গায়ক আকবরের শারীরিক অবস্থার অবনতি

আকবর। ছবি: সংগৃহীত
আকবর। ছবি: সংগৃহীত

ডায়াবেটিস, কিডনিসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত গায়ক আকবরের শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছে। দুই সপ্তাহ ধরে ঠিকমতো খেতেও পারছেন না। চার দিন ধরে কথা বলতে কষ্ট হচ্ছে। সরকারি হাসপাতালে ভর্তির অপেক্ষার প্রহর গুনছেন। মানুষের কাছেও এখন আর হাত পাততে চাইছেন না। প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে গেল বছর পাওয়া ২০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্রটা ভাঙতে পারলে চিকিৎসাসেবা ভালোভাবে চালিয়ে নিতে পারবেন বলে জানালেন আকবরের স্ত্রী কানিজ ফাতেমা।

ঢাকার মিরপুরে হারম্যান মাইনর স্কুলের পাশে পরিবার নিয়ে থাকেন আকবর। ঈদের দিন থেকে তিনি অসুস্থ। সেদিন রাতে ভাত খেয়েছিলেন। এরপর আর খেতে পারছে না। কোমর থেকে শরীরের নিচ পর্যন্ত অবশ হয়ে আছে এই গায়কের। কানিজ ফাতেমা বলেন, ‘অবস্থা মোটেও ভালো না। যত সময় যাচ্ছে, অবস্থা আরও খারাপ হয়ে যাচ্ছে। পিজি হাসপাতালে নিতেও পারছি না। প্রাইভেট হাসপাতালে নেওয়ার সামর্থ্যও তো নেই। তাই বাসাতেই আছে।’

কানিজ ফাতেমা জানান, আকবরের শরীর অবশ হয়ে গেছে, বিছানা থেকে উঠতে পারছে না। খাওয়াদাওয়া বন্ধ দুই সপ্তাহ ধরে। শরীরে আগে থেকে ঘা আছে। চার দিন ধরে বিছানা থেকে উঠতে পারছে না। স্যালাইনের ওপর আছেন।’

হানিফ সংকেতের ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’র একটি গান তাঁকে আলোচনায় নিয়ে আসে। সেই থেকে আকবরের পরিবারের পাশে সব সময় থাকেন তিনি। আকবরের স্ত্রী বলেন, ‘স্যারকে (হানিফ সংকেত) বলছি, তিনি কিছু পরামর্শও দিয়েছেন। সেভাবেই আমি যোগাযোগ করছি।’

আকবর। ছবি: সংগৃহীত
আকবর। ছবি: সংগৃহীত

কানিজ ফাতেমা বললেন, ‘এখন আর মানুষের কাছে হাত পাততে ইচ্ছে করছে না। প্রধানমন্ত্রী আমাদের ২০ লাখ টাকা অনুদান দিয়েছেন। এখন আমরা চাইছি সঞ্চয়পত্র ভাঙিয়ে চিকিৎসা করাতে হবে। মানুষ আর কত দিন আমাদের সহায়তা দেবে। প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পাওয়া টাকা একসঙ্গে পেলে ভালোমতো চিকিৎসা করাতে পারব বলে মনে করছি।’

গত বছরের শুরুর দিকে অসুস্থ হয়ে বেশ কয়েক দিন হাসপাতালে থাকতে হয় আকবরকে। তাঁর অসুস্থতার খবর পৌঁছে যায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে। এরপর তাঁর পরিবারকে ডেকে ২০ লাখ টাকা অনুদান দেন প্রধানমন্ত্রী। সেই টাকার মুনাফা হিসেবে তিন মাস পর পর ৪৯ হাজার টাকা ব্যাংক থেকে তোলেন আকবর।

আকবর। ছবি: সংগৃহীত
আকবর। ছবি: সংগৃহীত

আট বছর ধরে ডায়াবেটিসে ভুগছিলেন আকবর। তিন বছর হলো তাঁর শরীরে বাসা বেঁধেছে জন্ডিস, রক্তে প্রদাহসহ নানা রোগ। তাই আগের মতো এখন আর মঞ্চে গাইতে পারেন না।

কিশোর কুমারের ‘একদিন পাখি উড়ে’ নতুন করে গেয়েছিলেন আকবর আলী গাজী। সবার কাছে তিনি আকবর নামে পরিচিত। হানিফ সংকেতের ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’তে এই গান তাঁকে আলোচনায় নিয়ে আসে। এরপর ‘তোমার হাতপাখার বাতাসে’ গানটি দেশ-বিদেশের দর্শক-শ্রোতার কাছে তাঁকে পরিচিত করে তোলে। গায়ক হিসেবে পরিচিতি পাওয়ার আগে যশোরে রিকশা চালাতেন আকবর। খুলনার পাইকগাছায় জন্ম হলেও আকবরের বেড়ে ওঠা যশোরে। গান শেখা হয়নি। তবে আকবরের ভরাট কণ্ঠের কদর ছিল যশোর শহরে। সে কারণে স্টেজ শো হলে ডাক পেতেন তিনি। ২০০৩ সালে যশোর এম এম কলেজের একটি অনুষ্ঠানে গান গেয়েছিলেন আকবর। বাগেরহাটের এক ব্যক্তি আকবরের গান শুনে মুগ্ধ হন। তিনি জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’তে চিঠি লেখেন আকবরকে নিয়ে। এরপর ‘ইত্যাদি’ কর্তৃপক্ষ আকবরের সঙ্গে যোগাযোগ করে। ওই বছর ‘ইত্যাদি’ অনুষ্ঠানে কিশোর কুমারের ‘একদিন পাখি উড়ে’ গানটি গেয়ে রাতারাতি পরিচিতি পেয়ে যান আকবর।