন ড্রেস চেঞ্জিং রুম নিয়ে একটি ভয়াবহ ঘটনা ঘটার খবর পাই। তখন আরও বেশি প্রাসঙ্গিক মনে হলো। চূড়ান্ত চিত্রনাট্য তৈরি করলাম।’
শুটিংয়ের পর কেমন মনে হয়েছে জানতে চাইলে মেহ্জাবীন বলেন, ‘সব সময় তো সবকিছু শতভাগ করা সম্ভব হয় না। তারপরও চেষ্টা করেছি। অনেক চ্যালেঞ্জিং একটা বিষয়। সবাই মিলে বিষয়টাকে ঠিকভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে।’
মেহ্জাবীন বলেন, ‘অভিনয় আর মডেলিংয়ের জন্য নানা জায়গায় যেতে হয়। ড্রেস চেঞ্জের বিষয়টা থাকে। আমি সব সময় সতর্ক থাকার চেষ্টা করি। আশপাশে তো অনেক ধরনের মানুষ থাকে, কার চিন্তাভাবনা কখন কী ধরনের হয় বোঝা যায় না। ড্রেস চেঞ্জের সময়টায় ঘরের আলো নিভিয়ে নেই। সেখানে যদি গোপন কোনো ক্যামেরাও যাতে আমাকে ক্যাপচার করতে না পারে। পোশাক বদলে একরকম আতঙ্কে থাকি। আমি গল্পটা বানানোর প্রধান কারণ, আমাদের মেয়েরা আরও বেশি সচেতন হয়।’
বিপণিবিতানে পোশাক কিনতে গেলেও ট্রায়াল দিতে হয়। ট্রায়াল রুমে ঢোকার আগে চারপাশটা ভালোভাবে দেখে নেওয়াটা ভালো বলে জানালেন মেহ্জাবীন। বললেন, ‘আমি এটাও বলছি না, সব জায়গায় এমনটা ঘটে। কিন্তু যখনই কোথাও এ ধরনের ঘটনা ঘটার খবর পাই, সেটা কিন্তু খুবই ভয়াবহ। নিজেদের জায়গা থেকে সচেতন থাকা জরুরি। কী করা উচিত, তাই আমি নাটকটিতে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। এই জন্যই গল্পটা লেখা।’
গেল ২৬ ও ২৭ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর উত্তরা ও বনানীতে নাটকটির শুটিং শেষ হয়। এই নাটকে মেহ্জাবীন ছাড়াও অভিনয় করেছেন আবির মির্জা, মনির খান শিমুল প্রমুখ।