আমরা চাই শেষ বিদায়টা সুন্দর হোক

ডিরেক্টরস গিল্ডের সভাপতি সালাউদ্দিন লাভলু এবং সাধারণ সম্পাদক এস এ হক অলিক। ছবি: সংগৃহীত
ডিরেক্টরস গিল্ডের সভাপতি সালাউদ্দিন লাভলু এবং সাধারণ সম্পাদক এস এ হক অলিক। ছবি: সংগৃহীত

ছোট পর্দাসংশ্লিষ্ট শিল্পী ও কলাকুশলীদের করোনার উপসর্গ দেখা দিলে পাশে থাকবে ছোট পর্দার নির্মাতাদের গড়া স্বেচ্ছাসেবী দল। সবার তাৎক্ষণিক প্রয়োজনে ৪০ জন সদস্যের স্বেচ্ছাসেবক দল গঠন করেছে ডিরেক্টরস গিল্ড। কারও করোনার উপসর্গ দেখা দিলে এই দলকে ফোন দিলেই সব ধরনের সহায়তা পাবেন তাঁরা।


স্বেচ্ছাসেবক দল গঠন নিয়ে ডিরেক্টরস গিল্ডের সভাপতি সালাউদ্দিন লাভলু বলেন, ‘ছোট পর্দার সঙ্গে যুক্ত আছেন এমন মানুষেরা এই সেবা পাবেন। অনেকেই আছেন করোনা নিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে হয়তো বুঝে উঠতে পারছেন না কী করবেন। সে জন্য আমরা এলাকাভিত্তিক দল করেছি। ফোন পেলেই এ দলটি সাহায্যে এগিয়ে যাবে। পরে এই দলটি ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করানো, প্রয়োজনে হাসপাতালে নেওয়া, দ্রুত চিকিৎসা এবং অন্যান্য ব্যবস্থাপনার কাজ করবে।’

সালাউদ্দিন লাভলু আরও বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে সংগঠনের কার্যনির্বাহীর সদস্যদের মধ্যে ২০ জন এবং ২০ জন স্বেচ্ছাসেবক নিয়ে ৪০ জনের একটি দল আমরা গঠন করেছি। যেকোনো প্রয়োজনে আমাদের সব সময় একটি অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা আছে। তা ছাড়া এই দলে তিনজন ডাক্তারও আছেন।’

‘এই মুহূর্তে আমাদের সহকর্মীরা যে কেউ আক্রান্ত হতে পারেন। সে ক্ষেত্রে আমরা বলব, আপনারা উপসর্গ দেখা দিলে না লুকিয়ে আমাদের স্বেচ্ছাসেবকদের সহযোগিতা নিন।’ কথাগুলো বললেন ডিরেক্টরস গিল্ডের সাধারণ সম্পাদক এস এ হক অলিক। তিনি আরও বলেন, ‘করোনায় কেউ আক্রান্ত হলে তাঁর জন্য আমরা একটি হাসপাতালের সঙ্গে কথা বলে রেখেছি। অবস্থা বুঝে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে। আমরা আমাদের একজন সহকর্মীর করোনা পজিটিভ পেয়েছি। তাঁর সার্বিক চিকিৎসায় এগিয়ে এসেছে আমাদের সংগঠন। আমরা চাই আমাদের কারও করোনা উপসর্গ দেখা দিলে তিনি যেন বিভ্রান্ত না হয়ে দ্রুত চিকিৎসাসেবা পান।’

স্বেচ্ছাসেবক দলের সমন্বয়কারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন ফরিদুল হাসান ও পিকলু চৌধুরী। ফরিদুল হাসান বলেন, ‘কেউ যদি মনে করেন তাঁর করোনার কোনো উপসর্গ দেখা দিয়েছে, তাহলে আমাদের সমন্বয়কারীদের ফোন দিলেই হাসপাতালে পৌঁছানো, তাঁর যতটা পারা যায় চিকিৎসার ব্যয় এবং পরিবারের যেকোনো সহযোগিতা আমরা করব।’

নির্মাতা ও ডাক্তার ইমেল হক এই স্বেচ্ছাসেবক দলে আছেন। তিনি বলেন, ‘দেশে প্রাতিষ্ঠানিক কোনো প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা এখনো নেই। আমি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ওয়েবসাইট থেকে অনলাইনে প্রশিক্ষণ নিয়েছি। করোনা নিয়ে আরও বেশ কিছু তথ্য জানার চেষ্টা করেছি। ডিরেক্টরস গিল্ড থেকে পিপিই ও প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম পেলে দায়িত্ব পালন করতে সুবিধা হবে।’

স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য নির্মাতা রাফাত মজুমদার বলেন, ‘আমি ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, তেজগাঁও শিল্প এলাকা, তেজকুনিপাড়া, নাখালপাড়ায় সংগঠন থেকে স্বেচ্ছায় দায়িত্ব পালন করছি। আমাদের ছোট পর্দার কারও করোনার উপসর্গ দেখা দিলে আমি সার্বক্ষণিক তাঁদের পাশে থাকব এবং সংগঠনের সহায়তা নিয়ে চিকিৎসার সব রকম সাহায্যে এগিয়ে আসব।’

নির্মাতা এস এ হক অলিক বলেন, ‘আমরা দেখেছি করোনায় কেউ মারা গেলে সেই ব্যক্তির জানাজা ও দাফনকাফনের জন্য তাঁর পরিবার থেকে আপনজনেরা এগিয়ে আসেন না। আমরা ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলে জেনেছি, কেউ মারা যাওয়ার নির্দিষ্ট সময় পর শরীরের ভাইরাস মারা যায়। লাশটি ভালো করে ঢেকে রাখলে সেখান থেকে ভাইরাস ছড়ায় না। তারপরও অনেকে ভয় পাচ্ছেন। আল্লাহ না করুন আমাদের মধ্যে কেউ মারা গেলে আমরা তাঁর দাফনকাফনের ব্যবস্থাও করব। আমরা চাই শেষ বিদায়টা সুন্দর হোক।’