লকডাউনে যে কারণে সবজি বিক্রি করছেন বলিউড অভিনেতা

সবজি বিক্রেতা সেজে টিকটক ভিডিও বানান জাভেদ হায়দার। ছবি: টিকটক থেকে
সবজি বিক্রেতা সেজে টিকটক ভিডিও বানান জাভেদ হায়দার। ছবি: টিকটক থেকে

করোনাভাইরাস মানুষের জীবন বদলে দিয়েছে। কতটা বদলেছে? যেমন ধরুন, বলিউড তারকা আমির খান বা সালমান খানের সহশিল্পী জাভেদ হায়দার এখন পাড়ার মোড়ে ভ্যানের ওপর সবজি বিক্রি করছেন বেঁচে থাকার তাগিদে। অবশ্য আর্থিক সংকটে পড়ে নয়। লকডাউনে দুশ্চিন্তা থেকে দূরে থাকতে, নিজেকে ব্যস্ত রাখতে আর মজার কিছু করতেই সবজি বিক্রি করছেন তিনি। সবজি বিক্রি করতে করতেই টিকটক ভিডিও বানাচ্ছেন আর বলিউডের বড় পর্দার সংলাপ আওড়ে বলছেন, ‘জীবনে কোনো কাজ ছোট নয়। আর কাজের চেয়ে বড় কোনো ধর্ম হয় না।’

বড় বা ছোট পর্দার এই অভিনয়শিল্পী ক্ষুদ্র পর্দায় (মাইক্রো ক্রিনে), বিনোদনমূলক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টিকটকে তিনি বেশ জনপ্রিয়। সবজি বিক্রি করতে করতে তাঁর বানানো টিকটক ভিডিওগুলো হাজারের গণ্ডি পেরিয়ে দেখা হয়েছে লাখ লাখবার। সেখানে রঙিন শার্ট পরে কখনো পেঁয়াজ, আলু, টমেটো বিক্রি করতে দেখা গেছে, কখনোবা ভ্যান ভর্তি ক্যাপসিকাম, ব্রকোলি, ফুলকপি, বিট নিয়ে গান গাইছেন জাভেদ। বৃদ্ধা মায়ের সঙ্গেও বেশ কয়েকটি টিকটক ভিডিও করতে দেখা গেছে তাঁকে। একটা টিকটক ভিডিওতে জাভেদকে এভাবেও বলতে দেখা গেছে, ‘লোকে বলে, আমি হয়তো বলিউড তারকা হতে পারতাম। কিন্তু ওরা জানে না, বলিউড তারকা হতে গেলে মেধা আর পরিশ্রমের সঙ্গে ভাগ্যও লাগে। হয়তো বলিউড তারকা হলে আমি একজন তারকা হতাম ঠিকই, কিন্তু আজ পরিবারকে সঙ্গে নিয়ে এতটা সুখী হতাম না। হয়তো আমার পরিবার থেকে দূরে চলে যেতাম।’ হেসে ওই ভিডিও শেষ করলেন এভাবে, ‘কই, আমি তো অসুখী নই। দিব্যি কেটে যাচ্ছে।’ কিন্তু এসবই কেবল টিকটক ভিডিওর জন্য করা।

‘সেই জাভেদ হায়দার এখন সবজি বিক্রেতা’—এমন খবর গণমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে টাইমস অব ইন্ডিয়ার সঙ্গে কথা বলেন এ অভিনয়শিল্পী। বলেন, ‘আমি সত্যি সত্যি সবজি বিক্রি করছি না। টিকটক ভিডিও বানানোর জন্য করছি। এই লকডাউনে নিজেকে ব্যস্ত রাখার জন্য, হতাশামুক্ত রাখার জন্য করছি। আমার মেয়ে টিকটক ভিডিও বানায়। ওকে দেখে মনে হলো, আমিও তো সময়টা এভাবে কাজে লাগাতে পারি। মানুষ কাজের অভাবে হতাশায় আত্মহত্যা করছে, আমি এভাবে নিজেকে ব্যস্ত রাখছি, খুশি থাকছি।’

জাভেদ হায়দারের এই বুদ্ধি পছন্দ করেছে টিকটকের অধিবাসীরা। মুহূর্তেই হাজার, হাজার লাইক এসে জড়ো হয়েছে। হায়দারকে দেখা গেছে আমির খানের ‘গুলাম’ (১৯৯৮) ছবিতে। মাত্র ৭ কোটি ২০ লাখ রুপি খরচ করে বানানো ছবিটি বক্স অফিসে তুলে এনেছিল ২৪ কোটি ২০ লাখ রুপি। আরেক অভিনয়শিল্পী ডলি বিন্দ্রা টুইটারে জাভেদের টিকটক ভিডিও শেয়ার করে লিখেছেন, ‘একদা তিনি অভিনয়শিল্পী ছিলেন, আর আজ সবজি বিক্রেতা।’ ডলি আরও জানান, ২০০৯ সালে ‘বাবর’ সিনেমাতেও তাঁকে দেখা গেছে। দেখা গেছে টিভি সিরিজ ‘জেনি ঔর জুহু’তেও। ২০১৭ সালে, ‘লাইফ কি অ্যাসি কি তেসি’ ছবির পর ২০১৯ সালের দাবাং থ্রি ছবিতেও দেখা দিয়েছেন জাভেদ। লকডাউন এবার সেই জাভেদ হায়দারকে টিকটক স্টার বানাল। সিনেমা বা সিরিয়াল করে যতবার খবর হয়ে আসেননি, টিকটক তারকা হয়ে তার চেয়ে বেশিবার গণমাধ্যমে খবর হয়ে এলেন।