ঈদে মেয়েদের সঙ্গে দেখা হলো না শাবানার

সেকালের শাবানা ও একালের শাবানা। ছবি: ফেসবুক
সেকালের শাবানা ও একালের শাবানা। ছবি: ফেসবুক

‘জীবনে এমন ঈদ আসবে, কখনো ভাবিনি। কেমন যেন চারপাশ। কারও মধ্যে কোনো উচ্ছ্বাস নেই, উল্লাস নেই। এই ঈদ, যেখানে রং নেই, কোনো বর্ণ নেই।’ যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সি থেকে রোববার স্থানীয় সময় দুপুরে এভাবেই বলছিলেন শাবানা।

যুক্তরাষ্ট্রে রোববার মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদ উদ্‌যাপন হয়েছে। দেশবরেণ্য চলচ্চিত্র অভিনয়শিল্পী শাবানা পরিবারসহ সেখানে থাকেন। ছেলেকে নিয়ে ঈদের নামাজ জামাতে পড়েন শাবানার স্বামী ওয়াহিদ সাদিক। এবার ঘরের মধ্যে বাবা-ছেলে জামাত করে ঈদের নামাজ আদায় করেছেন।

শাবানা দুই মেয়ে এক ছেলে। মেয়েরা বিয়ে করে সংসারী। ঈদের সময়টায় তাঁদের সন্তান নিয়ে মা শাবানার সঙ্গে দেখা করেন। কখনো আবার একসঙ্গে ঈদ উদ্‌যাপনও করেন। কিন্তু করোনায় পরিস্থিতি সবকিছু পাল্টে যাওয়াতে তা আর সম্ভব না। শাবানা বলেন, ‘আমাদের ধর্মের সবচেয়ে বড় উৎসব। কত আনন্দ ও উৎসবে মেতে থাকি সবাই। এক মাস রোজা পালন করি, কী সুন্দর পরিবেশে। অথচ এবার সবকিছুই কেমন যেন, আনন্দ নেই। তাই ঘরে থেকেই সবাই ঈদটাকে উদ্‌যাপন করছে। অবশ্য আমাদের সবার সুস্থ থাকার জন্য, যা খুবই জরুরি। এটাকে মেনে নিতেই হয়েছে।’

শাবানা ও ওয়াহিদ সাদিক । ছবি: প্রথম আলো
শাবানা ও ওয়াহিদ সাদিক । ছবি: প্রথম আলো

শাবানা গত আড়াই মাস তাঁর বাড়ি থেকে বের হন না। বাসার খুব জরুরি প্রয়োজনে স্বামী ওয়াহিদ সাদিক বের হন। এরপর বাসায় ফিরে জীবাণুমুক্ত হয়ে, গোসল সেরে পরিবারের অন্যদের সঙ্গে দেখা করেন। শাবানা বলেন, ‘সবার মধ্যেই ভয়, অজানা আতঙ্ক—কবে এই ভয়ংকর করোনা থেকে মুক্ত হবে পৃথিবী। কবে মানুষ স্বাভাবিক জীবনে ফিরবে। সেই আশাহত দিন গুনছি।’

যুক্তরাষ্ট্রে থাকা শাবানা দেশের মানুষদের নিয়ে ভীষণ চিন্তিত। সবাইকে সাবধান ও সচেতন থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। পরিবেশ ও পরিস্থিতি যেহেতু অনুকূলে নয়, দেশের মানুষকে ঈদ উদ্‌যাপনে সরকারের বেঁধে দেওয়া নিয়ম অনুসরণ করার অনুরোধ করেছেন। শাবানা বলেন, ‘একদিন এই মেঘ কেটে যাবে। আমরা নিশ্চয় আবার স্বাভাবিক জীবন ফিরে পাব। সেই অনাগত সুন্দর ও স্বাভাবিক জীবনের জন্য আমাদের এবারের ঈদটাকে ঘরে বসে পরিবারের সবার সঙ্গে উদ্‌যাপন করতে হবে। বাইরে আড্ডা ও হইহুল্লোড় মোটেও করা যাবে না। ঘরে বসে প্রার্থনা করুক, সৃষ্টিকর্তা যেন সবাইকে এই কঠিন রোগ থেকে মুক্ত করে দেন। আর সময় কাটাতে বিনোদনের তো অনেক ধরনের অপশন আছে, সেখানে সময় কাটাতে পারেন।’

এদিকে ঈদের আগে শাবানা ও ওয়াহিদ সাদিক যশোরের কেশবপুরে নিজেদের গ্রামের পাঁচ শ পরিবারকে ঈদ উপহার পাঠান। নিজেদের এক আত্মীয়ের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র থেকে পাঠানো সেই উপহার কেশবপুরের অসচ্ছল ও অসহায় পরিবারের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়।