আমাদের ভেতরে এক, বাইরে আরেক রূপ

পার্থ বড়ুয়া। ছবি: সংগৃহীত
পার্থ বড়ুয়া। ছবি: সংগৃহীত

সংগীতাঙ্গনে চার দশকের জীবন পার করছেন পার্থ বড়ুয়া। ব্যান্ডের বাইরে এবারই প্রথম নিজের একক গানের অ্যালবাম নিয়ে হাজির হলেন এই সংগীতশিল্পী। নতুন অ্যালবাম নিয়ে কথা হলো তাঁর সঙ্গে।

ব্যান্ডের গানেই শ্রোতারা আপনাকে বেশি পেয়েছেন। নিশ্চয় একক গানের অ্যালবামের প্রস্তাবও পেয়েছিলেন?
আমি সব সময় ব্যান্ড সদস্যদের একক ক্যারিয়ারের বিপক্ষে। কারণ, ব্যান্ডের ভোকাল যখন একক ক্যারিয়ারে মনোযোগী হন, তখন ব্যান্ডের নিয়মিত কাজে ব্যাঘাত ঘটে। কেউ স্বীকার করুক আর না করুক, আমি সব সময় তা–ই মনে করি।

পার্থ বড়ুয়ার প্রথম একক গানের অ্যালবাম `মুখোশ` এর প্রচ্ছদ। ছবি-সংগৃহীত
পার্থ বড়ুয়ার প্রথম একক গানের অ্যালবাম `মুখোশ` এর প্রচ্ছদ। ছবি-সংগৃহীত

এতে কি ব্যান্ডের অন্য সদস্যরা নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন বলে মনে করেন?
বিষয়টি সে রকম না। তবে আমার পরিচিতি যখন ব্যান্ডের মাধ্যমে, তখন সবাইকে নিয়েই ভাবতে হবে। ব্যান্ডে কিন্তু ভোকাল সবচেয়ে বেশি ফোকাসড হন। এই সুযোগে ভোকাল আলাদা ক্যারিয়ার গড়তে শুরু করলে, আলাদাভাবে স্টেজ শো করলে ব্যান্ড ক্ষতিগ্রস্ত হবেই। আমিও যে আলাদা করে স্টেজ শো করিনি, তা নয়, তবে খুবই কম। খুব কাছের কেউ না হলে কিংবা বন্ধুবান্ধবের দাবি উপেক্ষা করতে না পেরে বাধ্য হয়েছি। আর তা ব্যান্ডের সদস্যদের অনুমতি নিয়ে করেছি। আর এ জন্যই আমি কোনো দিন একক অ্যালবাম করতে চাইনি।

এত বছর পর একক গানের অ্যালবাম তৈরির তাগিদ অনুভব করলেন কেন?
গানের মধ্যে সাধারণত বাণিজ্যিক যে অ্যাপ্রোচ থাকে, মুখোশ অ্যালবামের গানে তা নেই। এটা বিষয়ভিত্তিক গানের নিরীক্ষাধর্মী অ্যালবাম। বিষয়ভিত্তিক গানের অ্যালবাম শিল্পীদের সবাই করতেও চান না। আমি চেষ্টা করলাম।

অ্যালবামের নাম 'মুখোশ'?
আমরা সবাই কিন্তু মুখোশ পরে থাকি। আমাদের ভেতরে এক, বাইরে আরেক রূপ। তাই নাম রেখেছি মুখোশ। সাধারণত আমাদের গানে প্রেম ও ভালোবাসা থাকে প্রধান উপজীব্য, এখানে তা নেই।

পার্থ বড়ুয়া। ছবি: সংগৃহীত
পার্থ বড়ুয়া। ছবি: সংগৃহীত

নিজের প্রথম একক অ্যালবাম করতে গিয়ে ব্যান্ডের সদস্যদের পাশে পেয়েছেন?
ব্যান্ডের সবার সঙ্গে কথা বলেই এই অ্যালবাম করেছি। তারা আন্তরিকভাবে আমাকে সমর্থন জুগিয়েছে। অ্যালবামের প্রথম গানের ভিডিওতেও ব্যান্ডের সবাই আছে।

করোনায় বিনোদন অঙ্গন বেশ নাজুক পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছে। সংগীতাঙ্গন কতটা চাপের মধ্যে পড়েছে বলে মনে করেন?
মানুষের প্রধান সব প্রয়োজন মিটলেই বিনোদন, আমি তা–ই বিশ্বাস করি। মানুষের থাকা, খাওয়া ও বাঁচা নিয়ে যেখানে যুদ্ধ চলছে, বিনোদন সেখানে সেকেন্ডারি ইস্যু হবেই। জানি না সৃষ্টিকর্তা আমাদের ভাগ্যে কী রেখেছেন, হয়তো পরীক্ষা নিচ্ছেন।

এই সময়ে শিল্পীরা গান তৈরি করছেন। ভিডিও বানাচ্ছেন।
মন–মানসিকতা শক্ত রেখে নিজেদের চর্চাটা চালিয়ে যাচ্ছি। মানুষ কিন্তু গান শুনবেই, নাটক ও সিনেমা দেখবেই। তাই এই সংকটেও শিল্পীরা মনোবল ঠিক রেখে নতুন গান গাইছেন, বাসায় বসে গানের ভিডিও বানাচ্ছেন। শিল্পীরা ঘরে বসে অলস সময় না কাটিয়ে নিত্যনতুন মিউজিক নিয়ে ভাবতে পারেন। যেহেতু স্টেজ শোর ব্যস্ততা নেই, সরাসরি গানের অনুষ্ঠানের চাপ নেই, এখন নিজেদের ঝালিয়ে নেওয়ার সময়ও।