'দেবী' বলছে এক রূঢ় বাস্তব গল্প

দেবী ছবির নয় শিল্পী
দেবী ছবির নয় শিল্পী

পড়ন্ত বিকেলে ভিক্টোরিয়ান ধাঁচে সাজানো ছোট একটি বসার ঘরে বসে আছেন নয়জন বিভিন্ন বয়সী নারী। এঁদের মধ্যে কেউ মারাঠি বৃদ্ধা, কেউ আবার শহুরে চাকরিজীবী। একজন বেশ পর্দানশীল, আরেকজন ঘরজুড়ে সন্ধ্যা আরতি দিতে ব্যস্ত। এক গ্রাম্য মূক কিশোরী টেলিভিশন দেখায় ব্যস্ত, আরেক তরুণীর পুরো মনোযোগ পাঠ্যবইয়ে। একজন মডেলও আছেন। একই ঘরে 

এমন বিচিত্র সমাবেশ দেখিয়ে প্রথমেই দর্শককে খানিকটা হকচকিয়ে দেয় ১৩ মিনিটের চলচ্চিত্র দেবী

অদ্ভুত সেই বসার ঘরের টিভিতে একসময় শোনা যায় একটি বীভৎস ঘটনার খবর। কিন্তু খবরটি শোনার পর হতাশা বা দীর্ঘশ্বাসের বদলে ওঠে তর্কের ঝড়। হঠাৎ কেউ কড়া নাড়ে দরজায়। কিন্তু কেউ দরজা খুলে বাইরে থাকা মানুষটিকে ভেতরে আনতে চাইছেন না। নতুন করে কাউকে আর বসার ঘরে জায়গা দিতে চাইছেন না এই নারীরা। তাঁদের আশঙ্কা, যেই গতিতে নতুন মানুষেরা আসছেন, তাঁদের চাপে তিল ধারণের জায়গা থাকবে না এই বসার ঘরে।

কেন আশ্রয় দেওয়ার জায়গা নিয়ে ঝগড়া করছেন সমাজের নানা স্তর থেকে উঠে আসা এই নারীরা? কী তাঁদের পরিচয়? কেন এক ঘরে তাঁরা? তা ধীরে ধীরে স্পষ্ট হয় প্রিয়াংকা ব্যানার্জি নির্মিত স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রে। তবে সেই সঙ্গে দেবী হয়ে ওঠে সর্বজনীনভাবে নারীর বর্তমান অবস্থার গল্প। বর্তমান বিশ্বে, বিভিন্নভাবে নির্যাতিত ও নিপীড়িত নারীরাই সমাজে তাঁদের পোশাক, বাচনভঙ্গি, কাজের ধরন ইত্যাদির কারণে নানা অবান্তর প্রশ্নের সম্মুখীন হন। নারীদের দায়ী করা হয় তাঁদের ওপর হওয়া নির্যাতনের জন্য। দেবী ছবির সংলাপে আর আবহে সেই চিরাচরিত বার্তাই ফুটে উঠেছে ভিন্নভাবে। বলিউড অভিনেত্রী কাজল, নেহা ধুপিয়া, শ্রুতি হাসান, নীনা কুলকার্নি সমাজের বিভিন্ন শ্রেণির নারীদের প্রতিনিধিত্ব করেছেন এই ছবিতে।

সময়োপযোগী বিষয়, গল্পের বৈচিত্র্য, দৃশ্যায়নে ভিন্নতা আর শক্তিশালী অভিনয়ের কারণে দেবী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ আলোড়ন তুলেছে। পেয়েছে প্রশংসা। মাত্র এক সপ্তাহে ইউটিউবে এক কোটি ভিউয়ের মাইলফলক পেরিয়েছে দেবী (এ হিসাব ১০ মার্চ পর্যন্ত)।