'আগুনের পরশমণি' গানের মিউজিক ভিডিওতে লকডাউন

অনিমা রায়। ছবি: ফেসবুক থেকে
অনিমা রায়। ছবি: ফেসবুক থেকে

এবার লকডাউনে পড়ল রবীন্দ্রাথের ১৬০তম জন্মদিন। কোয়ারেন্টিনে বলে জন্মদিন উদ্‌যাপন করবেন না রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী অনিমা রায়, তা–ই কী হয়! এই শূন্যতা আর হাহাকারের ভেতর রবীন্দ্রনাথের ‘আগুনের পরশমণি’ গানটি একেবারে ভিন্নভাবে নিয়ে এসেছেন তিনি। মিউজিক ভিডিওতে দেখা গেছে, ইতালি আর বাংলাদেশের ফাঁকা শহর আর রাস্তা। সংগীতায়োজন করেছেন দেবজ্যোতি মিশ্র। আর আজ গানটি ইউটিউবে প্রকাশিত হয়েছে ইমপ্রেস অডিও ভিশনের ব্যানারে।

গানটি সম্পর্কে অনিমা রায় বলেন, ‘রবীন্দ্রনাথকে ধারণ করেই বেঁচে আছি। বিশ্বের সব ধর্মের, সব কর্মের মানুষের আর্তি আজ একটি বিন্দুতে মিলেছে—শূন্যতা আর বিয়োগের অবসান! রবীন্দ্রনাথ তো তাঁর কাজের মাধ্যমে বিশ্বের মানুষকে ছুঁতে চেয়েছেন। তিনি সব সময়ের, সব মানুষের। রবীন্দ্রনাথের জন্মদিবসে মানব মনের হাহাকারের এই ধ্বনিকে আমি প্রকাশ করতে চেয়েছি আমার রবীন্দ্র আরাধনায়।’

এ ছাড়া অনিমা তাঁর অনলাইনের স্কুলের বাচ্চাদের একটি গান গেয়ে অডিও আর ভিডিও পাঠাতে বলেছেন। সেই ভিডিওগুলো নিয়ে রবীন্দ্রনাথকে শ্রদ্ধা জানিয়ে গান প্রকাশিত হবে। এ ছাড়া অনিমার স্কুলের নাচের শিক্ষার্থীরাও রবীন্দ্রনাথের গানে নাচের ভিডিও পাঠাবে। সেগুলো জোড়া দিয়ে হবে একটি নতুন ভিডিও। এভাবে ঘরে থেকেই নাচে, গানে চলবে রবীন্দ্রনাথের জন্মোৎসব।

অনিমা রায়। ছবি: ফেসবুক থেকে
অনিমা রায়। ছবি: ফেসবুক থেকে

অনিমার দুটো স্কুল। সুরবিহার সংগীত আর অঙ্কন পাঠশালা। দুটোকেই জুম ডটকমের মাধ্যমে নিয়ে এসেছেন অনলাইনে। এখন কেবল ঢাকা নয়, ময়মনসিংহ, কুমিল্লা, রাজশাহী, সিলেট থেকেও দলে দলে ছাত্ররা যোগ দিচ্ছে এই অনলাইন কোর্সে। অনিমার এই স্কুলে এখন পাঁচজন মার্কিন ছাত্রও আছে। তাদের সময়ের সঙ্গে মিলিয়ে রাতে ক্লাস নেওয়া হয়। অন্যদিকে বাংলাদেশি বাচ্চাদের দিনে অনলাইন স্কুল থাকায় তারা যথারীতি বিকেলের দিকে নাচ, গান, ছবি আঁকা, গিটার, কি–বোর্ড শেখে। শিগগিরই সিডনি থেকে অনিমার স্কুলে যোগ দেবে একজন গিটারের ছাত্র। অনিমার ভাষায়, ‘বাচ্চারা তো এমনিতেই মোবাইল, কম্পিউটার, লাপটপ ভালোবাসে। ওরা ব্যাপারটাতে খুবই আগ্রহী। সবাই বেশ মজা করেই ক্লাস করছে।’

শুরুতে অনিমা অনলাইন স্কুলের বিষয়ে অতটা আগ্রহ দেখাননি। কিন্তু তাঁর স্কুলের শিক্ষকদের কীভাবে চলবে? এটি ভেবেই শুরু করলেন। আর এখন তো এই অনলাইন পাঠাশালা বেশ চলছে। সঙ্গে সংসারের সব কাজও নিজ হাতে করতে হচ্ছে। সব মিলিয়ে ব্যস্ততায় কেটে যাচ্ছে অনিমার দিন, অনিমার রাত। তবে সামগ্রিকভাবে জাতিগত বিষণ্নতা বা শিল্পীর বৈশ্বিক হতাশা যে তাঁকে স্পর্শ করেনি, তা নয়।