মানুষ এত নিষ্ঠুর হতে পারে!

বিনোদন জগতের তারারা প্রতিবাদ করছেন নিজ অবস্থান থেকে। ছবি: সংগৃহীত
বিনোদন জগতের তারারা প্রতিবাদ করছেন নিজ অবস্থান থেকে। ছবি: সংগৃহীত

বন থেকে লোকালয়ে এসেছিল হাতিটি। পেটে ছিল বাচ্চা। খাবারের খোঁজে সামনে থাকা আনারস খেয়েছিল মা হাতিটি। কিন্তু কিছু মানুষ সেই আনারসে ভরে রেখেছিল পটকাবাজি। হাতিটির মুখেই তা বিস্ফোরিত হয়। এক নদীতে দাঁড়িয়ে অসহায় আহত হাতিটি তিলে তিলে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। এই নিদারুণ মৃত্যুর ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের কেরালার পালাক্কাড় জেলায়, গত ২৭ মে। এর মধ্য দিয়ে নতুন করে সামনে এসেছে বন্য প্রাণীর প্রতি মানুষের নিষ্ঠুরতার বিষয়টি। তোলপাড় শুরু হয়েছে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে। বসে নেই বিনোদন জগতের তারারাও। প্রতিবাদ জানাতে ভারত ও বাংলাদেশের বিনোদন জগতের তারকারা বেছে নিয়েছেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম।

জয়া আহসান লিখেছেন, ‘দয়ালু হোন, দয়ালু হোন।’ ছবি: ফেসবুক থেকে
জয়া আহসান লিখেছেন, ‘দয়ালু হোন, দয়ালু হোন।’ ছবি: ফেসবুক থেকে

জয়া আহসান
প্রাণীদের জন্য বরাবরই বাংলাদেশ ও ভারতের কলকাতার জনপ্রিয় অভিনেত্রী জয়া আহসানের হৃদয় আর্দ্র হয়। প্রাণীদের প্রতি নিষ্ঠুরতার কোনো খবর পেলেই তিনি তা শেয়ার করে প্রতিবাদ জানান। মৃত হাতির দুটো ছবি শেয়ার করে জয়া আহসান লিখেছেন, ‘দয়ালু হোন, দয়ালু হোন।’ আর যাঁরা হাতিটির মৃত্যুর জন্য দায়ী, তাঁদের যথাযথ শাস্তির জন্য অনলাইন পিটিশনে অংশ নিতে আহ্বান জানিয়েছেন।

জন আব্রাহাম
ইনস্টাগ্রামে ওই অন্তঃসত্ত্বা হাতির মৃত্যুর খবর ও হাতির দুটি ছবি শেয়ার করে জন আব্রাহাম লিখেছেন, ‘আমি লজ্জিত যে আমি মানুষ। আমরা মানুষ। আমরা নিকৃষ্ট।’

শুভশ্রী চক্রবর্তী
‘একজন অন্তঃসত্ত্বা হিসেবে আমি অন্তঃসত্ত্বা হাতিটির কষ্ট বুঝতে পারি। ও কেবল ওর সন্তানকে বাঁচাতে চেয়েছিল। আমাদের তোমরা ক্ষমা কোরো না। অভিশাপ দাও। আমরা কেবল অভিশাপের যোগ্য।’

অক্ষয় কুমার
ইনস্টাগ্রামে অক্ষয় কুমার তাঁর ফেসবুক পেজে লিখেছেন, ‘পশুরাই অধিক মানুষ, মানুষেরাই অধিক পশু। হাতিটির সঙ্গে যা ঘটল, তা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। এই চূড়ান্ত নিষ্ঠুরতার সুষ্ঠু বিচার চাই।’

আনুশকা লিখেছেন, ‘পশু নির্যাতনের বিরুদ্ধে আরও কঠিন আইনের দাবি জানাই।’ ছবি: ফেসবুক
আনুশকা লিখেছেন, ‘পশু নির্যাতনের বিরুদ্ধে আরও কঠিন আইনের দাবি জানাই।’ ছবি: ফেসবুক

আনুশকা শর্মা ও বিরাট কোহলি
আনুশকা লিখেছেন, ‘পশু নির্যাতনের বিরুদ্ধে আরও কঠিন আইনের দাবি জানাই।’ অন্যদিকে আনুশকার জীবনসঙ্গী বিরাট কোহলি লিখেছেন, ‘যা জানলাম, তাতে আমার হৃদয় ভেঙে গেছে। প্রতিটি জীবন গুরুত্বপূর্ণ। আসুন, আমরা প্রাণীদের প্রতি দয়ালু হই।’

অর্জুন কাপুর
‘আজ মানুষ হিসেবে, মনুষ্যত্বের দৌড়ে আমরা আরও একবার ব্যর্থতার প্রমাণ দিলাম। আমরা অন্য কোনো প্রজাতিকে সহ্য করতে পারছি না। তাহলে নিজেরা একা একা কীভাবে টিকে থাকব? যা ঘটছে পৃথিবীতে, আমরা এসবেরই যোগ্য। আমদের আরও ভুগতে হবে।’

সাফা কবির
‘যে মানুষ কোনো কারণ ছাড়াই অন্য প্রাণীকে আঘাত করে, হত্যা করে, সে আর মানুষ থাকে না। পরিকল্পনা করে একটা অন্তঃসত্ত্বা হাতিকে মেরে ফেলতে কী পৈশাচিক সুখ পেল তারা। নিকৃষ্ট!’
নীল নীতিন মুকেশ
'একেই বোধ হয় বলে ধর্ষকামী সুখ (স্যাডিসটিক প্লেজার)। আর কত অভিশাপ আসবে আমাদের ওপর? ওপারে ভালো থেকো তোমরা। সবাই সবার কর্মফল ভোগ করবে।’

অক্ষয় কুমার তাঁর ফেসবুক পেজে লিখেছেন, হাতিটির সঙ্গে যা ঘটল, তা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। ছবি: ফেসবুক থেকে
অক্ষয় কুমার তাঁর ফেসবুক পেজে লিখেছেন, হাতিটির সঙ্গে যা ঘটল, তা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। ছবি: ফেসবুক থেকে

বরুণ ধাওয়ান
বরুণ ধাওয়ান ইনস্টাগ্রামে হাতি ও তার শাবকের কল্পিত ছবি পোস্ট করে পুরো ঘটনাটি বর্ণনা করে অনেক বড় একটা লেখা লিখেছেন। খুব সংক্ষেপে, ‘১৮ থেকে ২০ মাস পর হাতিটি তাঁর সন্তান জন্ম দিত। এভাবে মারাত্মক আহত হওয়ার পরও হাতিটি কারও কোনো ক্ষতি করেনি। কোনো বাড়ি, গাছ বা মানুষের এতটুকু ক্ষতি করেনি। ওরা মানুষকে বিশ্বাস করেছিল। কারণ, মানুষ অতীতে প্রাণীদের সাহায্য করেছে। আর আমরা তার কী মূল্য দিলাম! সে কেবল তীব্র যন্ত্রণায় পানিতে স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে ছিল। আর সেভাবেই মারা গেল। আমরা মানুষ? আরেকবার ভাবুন।’ জ্যাকুলিন ফার্নান্দেজ বরুণ ধাওয়ানের এই পোস্ট শেয়ার করেছেন।
শ্রদ্ধা কাপুর
ভাঙা হৃদয় নিয়ে শ্রদ্ধা কাপুর লিখেছেন, ‘কীভাবে সম্ভব! আমি সহ্য করতে পারছি না। মানুষ এত নিষ্ঠুর হতে পারে! অপরাধীদের কঠিনতম শাস্তি চাই।’