পপির আফসোস, পপির আক্ষেপ

সাদিকা পারভীন পপি। ছবি: সংগৃহীত
সাদিকা পারভীন পপি। ছবি: সংগৃহীত

লকডাউনে গ্রামের বাড়ি খুলনায় বেড়াতে গিয়ে সেখানে আটকে যান নায়িকা সাদিকা পারভীন পপি।। কর্মক্ষেত্র ঢাকায় আর ফেরা হয়নি। এ নিয়ে আফসোস নেই তাঁর। বাড়ির সদস্যদের সঙ্গে একটা মমতাপূর্ণ সময় পার করছেন তিনি।

শহরের বাইরে না গেলেও বাড়ির বাইরে বের হয়েছিলেন ঢালিউড তারকা পপি। মানুষকে সচেতন করতে পথে পথে মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার বিতরণ করেছেন সাধ্যমতো। সামাজিক দায় এড়িয়ে ঘরে বসে থাকা তাঁর মতো নায়িকার সাজে? তবে বাড়ির বাইরে যাওয়ার নানা বিড়ম্বনা থাকে। প্রথম আলোর সঙ্গে ফোনালাপে বলছিলেন সে কথা। স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে জানান, বাড়ির সামনেই খুলনা নিউমার্কেট। ক্যারিয়ার যখন তুঙ্গে, তখন একবার মার্কেটের ভেতরে গিয়েছিলেন তিনি। ভক্ত ও আগ্রহীদের এমন হুড়োহুড়ি বেঁধে গেল যে সেদিনের মতো মার্কেট বন্ধ করে দিতে হয়েছিল।

পপি l ছবি: প্রথম আলো
পপি l ছবি: প্রথম আলো

এ বছর সিনেস্পট নামের একটি অ্যাপে মুক্তি পায় পপির প্রথম ওয়েব সিরিজ 'ইন্দুবালা'। দেশে ওয়েব সিরিজের সূচনালগ্নে কাজ করতে পেরে একটু আনন্দিত, একটু গর্বিত তিনি। ওয়েব সিরিজ ধারণাটি তাঁর কাছে ভালোই লেগেছে। চাইলেই ভেঙে ভেঙে দেখা যায়, এটা একটা সুবিধা বটে। যদিও তিনি মনে করেন নিরবচ্ছিন্নভাবে একটা গল্প দেখার অন্য রকম একটা আনন্দ ও অর্থ আছে। তাই নিজের এত ভালো একটা কাজ বড় পর্দা বা টেলিভিশনে মুক্তি পায়নি বলে একটু আফসোস আছে পপির। তবে তিনি এ–ও মানেন, পৃথিবীতে প্রদর্শনের ধারণা বদলে গেছে।

সাদিকা পারভীন পপি। ছবি: সংগৃহীত
সাদিকা পারভীন পপি। ছবি: সংগৃহীত

শহীদুল ইসলাম খোকন, সোহানুর রহমান সোহানদের মতো বড় পরিচালকদের সঙ্গে কাজ করে ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন পপি। অনেক হিট ছবির এই নায়িকা এখন তরুণ নির্মাতাদের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী। শিল্পী হিসেবে বড় বা ছোট পর্দা কোনো মাধ্যমই তাঁর কাছে কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। তিনি বলেন, 'তরুণ নির্মাতাদের দেখা যায় টেলিভিশন–সংশ্লিষ্ট শিল্পীদের নিয়েই বেশি কাজ করেন। আমার দেখা বেশ কয়েকজন তরুণ নির্মাতা আছে, যারা মেইনস্ট্রিম শিল্পীদের কাছ থেকে কাজ বের করে আনতে পারে।'

কিন্তু চলচ্চিত্রের সেই আগের অবস্থা নেই। শিল্পীরা বেকার ও অসহায় হয়ে পড়ছেন ক্রমে। এই করোনাকালেও নানাভাবে তাঁদের সাহায্য করতে হয়েছে শিল্পী সমিতিকে। এ নিয়ে নিজের আক্ষেপের কথা জানালেন পপি। তিনি বলেন, 'সমিতির কর্মকাণ্ড নিয়ে আমার আপত্তি আছে। শিল্পীরা কখনো দুস্থ হয় না। হয়তো সাময়িক অসুবিধা বা অভাবে থাকে। তাদের সামান্য খাবার দিয়ে ছবি তুলে সেসব রেখে দেওয়া, গণমাধ্যমে প্রচার করাটা আমার কাছে অপমানজনক ও আপত্তিকর মনে হয়েছে। শিল্পীদের ব্যাপারে মানুষের আগ্রহ এমনিতেই একটু বেশি। তাদের দান করতে হলেও কাজটা গোপনে করা যেত।'

`গার্ডেন গেম` ওয়েব সিরিজে অভিনয় করেছেন পপি। ছবি: সংগৃহীত
`গার্ডেন গেম` ওয়েব সিরিজে অভিনয় করেছেন পপি। ছবি: সংগৃহীত

খুলনা থেকে সহসাই ফিরবেন না পপি। কারণ জানতে চাইলে জানান, করোনায় সারা পৃথিবী আক্রান্ত। ঢাকা বা খুলনা সব জায়গাই সমান ঝুঁকিপূর্ণ। এই সময়টা বরং কাছের মানুষদের সঙ্গেই কাটাতে চান তিনি। তা ছাড়া ঢাকার ফ্ল্যাটের চেয়ে নিজেদের বাড়ির পরিসরটা বেশ বড়, দম নেওয়ার জন্য ভালো। তিনি বলেন, 'ঢাকায় এই পরিবেশ কোথায় পাব?'

দুটো সিনেমা নিয়ে পপির কথাবার্তা চলছিল দুজন পরিচালকের সঙ্গে। করোনার কারণে সবকিছু থেমে আছে। সবকিছু স্বাভাবিক হলে হয়তো আবারও ক্যামেরার সামনে দাঁড়াবেন