করোনায় এইডস রোগীদের জন্য এলটন জনের উদ্যোগ

ব্রিটিশ সংগীতশিল্পী স্যার এলটন জন। ছবি: রয়টার্স
ব্রিটিশ সংগীতশিল্পী স্যার এলটন জন। ছবি: রয়টার্স

এইডসের রোগীরা যাতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত না হন, সে জন্য তাঁদের বাড়তি যত্ন দরকার। সে কাজে সাড়ে আট কোটি টাকা দান করেছেন শিল্পী স্যার এলটন জন। এলটন জন এইডস ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে তিনি এ অনুদান দিয়েছেন। টুইটারে একটি ভিডিও পোস্ট করে ৭৩ বছর বয়সী কিংবদন্তিতুল্য এ শিল্পী অনুদানের ঘোষণা দেন।

জন বলেন, ‘আজ আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি, আমার ফাউন্ডেশন কোভিড-১৯ জরুরি তহবিলে ১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অনুদান দিচ্ছে। বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে থাকা অবহেলিত এইচআইভিতে আক্রান্ত ব্যক্তিদের যথাযথ সেবা নিশ্চিত করতে আমার অন্য সহযোগীদের সাহায্য কামনা করছি।’

এক মিনিটের সেই ভিডিওতে তিনি জানান, গত ৩০ বছর ধরে তাঁর এই ফাউন্ডেশন এইচআইভিতে আক্রান্ত ব্যক্তিদের পাশে থেকেছে। করোনাভাইরাস উপদ্রুত এই সময়েও তাঁদের প্রতি বিশেষ যত্নশীল হতে উদ্যোগী হয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। এ পরিস্থিতিতে ওষুধ ও টেস্টিং কিটের সংস্থান করা কম গুরুত্বপূর্ণ কাজ নয়। এলটন জন বলেন, ‘আমি কখনোই এইচআইভিতে আক্রান্ত ব্যক্তিদের ছেড়ে যাব না। এই ফাউন্ডেশনের হয়ে যাঁরা কাজ করছেন, তাঁদের অনেক অনেক ভালোবাসা জানাই।’

করোনাভাইরাসের এই অস্থির সময়ে একটু প্রশান্তির জন্য গত সপ্তাহে যাঁর যাঁর ঘর থেকে একটি কনসার্টের আয়োজন করা হয়। সেই কনসার্টের মধ্যমণি ছিলেন তিনি। আমেরিকার সেই আইহার্ট লিভিং রুম কনসার্টে নিজেদের ঘর থেকেই যোগ দিয়েছিলেন বিলি আইলিশ, মারিয়া ক্যারি, ব্যকস্ট্রিট বয়েজ, স্যাম স্মিথ, শন মেনডেস, ক্যামিলা ক্যাবেলো, ডেভ গোল এবং অ্যালিসিয়া কিস।

স্যার এলটন জন। ছবি: রয়টার্স
স্যার এলটন জন। ছবি: রয়টার্স

একবার দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে সংক্রমিত হয়ে এসেছিলেন এলটন জন। সেখান থেকেই ঘাতক ব্যাধি ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েছিলেন তিনি। নিয়মিত পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে গিয়ে অসুখটা ধরা পড়ে তাঁর। এই রোগে দীর্ঘদিন ভুগতে হয়েছিল ব্রিটিশ সংগীতশিল্পী স্যার এলটন জনকে। মূত্রনালির সেই ক্যানসারে জনের অবস্থা হয়ে পড়েছিল শোচনীয়। তিনি মনে করেন প্রায় অলৌকিকভাবেই বেঁচে গেছেন তিনি। নিজের জীবনী ‘মি’তে সেসব লিখেছেন এলটন জন।

মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরে আসা এলটন জন লিখেছেন, ‘আমাকে নেওয়া হয়েছিল লন্ডনের কিং এডওয়ার্ড সেভেন হাসপাতালে। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর জানানো হয়েছিল আমার অবস্থা শোচনীয়। তখনকার সেই পরিস্থিতি মোকাবিলার মতো সরঞ্জাম সেই হাসপাতালে ছিল না। চিকিৎসকেরা ডেভিডকে (জনের সঙ্গী) বলেছিলেন, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আমি মরতে যাচ্ছি। দক্ষিণ আমেরিকান সেই ডাক্তার যদি সেদিন পাশে না থাকতেন, আমি শেষ হয়ে যেতাম। সেই রাতে হাসপাতালের বিছানায় একাকী শুয়ে শুয়ে ভেবেছি, যদি মরে যাই! শেষ রাতে প্রার্থনা করেছিলাম, দয়া করে আমাকে নিয়ে যেয়ো না, সন্তানদের আবার দেখার সুযোগ করে দাও, আমাকে আর কিছুটা সময় দাও।’ ২০১৭ সালে লস অ্যাঞ্জেলেসে সফল অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ক্যানসার থেকে মুক্ত হন তিনি। সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, পিপল ও এসশোবিজ