গোয়েন্দারা যখন রহস্য উদ্ধারে আসেন

ছুটির দিনে এ তিনটি সিনেমা দেখতে পারেন। ছবি: সংগৃহীত
ছুটির দিনে এ তিনটি সিনেমা দেখতে পারেন। ছবি: সংগৃহীত

চলচ্চিত্রপ্রেমীদের কাছে ২০১৯ সাল খুব প্রিয়। অসংখ্য ভালো সিনেমা, বক্স অফিস সাফল্য, সমালোচকদের অকুণ্ঠ প্রশংসা—সবকিছুই ছিল। ২০১৯ সালের কোন সিনেমা দেখবেন আর কোনটা দেখবেন না, বলা খুব কঠিন। তবে আজ একটি বিশেষ ঘরানার সিনেমার কথা বলব বলে কাজটি একটু সহজ করে নিচ্ছি। রহস্য-রোমাঞ্চ যাঁরা পছন্দ করেন তাঁদের জন্যই এই লেখা, বিশেষ করে গোয়েন্দা কাহিনি। খুব পরিষ্কার করলে ‘প্রাইভেট ডিটেকটিভ’। সবাই নিশ্চয়ই একমত হবেন যে এ বিষয়ে সাম্প্রতিক সময়ের সেরা সিনেমা ‘নাইভস আউট’। ড্যানিয়েল ক্রেগের ভক্ত এখন অসংখ্য। এখন পর্যন্ত ‘জেমস বন্ড’ যাঁরাই হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে অভিনেতা হিসেবে সবার ওপরে ক্রেগ। ক্রেগ ভক্তরা নাইভস আউট দেখতে পারেন ঘরবন্দী এ সময়ে।

হারল্যান থ্রমবে রহস্য উপন্যাসের লেখক। হারল্যান আবার খুবই ধনী, অগাধ সম্পত্তির মালিক। ৮৫তম জন্মদিনের পার্টি শেষে পরের দিন খুব ভোরে দেখা গেল গলা কাটা অবস্থায় মরে পড়ে আছেন হারল্যান। পুলিশের ধারণা, এটি আত্মহত্যা। কিন্তু পরিবারের কেউ জানেন না নামকরা গোয়েন্দা বেনোয়েট ব্ল্যাঙ্ককে গোপনে হারল্যানের হত্যারহস্য তদন্তে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। শেষের দিকে ছেলেমেয়েদের সঙ্গে যে নানা বিষয়ে সমস্যা হচ্ছিল, তা-ও সত্যি। আর ছিল অল্পবয়সী এক নার্স। কিছুক্ষণের মধ্যেই কিন্তু জানা যায়, কীভাবে মারা গেলেন হারল্যান। কিন্তু সবাই যা জানে, সব প্রমাণ যখন সামনে, তখন প্রশ্ন একটাই—খুনি কি ধরা পড়বে? নাকি রহস্য আরও আছে। আপনি শুধু একবার দেখতে বসবেন, সিনেমার গল্পই আপনাকে টেনে নিয়ে যাবে।

প্রাইভেট ডিটেকটিভ’ নিয়ে সাম্প্রতিক সময়ের সেরা সিনেমা ‘নাইভস আউট’। ছবি: সংগৃহীত
প্রাইভেট ডিটেকটিভ’ নিয়ে সাম্প্রতিক সময়ের সেরা সিনেমা ‘নাইভস আউট’। ছবি: সংগৃহীত

গোয়েন্দা গল্প মানেই শার্লক হোমস, আগাথা ক্রিস্টি বা ব্যোমকেশ কিংবা ফেলুদা। এসব গল্প নিয়ে অসংখ্য সিনেমা হয়েছে, সামনে আরও হবে। সেসব সিনেমা নিয়ে আরেক দিন লেখা যাবে। বরং ভালো অভিনয়ের প্রসঙ্গ যখন এলই, তখন জ্যাক নিকলসনের একটি গোয়েন্দা সিনেমার কথা না বললেই নয়। রোমান পোলনস্কির চায়নাটাউন তুমুল বিখ্যাত এক সিনেমা। সর্বকালের সেরা সিনেমার তালিকায় এটি থাকবেই।

জ্যাক গিটস একজন বেসরকারি গোয়েন্দা। এভেলিন নামের এক নারী তাকে নিয়োগ দেয় তারই স্বামীর ওপর নজরদারির জন্য। মেয়েটির স্বামী হলিস লস অ্যাঞ্জেলেসের পানি ও বিদ্যুৎ বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী। জ্যাক গিটস অচেনা এক নারীর সঙ্গে তোলা ছবি এনে দেন এভেলিনকে। পরের দিন পত্রিকায় সেই ছবি ছাপাও হয়। কিন্তু হলিসের প্রকৃত স্ত্রী দেখা দিলে জ্যাক বুঝতে পারেন, তাকে ব্যবহার করা হয়েছে। আর হলিসের লাশ পাওয়া গেলে ঘটনা মোড় নেয় অন্যদিকে। পরিচালনা, অভিনয় বা চিত্রনাট্য—সব দিক থেকেই চায়নাটাউন সিনেমাজগতের ‘লিজেন্ড’ হিসেবে পরিচিত। এর একটি ভালো হিন্দি সংস্করণ আছে, মনোরমা সিক্স ফিট আন্ডার।

নিঃসন্দেহে সিনেমা হিসেবে ক্লুট খুবই উপভোগ্য । ছবি: সংগৃহীত
নিঃসন্দেহে সিনেমা হিসেবে ক্লুট খুবই উপভোগ্য । ছবি: সংগৃহীত

অসংখ্য বেসরকারি গোয়েন্দা গল্পের সিনেমার মধ্য থেকে সব শেষে বেছে নিতে চাই ক্লুটকে। জেন ফন্ডা ও ডোনাল্ড সাদারল্যান্ডের প্রতি খানিকটা পক্ষপাতিত্ব তো আছেই, তবে নিঃসন্দেহে সিনেমা হিসেবেও ক্লুট খুবই উপভোগ্য। জেন ফন্ডা এই সিনেমা থেকে সেরা অভিনেত্রীর অস্কার পেয়েছিলেন। টম গ্রুনমান একটি কেমিক্যাল কোম্পানির একজন নির্বাহী। একদিন তিনি নিখোঁজ হয়ে গেলেন। পুলিশ তাঁর অফিস থেকে উদ্ধার করল অশ্লীল কিছু চিঠি, আর সেখানে ঠিকানা দেওয়া আছে নিউইয়র্কের এক যৌনকর্মী ব্রি ড্যানিয়েলসের (জেন ফন্ডা)। ছয় মাস তদন্ত করেও রহস্যের কিনারা করতে পারল না পুলিশ। তখন সেই কেমিক্যাল কোম্পানির এক কর্মকর্তা নিয়োগ দিলেন বেসরকারি গোয়েন্দা জন ক্লুটকে (সাদারল্যান্ড)। এরপরের গল্পটা জানতে না হয় সিনেমাটিই দেখে ফেলুন।

রোমান পোলনস্কির চায়নাটাউন তুমুল বিখ্যাত এক সিনেমা।
রোমান পোলনস্কির চায়নাটাউন তুমুল বিখ্যাত এক সিনেমা।

আগেই বলেছি, বেসরকারি গোয়েন্দাগিরি নিয়ে সিনেমার সংখ্যা কম নয়। আগ্রহীরা হ্যামফ্রে বোগার্টের দ্য বিগ স্লিপ, দ্য লং গুডবাই বা পল নিউম্যানের হারপারও দেখতে পারেন।