নিজ গ্রামে অভাবি মানুষের পাশে ইমন

সংকটে পড়া মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন চিত্রনায়ক ইমন। ছবি: ইনস্টাগ্রাম
সংকটে পড়া মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন চিত্রনায়ক ইমন। ছবি: ইনস্টাগ্রাম

চিত্রনায়ক ইমন থাকেন ঢাকায়। তাঁর নাড়ি পোঁতা সবুজ-শ্যামল গ্রামে। নরসিংদী জেলার পলাশ থানার সুলতানপুরের গ্রামবাসীর কাছে ইমন বড় তারকা। গ্রামের মানুষ গল্প করে এই বলে যে তাদের গ্রামের ছেলে রুপালি পর্দায় কাজ করেন। শোবিজের ব্যস্ততার কারণে গ্রামে যাওয়া হয় খুব কম। করোনার মধ্যেও যখন একে একে সব খুলে যাচ্ছে, তখন হঠাৎ করেই গতকাল সোমবার নিজের গ্রামে হাজির হন ইমন।

এবারের উদ্দেশ্য শুধু গ্রামের কাদামাটিতে পা রাখা নয়, বরং গ্রামের মানুষের সুখ-দুঃখের সাথি হওয়া। করোনার কারণে সারা দেশের অভাবি মানুষ পড়ে গেছে সংকটের মধ্যে। নায়ক হলেও এ খবর অজানা নেই ইমনের। এফডিসির দুস্থ মানুষের পাশে আগেই দাঁড়িয়েছেন সাংগঠনিকভাবে, কিন্তু নিজের পরিজনদের কাছে যাওয়া হয়নি। এবার সে সুযোগ এল। গ্রামের মানুষের মধ্যে ঈদ উপহার বিলি করলেন সম্প্রতি।

গ্রামের মানুষ এমনিতেই তাঁকে পছন্দ করে। সেদিন তিনি পছন্দের মানুষ বলে নয়, মানবিক তাগিদ থেকেই নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী তুলে দিয়েছেন কয়েকজন নারী-পুরষের হাতে। গ্রামে তাঁর কাছের ভাই-বন্ধুরা আগেই তৈরি করে রেখেছিলেন অভাবি মানুষের তালিকা। সেই তালিকা ধরে সংকটে থাকা মানুষের হাতে ইমন তুলে দেন তেল, ডাল, লবণ, পেঁয়াজ ইত্যাদি।

প্রথম আলোকে ইমন জানান, মানবিক কাজে তিনি পাশে পেয়েছেন তাঁর একাধিক আপনজনকে। তাঁর সৎ কাজের কথা জানতে পেরে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন তাঁরা। ‘একেবারে অন্য রকম অনুভূতি হয়েছে। গ্রামবাসীর হাতে সামান্য কিছু তুলে দিতে পেরে ভালো লাগছে। পরিকল্পনা আছে তাদের জন্য আরও বেশি কিছু করার। করোনায় কেউ ভালো নেই। আমাদের জায়গা থেকে কিছু করার থাকলে কেন আমরা করব না,’ ভাষ্য ইমনের।

ইমন জানান, করোনায় দেশবাসীর মতো তিনিও ভালো নেই। ‘আকবর’ ও ‘ব্লাড’, এ দুটি ছবিতে অভিনয় করার কথা ছিল তাঁর। করোনার কারণে দুটি ছবির কাজ বন্ধ হয়ে আছে। করোনা যে এমনভাবে জেঁকে বসবে, মাসের পর মাস স্থবির করে দেবে জীবনযাত্রা, অন্য অনেকের মতো তিনিও ভাবতে পারেননি। শুরুতে এটাকে মেনে নিলেও ধীরে ধীরে মন অশান্ত হয়ে উঠতে শুরু করে তাঁর। শেষ পর্যন্ত অভিনয়ের ক্ষুধার কাছে হার মেনে ঈদে একটি নাটকের কাজে নেমে পড়েন তিনি।

চিত্রনায়ক ইমন। ছবি: সংগৃহীত
চিত্রনায়ক ইমন। ছবি: সংগৃহীত


নাট্যনির্মাতা সাজ্জাদ সুমন তাঁকে একটি গল্প শোনান। গল্প শুনে ভালো লেগে গেলে কাজ করতে রাজি হন ইমন। ‘“পাসওয়ার্ড” সিনেমাতে অভিনয়ের পর থেকে আমি “অভিনেতা” সত্তাটাকে গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছি। নায়কই হতে হবে, এমনটা আর ভাবছি না। চরিত্র পছন্দ হলে তবে কাজ করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছি। “বাবার বুকের ঘ্রাণ” নাটকটিও সে কারণেই করেছি। নাটকের চরিত্র ও গল্প আমাকে স্পর্শ করেছে।’

নাটকের গল্পে ইমন একজন বিমাকর্মী। তাঁর চরিত্রের নাম কবির। পরিস্থিতির কারণে এই পেশায় নেমে তার জীবনে নতুন নতুন যে অভিজ্ঞতা হয়, তা নিয়ে নাটকের গল্প। নাটকে তিনি পাশে পেয়েছেন শক্তিমান অভিনয়শিল্পী মামুনুর রশীদকে। তাঁর সঙ্গেও কাজের অভিজ্ঞতা অনেক দিন মনে থাকবে ইমনের। ঈদের জন্য নির্মিত নাটকটি চ্যানেল আইতে প্রচার হবে।

সম্প্রতি ইমন চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন অনন্ত জলিলের নতুন সিনেমায়। বর্তমানে ছবির গল্প লেখার কাজ চলছে। নানা কারণে শুটিং শুরু হওয়ার আগেই আলোচনায় চলে এসেছে ছবিটি।