'বর্ণবাদী' অভিযোগে সরিয়ে নেওয়া হলো 'গন উইথ দ্য উইন্ড'

‘গন উইথ দ্য উইন্ড’ ছবির পোস্টার। ছবি: আইএমডিবি
‘গন উইথ দ্য উইন্ড’ ছবির পোস্টার। ছবি: আইএমডিবি

সমালোচনার মুখে যুক্তরাষ্ট্রের স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম এইচবিও ম্যাক্স থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে ‘গন উইথ দ্য উইন্ড’। এইচবিও ম্যাক্স জানায়, ১৯৩৯ সালের ‘গন উইথ দ্য উইন্ড’ সেই সময়ের একটি আইকনিক সৃষ্টি । কিন্তু এটা সত্যি যে সেখানে ‘ইতিহাসের অংশ হিসেবে’ শ্রেণিবৈষম্য ও বর্ণবাদ দেখানো হয়েছে।

বিবিসির প্রতিবেদন অনুসারে, এখন সরিয়ে নিলেও কিছুদিন পর আবারও এইচবিও ম্যাক্স স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মে ফিরিয়ে আনা হবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। সে ক্ষেত্রে তখন আপত্তিকর অংশগুলোর ঐতিহাসিক পরিপ্রেক্ষিত বর্ণনা করে নিচে সাবটাইটেল যাবে, যাতে ভুল–বোঝাবুঝির সৃষ্টি না হয়।

সর্বকালের সেরা রোমান্টিক সিনেমাগুলোর অন্যতম জনপ্রিয় ছবি ‘গন উইথ দ্য উইন্ড’। মুদ্রাস্ফীতিকে আমলে নিলেও এটি ইতিহাসের সর্বোচ্চ ব্যবসা করা ছবি। এই ছবি নিয়ে বরাবরই সমালোচনা আর বিতর্ক ছিল। দাসপ্রথাকে ছবিতে যেভাবে দেখানো হয়েছে, তাকে মেনে নিতে পারেননি অনেকেই। সমালোচকেরাও এই ছবি নিয়ে বারবার প্রতিবাদমুখর হয়ে উঠেছেন। তবে, কর্তৃপক্ষের দাবি, আপত্তিকর অংশ কেবলই তৎকালীন সামাজিক বাস্তবতাকে তুলে ধরার জন্য, কখনোবা কেবলই গল্পের প্রয়োজনে। এই ছবির মাধ্যমে বর্ণবাদী দাসপ্রথাকে সমর্থনের কোনো প্রশ্নই আসে না। তবে এসব কথায় মন গলেনি সমালোচকদের।

‘টুয়েলভ ইয়ারস আ স্লেভ’–এর লেখক জন রিডলি লস অ্যাঞ্জেলেস টাইমসে লিখেছেন, ‘গন উইথ দ্য উইন্ড’ ছবিটি অবশ্যই সরিয়ে নেয়া উচিত। ছবিটি দাসপ্রথার মানবাধিকার লঙ্ঘন করা ভয়ংকর নির্যাতন ও ত্রাসকে উপেক্ষা করেছে। কৃষ্ণাঙ্গ মানুষের জীবনে সবচেয়ে বেদনায়ক ইতিহাসকে প্রচলিত ধারায় সেলুলয়েডের পর্দায় জীবন্ত করে রেখেছে।’এইচবিও অবশ্য মানতে নারাজ। তারা এক আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে বলে, ‘ছবির যে দৃশ্যগুলোতে বর্ণবিদ্বেষকে উৎসাহ দেওয়া হয়েছে বলে বলা হচ্ছে, সেই দৃশ্যগুলো আমরা সরাতে চাই না। কারণ, তাতে ইতিহাসটাই মুছে ফেলা হবে। আমরা যদি ভবিষ্যতে পরিবর্তন দেখতে চাই, তাহলে আগে আমাদের ইতিহাসটা মেনে নিতে হবে।’ তবে পরিস্থিতি বিচার করে, সময়ের দাবি মেনে সাময়িকভাবে হলেও এইচবিও কর্তৃপক্ষ ছবিটি নামিয়ে নিয়েছেন।

‘গন উইথ দ্য উইন্ড’ ছবির একটি দৃশ্য। ছবি: আইএমডিবি
‘গন উইথ দ্য উইন্ড’ ছবির একটি দৃশ্য। ছবি: আইএমডিবি

মার্গারেট মিশেলের উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত ‘গন উইথ দ্য উইন্ড’ ছবিতে দাসপ্রথা উচ্ছেদের পরও মালিকের প্রতি দাসের বিশ্বস্ত আনুগত্য দেখানো হয়েছে। হ্যাতি ম্যাকডানিল প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ হিসেবে এই ছবির জন্য প্রথমবারের মতো একাডেমি অ্যাওয়ার্ডের জন্য মনোনীত হন ও অস্কার জেতেন।

পুলিশি নির্যাতনে যুক্তরাষ্ট্রে জর্জ ফ্লয়েড নামের এক কৃষ্ণাঙ্গের মৃত্যুর পর গত ২৫ মে থেকে দেশটিতে বর্ণবাদবিরোধী বিক্ষোভ চলছে। এরই অংশ হিসেবে বর্ণবাদী অভিযোগে এইচবিও ম্যাক্স থেকে সরিয়ে নেওয়া হলো ‘গন উইথ দ্য উইন্ড’।