শিডিউল জটিলতায় পড়বে সিনেমা

মিশন এক্সট্রিম, গাঙচিল, ইত্তেফাক ও শ্বশুরবাড়ি জিন্দাবাদ টু ছবির দৃশ্য। ছবি: সংগৃহীত
মিশন এক্সট্রিম, গাঙচিল, ইত্তেফাক ও শ্বশুরবাড়ি জিন্দাবাদ টু ছবির দৃশ্য। ছবি: সংগৃহীত

অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য বন্ধ সিনেমা হল। এই প্রেক্ষাপটে চলতি মাসে মুক্তির তালিকায় থাকা ছবি মুক্তি পাচ্ছে না। এদিকে ঈদের জন্য মুক্তির তালিকায় থাকা ছবিগুলোরও মুক্তি অনিশ্চিত। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ছবিগুলোর মুক্তি নিয়ে শিডিউল জটিলতা তৈরি হওয়ার আশঙ্কায় চলচ্চিত্রসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

চলতি মাসে মুক্তির তালিকায় থাকা ঊনপঞ্চাশ বাতাস, শ্বশুরবাড়ি জিন্দাবাদ ২, বিশ্বসুন্দরী, নীল মুকুট, জ্বীন ইত্যাদি ছবিগুলোর মুক্তি অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য পিছিয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে ঈদের সম্ভাব্য পাঁচটি ছবি মিশন এক্সট্রিম, শান, বিদ্রোহী, মন দেব মন নেব ও পরাণ ছবির মুক্তিও অনিশ্চিত। চলচ্চিত্রসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ভাষ্য, পবিত্র ঈদুল আজহায় দিন: দ্য ডে, মিশন এক্সট্রিম-২, অপারেশন সুন্দরবন, বিক্ষোভ ও কমান্ডো মুক্তির কথা আছে। এরপর থেকে ধারাবাহিকভাবে ইত্তেফাক, সাইকো, গাঙচিল, মেকআপ, ওস্তাদ, ক্যাসিনো, পাপ পুণ্য, আগামীকাল, আদম, সিক্রেন্ট এজেন্ট, ডেঞ্জারম্যান, স্বপ্নবাজী, ঢাকা ২০৪০ ইত্যাদি ছবি মুক্তি পাওয়ার কথা। কিন্তু গত মার্চ মাস থেকে পিছিয়ে যাওয়া ছবিগুলো এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে ঈদুল ফিতরেও যদি ছবি মুক্তি আটকে যায়, তাহলে মুক্তি না পাওয়া এসব ছবির চলতি বছরে মুক্তি নিয়ে তৈরি হতে পারে নতুন জটিলতা।

ঊনপঞ্চাশ বাতাস ছবির পরিচালক মাসুদ হাসান উজ্জ্বল জানান, টানা বেশ কয়েক মাস কোনো সিনেমা মুক্তি পাচ্ছে না। সুতরাং বছরের মাঝামাঝি বা শেষে গিয়ে ছবি মুক্তির জন্য বড় ধরনের চাপ পড়বে। তিনি বলেন, ‘সামনে ছবি মুক্তিতে একটা বিশৃঙ্খলা তৈরি হবে। কে মুক্তির তারিখ পাবে, কে পাবে না, এ নিয়ে জটিলতা তৈরি হবে। কারণ, সবাই তো তাঁদের বিনিয়োগ উঠিয়ে আনার চেষ্টা করবেন। এখানে চলচ্চিত্রের যেসব সংগঠন আছে, তাঁরা বিষয়টিকে সামাল দিতে পারবে বলে আমার মনে হয় না।’

অপারেশন সুন্দরবন ও ঢাকা ২০৪০ ছবির পরিচালক দীপংকর দীপন বলেন, ‘বড় একটা সেশনজট লেগে গেল। একাধিক ছবি মুক্তির চাপে শিডিউলের সুষম বণ্টনেও সমস্যা হবে। এখানে প্রচুর ছবি তৈরি হয় না। একটু বিরতি দিয়ে দিয়ে ভালো ছবিগুলো মুক্তি দিতে চান প্রযোজকেরা। একটি ছবি মুক্তির পর কমপক্ষে দুই সপ্তাহ ধরে প্রেক্ষাগৃহে ছবিটি চলার আশা করেন প্রযোজক। কিন্তু এখন যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তাতে সেই সুযোগ থাকছে না। আমরা ২০২০ সালকে সিনেমার জন্য একটা সম্ভাবনার বছর ধরেছিলাম, তা আর হয়তো হচ্ছে না।’

মার্চ থেকে শুরু করে ঈদুল ফিতরের আগ পর্যন্ত অন্তত ১০টি ছবির মুক্তি পিছিয়েছে বলে জানান প্রযোজক পরিবেশক সমিতির সভাপতি খোরশেদ আলম। এই ছবিগুলো বছর শেষে শিডিউল জটিলতা তৈরি করবে। তিনি জানান, সামনে ছবি মুক্তিতে বেশ চাপ থাকবে। কারণ, সবাই ছবি মুক্তি দিতে চাইবে। একটা বিশৃঙ্খলা হবে।
ঢাকার চলচ্চিত্রে ঈদ ছাড়া একসঙ্গে দুটির বেশি ছবি মুক্তির নিয়ম নেই। সে ক্ষেত্রে বছরের শেষের দিকে ছবি মুক্তির চাপ বাড়লে ওই নিয়ম তুলে নেওয়ার সুযোগ থাকবে কি না, জানতে চাইলে ওই প্রযোজক নেতা জানান, পরিস্থিতি বিবেচনা করলে সবকিছুই সম্ভব। একসঙ্গে দুটির বেশি ছবি মুক্তি দিলে বর্তমানে সীমিত হল নিয়ে কেউ-ই ব্যবসা করতে পারবে না। তবে অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।