গ্রাহকেরা বিদেশি বলে প্রতিষ্ঠানে তালা

নিপুণ। ছবি: ফেসবুক থেকে
নিপুণ। ছবি: ফেসবুক থেকে

রাজধানীর বনানীতে চিত্রনায়িকা নিপুণের স্পা সেন্টারটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির গ্রাহকদের মধ্যে বিদেশিদের সংখ্যা নেহাতই কম নয়। তাঁদের বিস্তারিত তথ্য নিপুণের কাছে ছিল না। তাঁদের কেউ বিদেশ সফর করেছেন কি না, কেউ করোনায় আক্রান্ত কি না, সেসব জানাটা তাঁর জন্য সহজ ছিল না। এ জন্য নিজের প্রতিষ্ঠানে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন ‘রিকশাওয়ালার প্রেম’খ্যাত এই অভিনেত্রী।

প্রায় চার বছর ধরে স্পা সেন্টারটি চালাচ্ছেন নিপুণ। সব মিলিয়ে ২৫ জন কর্মী সেখানে কাজ করেন। তাঁদের মধ্যে বিদেশি রয়েছেন ৪ জন। সবার নিরাপত্তা নিয়ে তিনি ছিলেন উদ্বিগ্ন। কর্মী ও গ্রাহকদের সবার নিরাপত্তার স্বার্থে কর্মীদের ছুটি দিয়ে স্পা সেন্টারটি সাময়িকভাবে বন্ধ করে দিয়েছেন। ছুটির সঙ্গে কর্মীদের চলতি মাসের পনেরো দিনের বেতনও পরিশোধ করেছেন তিনি।

নিপুণ জানান, আগামী মাসের ৪ তারিখ পর্যন্ত স্পা সেন্টারের কর্মীদের ছুটি দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে এই ছুটির মেয়াদ বাড়তে পারে। আপাতত সবার স্বাস্থ্যঝুঁকির কথা মাথায় রেখে বিউটি পার্লার খালি করা হয়েছে। পরিস্থিতি বিবেচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তিনি বলেন, ‘আমাদের গ্রাহকদের বেশির ভাগই নিয়মিত। তারপরও তাঁদের ওপর ভরসা করা যাচ্ছিল না। নিজেরা সতর্ক না হলে চলছিল না। সাময়িক ক্ষতি মেনে তাই প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখছি। এত মানুষ একসঙ্গে থাকাটা নিরাপদ মনে হয়নি আমার’।

নিজের স্পা সেন্টারে নিপুণ। ছবি: সংগৃহীত
নিজের স্পা সেন্টারে নিপুণ। ছবি: সংগৃহীত

সম্প্রতি বিদেশ থেকে ফিরেছেন নিপুণের মা, ভাই ও মেয়ে। তাঁদের রাখা হয়েছে হোম কোয়ারেন্টিনে। সতর্কতার অংশ হিসেবে তিনি বন্ধ রেখেছেন অফিস। ২০১৬ সালে প্রতিষ্ঠানটি চালু করার সময় নিপুণ বলেছিলেন, ‘জীবনের বড় একটা সময় আমি দেশের বাইরে কাটিয়েছি। সেখানে দেখেছি, সৌন্দর্যের ব্যাপারে মানুষ অনেক সচেতন। আমাদের দেশের অনেকে সৌন্দর্যসচেতন হলেও রূপচর্চার সব ধরনের সেবা তাঁরা ঠিকমতো পান না। আমি নিজেই সেই অভাব অনুভব করেছি। তাই নিজেই একটা কিছু করার চেষ্টা করেছি।’

নিপুণ চলচ্চিত্রে আসেন ২০০৬ সালে এফ আই মানিক পরিচালিত ‘পিতার আসন’ ছবির মধ্য দিয়ে। তবে এর আগে মুক্তি পায় তাঁর অভিনীত রকিবুল আলম পরিচালিত ছবি ‘রিকশাওয়ালার প্রেম’। চলচ্চিত্রে আসার আগে নিপুণ থাকতেন রাশিয়ায়, পড়াশোনাও করেছেন সেখানে। সিনেমায় নিপুণের ব্যস্ততা এখন কমেছে। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানেই তিনি বেশি সময় দিচ্ছেন।

নিপুণ অভিনীত ছবিগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ‘আমার প্রাণের স্বামী’, ‘মেয়ে অপহরণ’, ‘বাবার কসম’, ‘বাবার জন্য যুদ্ধ’, ‘অজ্ঞাতনামা’, ‘বড়লোকের জামাই’, ‘চাঁদের মতো বউ’, ‘অন্তর্ধান’, ‘মা বড় না বউ বড়’, ‘টাইগার নাম্বার ওয়ান’, ‘ঢাকার কিং’, ‘কোটি টাকার ফকির’, ‘বড় ভাই জিন্দাবাদ’, ‘শুভ বিবাহ’ ইত্যাদি। তিনি দু’বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন।