যে সিনেমার শেষ চমকে দেয়

মুলহল্যান্ড ড্রাইভ, গন গার্ল ও দ্য হান্ট ছবির পোস্টার। ছবি: সংগৃহীত
মুলহল্যান্ড ড্রাইভ, গন গার্ল ও দ্য হান্ট ছবির পোস্টার। ছবি: সংগৃহীত

করোনাভাইরাসের এই সময়ে ঘরে বসে সিনেমা যাঁরা দেখছেন, তাঁদের আরেকটা কাজ দিই। একটা ভালো সিনেমা দেখার পর ভালো লাগার একটা রেশ থাকে। যেমনটা থাকে একটা ভালো বই বা ভালো একটা গান শোনার পর। কিন্তু এমন যদি হয় যে সিনেমাটা শেষ করার পর ভিন্ন কিছু মনে হলো, বিস্মিত হলেন বা চমকে গেলেন অথবা ভাবতে বসলেন, আপনি যা বুঝেছেন, আসলেই কি তাই?

উদাহরণ দিই। এক্ষুনি ডেভিড লিঞ্চের মুলহল্যান্ড ড্রাইভ দেখে ফেলেন। ২০০১ সালে মুক্তি পাওয়া এই ছবির মূল অভিনেত্রী নওমি ওয়াটস। অভিনেত্রী হওয়ার আশায় লস অ্যাঞ্জেলেসে আসেন তিনি। দেখা হয় লরা হ্যারিংয়ের সঙ্গে। শুরুটা একটা দুর্ঘটনা দিয়ে। এরপর ঘটনা নানা দিকে যেতে থাকে। অসাধারণ এক সিনেমা, তুমুল বিখ্যাত। শেষ হলে কী কী ঘটবে, সেটা বলি এখন। প্রথমেই দ্বিধায় পড়বেন সিনেমার শেষটা নিয়ে। কোনটা আসল আর কোনটা কল্পনা, সেটি নিয়ে হয়তো আপনি অনেকক্ষণ ভাববেন। কূলকিনারা করতে এরপর যাবেন গুগলের কাছে। সেখানে পাবেন অসংখ্য ব্যাখ্যা। বড় বড় সিনেমাপণ্ডিতেরা এ নিয়ে নানা মত দিয়েছেন। সেগুলো পড়ে ফেলতে পারলে আপনার সময়টা কিন্তু ভালোই যাবে। মুলহল্যান্ড ড্রাইভ তুমুল বিখ্যাত এক সিনেমা। এই সিনেমার নানা দিক নিয়ে চর্চা কিন্তু এখনো হয়। কানে সেরা পরিচালক হয়েছিলেন ডেভিড লিঞ্চ।

আরেক ধরনের সিনেমা আছে যেখানে শেষটায় এসে ঘটনার মোড় হঠাৎ ঘুরে যায়, যাকে টুইস্ট বলে। আবার কিছু সিনেমা আছে শেষ হলে মনে হবে, ‘আয় হায়, এটা কেমন হলো?’
যেমন ধরেন, ২০১৪ সালে মুক্তি পাওয়া গন গার্ল। বেন অ্যাফ্লেক ও রোজমন্ড পাইকের এই সিনেমা থ্রিলার ঘরানার। বিয়ের ১৫ বছর বার্ষিকীর দিনে নিখোঁজ হয়ে গেলেন নিকের স্ত্রী অ্যামি। শুরু হলো তদন্ত। বাসায় নানা চিহ্ন। গোয়েন্দাদের সন্দেহের তির নিকের দিকেই। নিক অলস, আর্থিক সমস্যা আছে এবং আছে অন্য মেয়ের সঙ্গে সম্পর্কও। সব মিলিয়ে স্ত্রীকে খুনে করার সব উপাদানই আছে। এরই মধ্যে দেখা গেল জীবিত অ্যামিকে। আর তাতেই ঘটনা মোড় নিল অন্যদিকে। শেষটায় চমকে যাবেন। করোনাভাইরাসের এই সময়ে এই দম্পতির একই ঘরে থাকাটা কেমন হতো, সিনেমা দেখার পর কল্পনা করতে পারেন। তাতেও সময় ভালো কাটবে।

দ্য হান্ট ডেনমার্কের সিনেমা। সমালোচকদের খুব প্রিয় এই সিনেমা মুক্তি পেয়েছিল ২০১২ সালে। লুকাস হাইস্কুলের শিক্ষক। মন্দার সময়ে চাকরি হারিয়ে নিজের এলাকায় চলে আসেন, চাকরি নেন এক প্রি–স্কুলে। সেখানে তাঁর ছাত্রী পাঁচ বছরের ক্লারা। ক্লারা লুকাসেরই ঘনিষ্ঠ বন্ধুর মেয়ে। লুকাসের প্রতি আকৃষ্ট হয় ক্লারা। লুকাস স্নেহসুলভ ভঙ্গিতেই সমস্যা মেটানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু ক্লারা এমন এক কাণ্ড করে বসে, জঘন্য এক অপরাধে অভিযুক্ত হন লুকাস। আসলেই কি লুকাস দায়ী? লুকাসের জন্য ভাবনা সিনেমা শেষ হলেও কিন্তু যাবে না।

তিনটি সিনেমার নাম দিলাম। তবে এ ধরনের ঘরানার মধ্যে সিনেমাপ্রেমীদের খুব প্রিয় হচ্ছে মার্টিন স্করসেজির শাটার আইল্যান্ড। লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিওর ভক্তরা জলদি দেখে ফেলতে পারেন। ২০১০ সালের এই সিনেমার মূল কাহিনি ইউএস মার্শাল এডওয়ার্ড ড্যানিয়েলসকে ঘিরে। বোস্টন হারবারের শাটার আইল্যান্ডের এক হাসপাতালের একজন রোগীর খোঁজে নতুন সহকারীকে নিয়ে সেখানে যান ড্যানিয়েলস। কাজটা সহজ ছিল না। তদন্ত করতে গিয়ে একের পর এক রহস্যময় ঘটনায় দ্বীপটাতে আটকা পড়েন তিনি। শেষের চমকটা না হয় তোলা থাক। আপনারাই দেখে নিন।