সুশান্তর শোকে কৃতির আবেগঘন মন্তব্য, ছবি

ইনস্টাগ্রামে এই ছবি দিয়ে কৃতি শ্যানন তাঁর আবেগ প্রকাশ করেছেন।
ইনস্টাগ্রামে এই ছবি দিয়ে কৃতি শ্যানন তাঁর আবেগ প্রকাশ করেছেন।

‘হারায়ে বুঝেছি তুমি কী ছিলে আমার, কী ছিলে আমার তুমি বোঝানো না যায়...।’ জনপ্রিয় ব্যান্ড তারকা আইয়ুব বাচ্চুর গানটিই সবার আগে মনে পড়ল বলিউড তারকা কৃতি শ্যাননের ইনস্টাগ্রামের দেওয়া ছবি আর লেখাটি পড়ে। সুন্দর একটি ছবি, আবেগভরা কথা। যে কথায় বুঝতে বাকি থাকে না, কতটা কাঁদছে কৃতির অন্তর। কত বেদনা লুকিয়ে ছিল তাঁর ভেতর। অবশ্য কৃতি শ্যাননের সঙ্গে সুশান্ত সিং রাজপুতের সম্পর্কের কথা কে না জানত!

যে ছবি কৃতি দিয়েছেন, তারপর আর কোনো লেখা না লিখলেও পারতেন। সে ছবিই বলে দেয় অনেক কথা, কোনো কথা না বলে। পানির নিচে তাঁরা। গভীর আবেশে পরস্পর জড়িয়ে আছেন। কী সুন্দর!

বলিউডের আকাশে অকালে খসে পড়া উজ্জ্বল তারা সুশান্ত সিং রাজপুত। তাঁর চলে যাওয়ায় অগণিত মানুষের কান্না। তবে এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না, সবচেয়ে আলাদা যেন সাবেক প্রেমিকাদের আবেগ। ভেঙে পড়েছেন অঙ্কিতা লোখান্ডে। গতকাল মঙ্গলবার সুশান্তদের বাড়ি গিয়ে হু হু করে কাঁদলেন। ভারতীয় বিভিন্ন গণমাধ্যম সেসব ছবি ও খবর প্রকাশ করেছে। ভেঙে পড়লেন সুশান্ত সিং রাজপুতের আরেক ‘সাবেক’ কৃতি শ্যাননও, যা নিজের ইনস্টাগ্রাম ওয়ালেও শেয়ার করতে এতটুকু অস্বস্তি বোধ করেননি; বরং যেন একটু হালকাই হলেন।

কৃতি শ্যাননের সঙ্গে সুশান্তের আলাপ ‘রাবতা’ ছবির সেটে। সে ছবি অবশ্য সাড়া ফেলতে পারেনি। কিন্তু সাড়া ফেলেছে সুশান্ত আর কৃতির অন্তরে। শুরু হয় মন দেওয়া–নেওয়া। প্রেম। সেই প্রেম এত বড় ছিল যে প্রথম প্রেম (প্রকাশ হওয়া) অঙ্কিতাকেও ভুলে যান সুশান্ত। যে অঙ্কিতা সুশান্তর সঙ্গে সংসার করবেন বলে প্রায় ছেড়েই দিয়েছিলেন বিনোদনজগৎ।

কৃতি, যাঁর প্রেমে মজে পুরোনো প্রেমিকা অঙ্কিতার দেখা ঘরের স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে চাননি সুশান্ত। শোনা যায়, ‘রাবতা’ সিনেমার সেটে এসে নাকি সুশান্তকে সাবেক প্রেমিকা অঙ্কিতা লোখান্ডে সবার সামনে কষে চড়ও মেরেছিলেন। অবশ্য সেই বড় প্রেম দূরেও ঠেলে দিয়েছিল। ‘রাবতা’ বক্স অফিসে মুখ থুবড়ে পড়ল। তার কিছুদিন পর শোনা গেল, সুশান্ত আর কৃতির সম্পর্কেও চিড় ধরেছে।

কৃতি শ্যানন আর সুশান্ত সিং রাজপুত—সবই এখন স্মৃতি। ছবি: ইনস্টাগ্রাম
কৃতি শ্যানন আর সুশান্ত সিং রাজপুত—সবই এখন স্মৃতি। ছবি: ইনস্টাগ্রাম

মৃত্যুর পরে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে শত্রুতা ভুলে যায় মানুষ। কৃতির যেমন মনে পড়েছে শুধু বন্ধুতাই। গত সোমবার সুশান্তের শেষকৃত্যে উপস্থিত ছিলেন। থাকার পর গতকাল সোশ্যালে শ্যাননের আবেগভরা মন্তব্য। তিনি লিখেছেন, ‘সুশ, আমি জানতাম, তোমার মন যেমন তোমার সবচেয়ে ভালো বন্ধু, তেমনি তোমার খুব খারাপ শত্রুও। তোমার সেই মন আজ আমাকে একেবারেই ভেঙে দিয়ে চলে গেল! যেই তুমি নেই শুনলাম, মনে হলো আমার হৃদয়ের অর্ধেকটা হারিয়ে ফেললাম! খুব কষ্ট হলো জেনে। এমন একটা সময়ও তোমার গেছে, যখন বাঁচার চেয়ে মরে যাওয়াটাই সহজ হয়ে উঠেছিল!’

কৃতি আরও লিখেছেন, ‘তুমি যদি সবাইকে এভাবে না সরিয়ে দিতে...আমি যদি যন্ত্রণায় ভেঙে টুকরো হয়ে ছড়িয়ে যাওয়া তোমার মন জোড়া লাগাতে পারতাম...যদি তোমার ব্যথার প্রলেপ হয়ে উঠতে পারতাম...আমি পারি না...কত কিছু ভাবি...তোমার জন্য আমার প্রার্থনা কখনো শেষ হবেনা!’

কৃতির এ মন্তব্যে আজ বুধবার সকাল পর্যন্ত ৩৮ লাখের বেশি মানুষ নানাভাবে অনুভূতি প্রকাশ করেছে।

আর ওই দিকে তিক্তবিরক্ত হয়ে কৃতি শ্যাননের বোন নূপুর শ্যানন একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন। সুশান্তের আত্মহত্যার পর অনেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁর সাবেক প্রেমিকাদের প্রতিক্রিয়া জানার জন্য অস্থির হয়ে ক্ষুব্ধতা প্রকাশ করেছেন। তাঁদেরই একহাত দেখে নিয়েছেন বোন নূপুর শ্যানন।

লিখেছেন, ‘সবাই দেখি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষণ্নতা বিশেষজ্ঞ হয়ে উঠছে। আমাদের বাজে বাজে বার্তা পাঠিয়ে, টুইট করে, আজেবাজে মন্তব্য করে সবাই জানাচ্ছে, সুশান্তের জন্য তাদের হৃদয় ভেঙে যাচ্ছে। “একটা মানুষ মরে গেল, আর আপনারা একটা কথাও বললেন না!”, “আপনারা এতটাই হৃদয়হীন, স্বার্থপর”, “একটা পোস্টও করলেন না, টুইটও না, সময় মেলেনি বোধ হয়!” এসব পোস্টের মানে কী! আপনাদের যদি অনুমতি থাকে তো একটু কাঁদি? আমাদের কি একটু শান্তিতে কাঁদারও অধিকার নেই? একটু কাঁদতে দিন, প্লিজ।’