ইত্যাদি যেন ঈদের আরেক নষ্টালজিয়া

ইত্যাদির মঞ্চে সংগীত শিল্পী মমতাজ, সুবীর নন্দী, খুরশীদ আলম এবং আজম খান । ছবি: ফাগুন অডিও ভিশনের সৌজন্যে।
ইত্যাদির মঞ্চে সংগীত শিল্পী মমতাজ, সুবীর নন্দী, খুরশীদ আলম এবং আজম খান । ছবি: ফাগুন অডিও ভিশনের সৌজন্যে।

ঈদকে লকডাউনে রেখে টিভির সামনে বসত বাংলার মানুষ। গত ৩০ বছরের রুটিন এটা। বেড়াতে গেলেও ঈদের পরদিন রাতে দল বেঁধে সবাই বসত বিটিভির সামনে। ঈদের নতুন জামা, রকমারি খাবার, ঘোরাঘুরির মতো গুরুত্বপূর্ণ অংশ বিটিভিতে ইত্যাদি উপভোগ করা। ঈদ আর ইত্যাদি যেন মিলেমিশে একাকার হয়ে আছে। এ যেন বাঙালির ঈদের নষ্টালজিয়া। 

নানা-নাতির 'টম অ্যান্ড জেরি'র মতো তর্কাতর্কি, বিদেশি নাগরিকদের মুখে বাংলা সংলাপে নাটক, নকুল কুমার বিশ্বাসের কণ্ঠে অনিয়মের বিরুদ্ধে তীর্যক গান, সচেতনতামূলক নাট্যাংশ মিলে বাঙালির অভ্যাসে পরিণত হয়েছে ইত্যাদি। নতুন সব গান পাওয়া যেত ইত্যাদির মঞ্চ থেকে, প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে উঠে আসা মমতাজ ও আকবরের মতো শিল্পীরা পরিচিতি পেয়েছিলেন এই মঞ্চ থেকেই। হাজার হাজার দর্শকের সরব উপস্থিতি ও নির্বাচিত দর্শকদের সরাসরি অংশগ্রহণ অনুষ্ঠানটিকে করে তুলেছিল আরও হৃদয়গ্রাহী। শুধু তা–ই নয়, এর নিয়মিত শিল্পীরা হয়ে উঠেছিলেন সাধারণ মানুষের আপনজন।

পুরোনো অনুষ্ঠানগুলো থেকে সংকলিত একটি পর্ব নিয়ে নির্মিত হচ্ছে এবারের ঈদের ইত্যাদি। ছবি:ফাগুন অডিও ভিশনের সৌজন্যে।
পুরোনো অনুষ্ঠানগুলো থেকে সংকলিত একটি পর্ব নিয়ে নির্মিত হচ্ছে এবারের ঈদের ইত্যাদি। ছবি:ফাগুন অডিও ভিশনের সৌজন্যে।

করোনা মহামারির কারণে এ বছর নতুন ইত্যাদি নেই। তার বদলে করোনাকালে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন ইত্যাদির টিম ও নির্মাতা হানিফ সংকেত। মাইকিং করে মানুষকে সচেতন করেছেন তাঁরা, ফ্যান পেজ থেকে ঘরবন্দী মানুষকে উজ্জীবিত করেছেন তিনি, দিয়েছেন ত্রাণ। মহামারির দিনে নিজেদের দায়বদ্ধতা থেকে কাজগুলো করেছেন তিনি। পাশাপাশি ভোলেননি ভক্তদের ঈদের আনন্দের কথাও। হানিফ সংকেত বলেন, 'নতুন ইত্যাদি করার চেয়ে সংকলন করা ছিল বেশি কষ্টসাধ্য। আগের ৭-৮টা অনুষ্ঠান থেকে বিভিন্ন আইটেম নিয়েছি, যাতে সেগুলো সমসাময়িক থাকে। বেশি পেছনে গেলে অনেককে চেনা যাবে না। তবে শুরু ও শেষ অংশের জন্য নতুন করে শুটিং করেছি।'

এ বছর ইত্যাদির শুটিং শেষ হওয়ার আগেই বাড়িতে ফিরে গেছেন বিদেশি নাগরিকেরা। প্রস্তুতি থাকা সত্ত্বেও কোনো প্রকার স্বাস্থ্যবিধি মেনেও শুটিং করেননি অনুষ্ঠানের নির্মাতা হানিফ সংকেত। ইত্যাদি মানেই হাজার হাজার মানুষের সম্মিলন। করোনায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি এড়াতে এ বছর নতুন ইত্যাদি উপহার দিতে পারছেন না তিনি। তবে পুরোনো অনুষ্ঠানগুলো থেকে সংকলিত একটি পর্ব নিয়ে নির্মিত হচ্ছে এবারের ঈদের ইত্যাদি। একটা মিনি সিনেমা, দুর্যোগকালের গান ও সচেতনতামূলক নানা বিষয় দেখা যাবে তাতে। সংকলিত ইত্যাদি হলেও এবারের ইত্যাদির শুরুতে এবং শেষে রয়েছে একটি বিশেষ চমক।
এবারের বিশেষ ইত্যাদি প্রচারিত হবে বিটিভি ও বিটিভি ওয়ার্ল্ড-এ ঈদের পর দিন রাত ৮টার বাংলা সংবাদের পর। ঈদের পরদিন রাত সাড়ে আটটায় আবারও দেখার সুযোগ থাকবে।