নেটফ্লিক্সের সুদিনে ভক্তদের মন খরাপ

প্রামাণ্যচিত্র টাইগার কিংও দেখেছে ৬ কোটি ৪০ লাখ মানুষ। ছবি: সংগৃহীত
প্রামাণ্যচিত্র টাইগার কিংও দেখেছে ৬ কোটি ৪০ লাখ মানুষ। ছবি: সংগৃহীত

সারা বিশ্ব ভয়ংকর দুঃসময়ের ভেতর দিন গুনছে। কিন্তু করোনা মুদ্রার উল্টো পিঠের মিষ্টি ফল ভোগ করছে নেটফ্লিক্স। বিশ্বের মানুষ লকডাউন আর কোয়ারেন্টিনে ঘরে ঢুকে পড়েছে। আর তাদের একটা বড় অংশ ঘরে সময় কাটাচ্ছে নেটফ্লিক্সে চোখ রেখে। বিবিসি অনলাইন নেটফ্লিক্সের ফুলে ফেঁপে ওঠা ব্যবসা নিয়ে প্রকাশ করেছে বিশেষ প্রতিবেদন।

১. ২০২০ সালের কেবল প্রথম তিন মাসেই নেটফ্লিক্স পেয়েছে নতুন ১ কোটি ৬০ লাখ সাবস্ক্রাইবার; যা প্রত্যাশার দ্বিগুণের বেশি। বিশ্বে নেটফ্লিক্সের সাবস্ক্রাইবার সংখ্যা ১৮ কোটি ২০ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। চলতি বছরের প্রথম তিন মাসেই ৫০ হাজার কোটি টাকা বেশি আয় হয়েছে। আর লাভ হয়েছে গত বছর এই সময়ের ৫০ শতাংশের বেশি।

২. নেটফ্লিক্সের শেয়ারের দাম একলাফে তিন গুণ বেড়েছে। ই মার্কেট বিশেষজ্ঞ এরিক হ্যাগস্ট্রম বলেন, নেটফ্লিক্স ব্যবসার নতুন দুয়ার খুলে ফেলেছে। ঘরে থাকা মানুষের একটা বড় অংশ নেটফ্লিক্সের ভোক্তা। আর যারা ভোক্তা নন, তারা সম্ভাব্য ভোক্তা (পোটেনশিয়াল কাস্টমার)।

২০২০ সালের প্রথম তিন মাসেই নেটফ্লিক্স পেয়েছে নতুন ১ কোটি ৬০ লাখ সাবস্ক্রাইবার। ছবি:সংগৃহীত
২০২০ সালের প্রথম তিন মাসেই নেটফ্লিক্স পেয়েছে নতুন ১ কোটি ৬০ লাখ সাবস্ক্রাইবার। ছবি:সংগৃহীত

৩. নেটফ্লিক্সের এই প্রত্যাশার চেয়ে বেশি আগ্রহকে সামাল দিতে ইউরোপে এর কনটেন্টগুলোর ভিডিও কোয়ালিটি কমিয়ে দেওয়া হয়েছে; যাতে ইন্টারনেট বর্ধিত ভোক্তাদের চাপ সামাল দিতে পারে। দুই হাজার জনকে নতুন নিয়োগ দেওয়া হয়েছে ভোক্তাদের সুবিধা-অসুবিধা দেখার জন্য।

৪. কেবল নেটফ্লিক্স অরিজিনাল স্পেনসার কনফিডেনশিয়াল সিনেমাটিই দেখা হয়েছে ৮ কোটি ৫০ লাখ বার। প্রামাণ্যচিত্র টাইগার কিংও দেখেছে ৬ কোটি ৪০ লাখ মানুষ। আর মানি হেইস্টের জ্বর তো নামছেই না!

৫. প্রতিদ্বন্দ্বী ডিজিনি প্লাস ও আমাজন প্রাইমের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এখনো সবচেয়ে বেশি মানুষের ঘরে ঢুকে পড়েছে নেটফ্লিক্স। তবে নতুন কনটেন্ট কমে যাওয়ায় সামনের দিনগুলোতে এই সাবস্ক্রাইবশনের হার কমতে পারে।

২৪ এপ্রিল নেটফ্লিক্সে মুক্তি পেয়েছে সাড়ে পাঁচশ কোটি টাকা বাজেটের বড় আয়োজনের ছবি এক্সট্রাকশন। ছবি: সংগৃহীত
২৪ এপ্রিল নেটফ্লিক্সে মুক্তি পেয়েছে সাড়ে পাঁচশ কোটি টাকা বাজেটের বড় আয়োজনের ছবি এক্সট্রাকশন। ছবি: সংগৃহীত

নেটফ্লিক্সের এমন চিত্রের বিপরীতে ২৪ এপ্রিল নেটফ্লিক্সে মুক্তি পেয়েছে ঢাকার ব্যাকড্রপে তৈরি সাড়ে পাঁচশ কোটি টাকা বাজেটের বড় আয়োজনের ছবি এক্সট্রাকশন। কিন্তু নেটফ্লিক্সের এক্সট্রাকশনের এই ঢাকাকে চিনতে পারছে না ঢাকাবাসী, চিনতে পারছে না বাংলাদেশের মানুষ। এমনকি এই সিনেমায় বলা বাংলাকেও কানে কেমন যেন 'বিদেশি বা কলকাতার বাংলার কাছাকাছি কিছু একটা' মনে হচ্ছে। বানান ভুল, আজগুবি গল্পসহ নানা অভিযোগে নেটফ্লিক্সের এই ছবি ট্রল আর মিম হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। মোটকথা, এই ছবি নিয়ে অনেক বাংলাদেশি সিনেমাপ্রেমীদের 'হাইপ' ছিল উঁচুতে, আর সিনেমা দেখে তাঁরা ফাটা বেলুনের মতো চুপসে গেছেন। হতাশ হয়ে ধপাস করে পড়েছেন মাটিতে। তাই মন ভালো নেই তাঁদের।