ফ্লয়েড স্মরণে নিজের কবিতা আবৃত্তি করলেন আসাদুজ্জামান নূর

আসাদুজ্জামান নূর।  ছবি: প্রথম আলো
আসাদুজ্জামান নূর। ছবি: প্রথম আলো

অভিনেতা ও আবৃত্তিকার হিসেবেই আসাদুজ্জামান নূরের পরিচিতি ও জনপ্রিয়তা। যুক্তরাষ্ট্রে কৃষ্ণাঙ্গ হত্যার ঘটনার প্রতিবাদে কলম তুলে নিয়েছেন তিনি। পরে নিজেই সেটি আবৃত্তি করেছেন।

‘আমাকে নিশ্বাস নিতে দাও/ আমার কালো চামড়ার নিচে লাল রক্ত/ তাজা গোলাপের মতো ফুসফুস/ একটি একটি করে পাপড়ি ঝরে যাচ্ছে/ আমাকে নিশ্বাস নিতে দাও...।’ এই হলো আসাদুজ্জামান নূরের লেখা ‘কালো মানুষটাকে নিশ্বাস নিতে দাও’ কবিতার কয়েকটি পঙ্‌ক্তি। যদিও একে তিনি কবিতা বলতে নারাজ; তিনি মনে করেন, কবিতা লেখা কঠিন কাজ।

আসাদুজ্জামান নূর বলেন, ‘অনলাইনে ঘটনাটির ভিডিও ও ছবি দেখে আমি ভীষণ মর্মাহত হই। এভাবে মানুষ মানুষকে মারে! প্রথমেই প্রশ্ন জেগেছে মনে, আমরা সভ্য হচ্ছি, নাকি আধুনিকতার চকচকে আবরণে দিনকে দিন নিজেদের আরও অসভ্য করে তুলছি। মানুষ হত্যার চেয়ে ঘৃণ্য আর কিছু হতে পারে না। একসময় মনের তাড়নায় লিখতে বসি। লেখাটা প্রথমে মেয়ে ও পরিবারের অন্যদের দেখাই। তাঁদের ভালো লাগে। পরে ঠিক করি, এটা আবৃত্তি করব। কবিতা লিখতে জানি না বটে, কিন্তু এই কাজ তো জানি। করোনার ক্রান্তিকাল চলছে বলেই হয়তো এত বড় একটা ঘটনা নিয়ে আমাদের দেশে তেমন কিছু হয়নি। কিছু করা দরকার ভেবে স্টুডিওতে গিয়ে আবৃত্তি করেছি। শেষ পর্যন্ত মনে হয়েছে, খারাপ হয়নি। আমি একে কবিতা দাবি করছি না। এটা কবিতা হয়েছে কি না, জানি না।’

ছাত্রজীবনে কবিতা লেখার অভ্যাস ছিল আসাদুজ্জামান নূরের। পরে আর লেখা হয়নি। তিনি বলেন, ‘কিছু ভালো লাগলেই আমি সেটা করি। যেটা করতে বেশি কষ্ট হয়, সেটা আর চেষ্টা করি না। কবিতা লেখাটা কষ্টের কাজ।’

এর আগে করোনা উপদ্রুত পৃথিবী নিয়ে কামাল চৌধুরীর কবিতা ‘তোমার পৃথিবী চিনতে পার না’ শিরোনামে আরেকটি কবিতা আবৃত্তি করেছেন নূর। আবৃত্তিটি নিয়ে নির্মিত হয় একটি ভিডিও চিত্র, যেটি নিজেদের ফেসবুক পেজে প্রকাশ করেছিল সংবাদমাধ্যম ভয়েজ অব আমেরিকা। ধ্বনিচিত্রের ওই ভিডিওর শেষ অংশে কবিতার কয়েকটি চরণ গেয়েছেন শিল্পী নকীব খান, সুর ও সংগীত পরিচালনা করেছিলেন শিল্পী নিজেই। আর সংগীতায়োজন করেছেন বাপ্পা মজুমদার।

গত ২৫ মে যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশি হেফাজতে নিহত হন আফ্রিকান-আমেরিকান সাবেক বাস্কেটবল খেলোয়াড় জর্জ ফ্লয়েড। এই কৃষ্ণাঙ্গের মৃত্যুর ঘটনায় প্রতিবাদে ফেটে পড়ে দেশটি।

করোনার লকডাউন উপেক্ষা করে রাজপথে নেমে আসে মানুষের জোয়ার, যার ঢেউ এসে লাগে বাংলাদেশেও। সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও সাংসদ আসাদুজ্জামান নূর লিখে ফেলেন কবিতা। এর আগে তিনি মিনার বসুনীয়ার লেখা ‘ঈশ্বর হোক সবার’ কবিতাটি আবৃত্তি করেছেন এপ্রিল মাসে।

জর্জ ফ্লয়েডকে নিয়ে কবির বকুলের লেখা গানে কণ্ঠ দেন গণসংগীতশিল্পী ফকির আলমগীর। একটি গান বেঁধেছেন ফারজানা ওয়াহিদ সায়ানও।