প্রায় সব হিট গানের পেছনেই তার ছোঁয়া

এস আই টুটুল ও তানিয়া আহমেদ। ছবি সংগৃহীত।
এস আই টুটুল ও তানিয়া আহমেদ। ছবি সংগৃহীত।

অসংখ্য জনপ্রিয় গানের গায়ক এস আই টুটুল। তিনি দেশের ভক্তদের কাছে গান দিয়েই পরিচিত। এই শিল্পীর অনেক জনপ্রিয় গান ভক্তদের মুখে মুখে ঘুরতে শোনা যায়। সেই জনপ্রিয় গানগুলোর পেছনের কথা স্মরণ করে এই গায়ক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখেন, ‘আমার প্রায় সব হিট গানের পেছনেই ছিল তার ছোঁয়া। এই মানুষটিকে নিয়ে আমার অনেক বড় একটা গল্প আছে, যদি পারি একদিন বলব।’ কথাগুলো এভাবে লিখে আমেরিকার ৫ জুন রাত ১২টা ১ মিনিটে স্ত্রীর জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানান তিনি। এই সংগীতশিল্পীর সহধর্মিণী অভিনেত্রী তানিয়া আহমেদের আজ জন্মদিন। 

করোনার এই সময়ে দুই তারকা এখন বিশ্বের দুই প্রান্তে অবস্থান করছেন। অভিনেত্রী তানিয়া আহমেদ আছেন আমেরিকায়। তাঁর আমেরিকা থেকে দেশে ফেরার কথা থাকলেও সেটা করোনায় আপাতত সম্ভব হয়ে উঠছে না। এস আই টুটুল এখন কুষ্টিয়া রয়েছেন। দূর থেকেই ফোনে জন্মদিনের শুভেচ্ছা বিনিময় হয়েছে তাঁদের। করোনার কারণে দুজনের কাছেই বিশেষ হয়ে থাকবে তাঁদের এই জন্মদিন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের স্ট্যাটাস ধরেই অভিনেত্রী তানিয়া আহমেদের কাছে শুনতে চাইলাম সেই অবদানের গল্প। এই অভিনেত্রী আমেরিকা থেকে মুঠোফোনে জানান, ‘আমি তো গানের মানুষ না। গানের সুর, ছন্দ তো আমি বুঝব না। টুটুল যখন কাজ করেছে, তখন সে আমাকে জিজ্ঞাসা করলে হয়তো আমি তাকে কিছু সাজেশন দিতাম। আমি প্রতিদিন ২–৩ ঘণ্টার বেশি গান শুনি। বেগম আক্তার থেকে হালের অনেক নতুন দেশ–বিদেশের শিল্পী এই তালিকায় আছে। আমি গানের মানুষ না হয়েও সব সময় গানের কী ট্রেন্ড চলছে, সেটার আপডেট জানার চেষ্টা করি। গান শুনে বুঝতে পারি। আমি গাইতে পারব না, কিন্তু গান নিয়ে বলতে পারার কিছুটা আইডিয়া আমার গান শোনার অভিজ্ঞতা থেকে হয়েছে। টুটুল নতুন গান নিয়ে যখন কিছু জানতে চাইত, তখন আমি সেই অভিজ্ঞতা থেকেই যতটা পারা যায় তাকে সহায়তা করার চেষ্টা করেছি। সেগুলো সে একসেপ্ট করেছে। বাট কিয়েশন তো ওকেই করতে হয়েছে। এখানে পুরোটাই ডেফিনেটলি ওর ক্রেডিট। তার হিট গানের পেছনে আমার ক্রেডিট ১০ ভাগ, টুটুলের ক্রেডিট ৯০ ভাগ। টুটুল একটু বাড়িয়ে বললেও আমার অবদান ২০ ভাগের বেশি হবে না।’

পরিবারের সঙ্গে তানিয়া আহমেদ ও এস আই টুটুল। ছবি সংগৃহীত।
পরিবারের সঙ্গে তানিয়া আহমেদ ও এস আই টুটুল। ছবি সংগৃহীত।

বিশেষ এই দিনে স্ত্রীকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে খোলা চিঠিতে শুরুতেই এই গায়ক লেখেন, ‘এই মানুষটি আমার জীবনের খুবই গুরুত্বপূর্ণ একজন। যার অনুপ্রেরণার শক্তিতে আজ আমি এখানে। যিনি না হলে আমি বাবা হওয়ার মতো বিশাল আনন্দটা কী জানতে পেতাম না, যা ছিল আমার জীবনের একটি শ্রেষ্ঠ মুহূর্ত। আমার সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনা, গান ও সুরের মাঝে যার অবাধ যাতায়াত।’ বিশেষ এই দিনটিতে প্রায় প্রতিবছর রাতের প্রথম প্রহরেই স্বামী–সন্তান নিয়ে কেক কাটতেন। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘দেশে থাকলে বাচ্চা, টুটুলসহ আমরা কেক কাটতাম। সে (টুটুল) তার মতো করে আমার জন্মদিন পালন করত। এখন আগের মতো আবেগময় হয়ে জন্মদিন পালন করবে আমার ছেলেটা। আমাদের মধ্যে বাচ্চা হয়ে যাওয়ার পর জন্মদিনের সেই বিষয়গুলো সেভাবে থাকে। আগে দেশে থাকলে জন্মদিনের আগ্রহ নিয়ে রাতে ছুটে আসতেন অনেকেই।’

এই অভিনেত্রী করোনায় আমেরিকায় এখনো সচেতনতায় গৃহবন্দী হয়ে আছেন। খুব একটা বের হন না। জন্মদিনটিতে নেই কোনো চাকচিক্য। দেশের জন্মদিনের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, ‘দেশে থাকলে আমার কিছু কাছের মানুষ আছে, যারা জন্মদিন নিয়ে বাসায় একটা আয়োজন করে থাকে। ভালো সময় কাটে। দেশের বাইরে বাচ্চাদের নিয়ে কষ্ট করছি। তবে দূরে থেকে ফিল করছি কে ভালোবাসে, কে ভালোবাসে না। বুঝতে পারছি কে মনে রেখেছে, কে রাখেনি। কারা মিস করছে, সেটা বোঝা যায়। এখানে ভালো–খারাপ মিলিয়ে জন্মদিন পালন করছি। আমরা যে বাসায় আছি সেখানে আমার কাজিনরা, ছেলে কিছুটা আয়োজনের চেষ্টা করেছে। এখন এই দেশে রায়ট এবং বাংলাদেশের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে মন ভালো নেই।’

এস আই টুটুল জানান, ‘তার এই শুভ জন্মদিনে বাংলাদেশ থেকে জানাই অনেক দোয়া, শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা। পরম করুণাময়ের দয়ায় তারা ভালো থাকুক, থেকো, সুস্থ থাকুক, কাজ শেষ হলেই ফিরে এসো। দেশে তোমার সবাই তোমারই অপেক্ষায়।’