অবশেষে সুন্দরবন থেকে ফিরছেন সিয়াম-পরীমনিরা

সিয়াম আহমেদ ও পরীমনি। ছবি: সংগৃহীত
সিয়াম আহমেদ ও পরীমনি। ছবি: সংগৃহীত

অবশেষে ‘অ্যাডভেঞ্চার অব সুন্দরবন’ ছবির শুটিং বন্ধ হলো। খুলনার মোংলা থেকে আজ বৃহস্পতিবার সকালে পানিপথে লঞ্চে ঢাকার পথে রওনা হয়েছে শুটিং সংশ্লিষ্ট প্রায় ৭০ জনের একটি দল। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ছবির প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের একটি বঙ্গবিডির পরিচালক মুশফিকুর রহমান। তিনি নিজেও শুটিং ইউনিটের সঙ্গে আছেন।

মুঠোফোনে মুশফিকুর রহমান বলেন, ‘আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই আমরা শুটিং বন্ধ করে ঢাকার পথে রওনা হয়েছি। যেহেতু গল্প অনুযায়ী বেশির ভাগ শুটিংই লঞ্চে, তাই ফিরতি পথেও মাঝেমধ্যে কিছু কিছু শিল্পীর ইনচার্ট শট নেওয়া হচ্ছে।’

ছবির শুটিংয়ে সহশিল্পীর সঙ্গে পরীমনি। ছবি: সংগৃহীত
ছবির শুটিংয়ে সহশিল্পীর সঙ্গে পরীমনি। ছবি: সংগৃহীত

করোনাভাইরাসের আতঙ্কের মধ্যে বিশ্বজুড়ে স্থবির বিনোদন অঙ্গন। বাংলাদেশেও বন্ধ বিনোদনসংশ্লিষ্ট সব কাজ। চলচ্চিত্র প্রযোজক ও পরিবেশক সমিতি ২২ থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত সিনেমার সব ধরনের শুটিং, ডাবিং ও সম্পাদনার কাজ বন্ধ রেখেছে। তারপরও খুলনার মোংলা ও সুন্দরবন এলাকায় ‘অ্যাডভেঞ্চার অব সুন্দরবন’ ছবির শুটিং চলছিল। এ নিয়ে প্রযোজক সমিতি থেকে হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়। কয়েক দিন আগে প্রযোজক ও পরিবেশক নেতারা বলেছিলেন, শুটিংয়ে প্রায় ২০টি শিশু আছে। কোনো শিশু যদি করোনায় আক্রান্ত হয়, তার দায়ভার ছবির প্রযোজক ও পরিচালককে নিতে হবে।

নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও শুটিং বন্ধ না করা প্রসঙ্গে মুঠোফোনে এই প্রযোজক বলেন, ‘সুন্দরবনের ভেতরের দিকে শুটিং করায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল। শুটিং বন্ধের সিদ্ধান্তের কোনো সংবাদ আমরা পাইনি। বন থেকে বেরিয়ে পরে বিষয়টি জানতে পেরেছি। এরপর প্রযোজক সমিতি, পরিচালক সমিতির নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছি। এ ছাড়া আমাদের ইউনিটে জ্যেষ্ঠ অভিনেতারা আছেন এবং প্রযোজক সমিতির নেতা শহীদুল আলম সাচ্চুও আছেন। সবার সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করেই শুটিং বন্ধ করে ঢাকায় ফিরছি।’

শিশুদের ভ্রমণের কাহিনি নিয়ে এই ছবির গল্প। এর বেশির ভাগ শুটিংই পানিপথে, লঞ্চে। সুন্দরবনে টানা ২৫ দিন শুটিং করে ছবির কাজ শেষ করার কথা ছিল। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে শুটিং বন্ধের নির্দেশনা থাকায় টানা ১৩ দিন কাজ করে শুটিং বন্ধ হচ্ছে ছবিটির। প্রযোজক জানান, ১৩ দিনে ছবির ৫০ ভাগের মতো কাজ হয়েছে। তবে সুন্দরবনের ভেতরের ছয় দিনের কাজ শেষ করতে পেরেছেন তাঁরা।

শুটিংয়ের ফাঁকে আশীষ খন্দকার ও সিয়াম আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত
শুটিংয়ের ফাঁকে আশীষ খন্দকার ও সিয়াম আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত

একটানা কাজ শেষ করতে না পারায় পরবর্তীকালে শুটিং শেষ করতে আরও লগ্নি বাড়াতে হতে পারে বলে জানান প্রযোজক। তিনি বলেন, ‘টানা কাজ করে শুটিং শেষ করার কথা ছিল। কিন্তু করোনাভাইরাসের ভয়াবহতার কারণে আমরা সবাই শঙ্কিত। ইউনিটে প্রায় ২০টি শিশু আছে। যদিও আমরা শিশুদের জন্য বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা রেখেছি। তারপরও তাদের নিয়ে অনেকই চিন্তিত ছিলেন। সবকিছু বিবেচনা করেই টানা কাজ করা গেল না। এখন জুলাইয়ের আগে ছাড়া আর শুটিং করা যাবে না। ফলে পরবর্তীকালে শুটিং করলে কন্টিউনিটি মেলানো কঠিন হবে। পাশাপাশি ছবিতে লগ্নিও অনেক বেড়ে যাবে।’

এদিকে ঢাকায় ফেরা নিয়েও দুশ্চিন্তা করছে পুরো ইউনিট। এতগুলো মানুষ একসঙ্গে দীর্ঘদিন বাইরে ছিলেন। এখন ঢাকায় ফিরলে তাদের কোয়ারেন্টিনে থাকতে হতে পারে। ছবির পরিচালক আবু রায়হান বলেন, ‘এখন লঞ্চ সদরঘাটে ভিড়লে আমাদের কোয়ারেন্টিনেও যেতে হতে পারে।’

‘অ্যাডভেঞ্চার অব সুন্দরবন’ ছবির শুটিংয়ে শিশু ও কলাকুশলীরা। ছবি: সংগৃহীত
‘অ্যাডভেঞ্চার অব সুন্দরবন’ ছবির শুটিংয়ে শিশু ও কলাকুশলীরা। ছবি: সংগৃহীত

শুটিং বন্ধ করে ফেরার বিষয়টি স্বীকার করলেন ছবির রাতুল চরিত্রের অভিনেতা সিয়াম আহমেদও। তিনি বলেন, ‘আজ বৃহস্পতিবার সকালে শুটিং বন্ধ করে ঢাকায় ফেরার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এখন ফিরছি। হয়তো ঢাকায় পৌঁছাতে দুই দিন লাগতে পারে।’

ছবিতে আরও অভিনয় করছেন পরীমনি, শহীদুল আলম সাচ্চু, আজাদ আবুল কালাম, কচি খন্দকার, আশীষ খন্দকারসহ প্রায় ২০টি শিশু। শিশুদের ভ্রমণের গল্প নিয়ে মুহম্মদ জাফর ইকবালের উপন্যাস ‘রাতুলের রাত রাতুলের দিন’ থেকে ছবিটির চিত্রনাট্য করেছেন জাকারিয়া সৌখিন।